E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সিদ্ধিরগঞ্জে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, আইজি বরাবরে তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ

২০২৩ এপ্রিল ১৩ ২০:১৯:৫৭
সিদ্ধিরগঞ্জে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, আইজি বরাবরে তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে চলছিলো আপন খালার সাথে সিদ্ধিরগঞ্জের এক যুবকের বিরোধ। সেই বিরোধ গড়ায় আদালত পর্যন্ত। এক পর্যায়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা মুঠো ফোনে ঐ যুবকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় যেতে বলে। থানায় যাওয়ার পর ঐ যুবককে সাদা কাগজে স্বাক্ষর ও ঈদের পর বাড়ি ছেড়ে যেতে নির্দেশ দেয়। ঐ যুবক সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে তার দখলে থাকা বাড়ি ছেড়ে যেতে না চাইলে তাকে টেনে হেচড়ে হাজতে ঢুকানোর ভয় দেখায়। একই সময় ঐ যুবকের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা ঐ যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ারও ভয় দেখায়। ভীতসন্ত্রস্ত ঐ যুবক এ ব্যপারে গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ মহাপরিদর্শকের বরাবরে লিখিত আবেদন দায়ের করেছেন।

এলাকাবাসী ও লিখিত আবেদন সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী পশ্চিম এলাকায় খর্দ্দঘোষপাড়া মৌজায় আর এস ১১৬৬ নম্বর দাগে গত ২০ বছর যাবত ঐ এলাকার বাসিন্দা জুবায়ের ইসলাম জীবন তার মানসিক ভারসাম্যহীন মা‘সহ পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলো। উক্ত ভূমি নিয়ে আদালতে একটি মামলা (যার নং-৩৭৮/২২) হয়। উক্ত মামলার বাদী জুবায়ের ইসলাম জীবনের খালাম্মা রুবিনা আক্তার পারভীন। এতে বিবাদী করা হয় ঐ যুবক এবং তার ভাই সজল ও বোন আয়েশাকে। উক্ত মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক সৈয়দ হোসেন ইতিপূর্বে সরেজমিনে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন যাতে তিনি উল্লেখ করেন, বাদী পক্ষ (ঐ যুবকের খালাম্মা) নালিশী ভূমিতে মূল ভোগ দখলে আছেন। কিন্তু বাস্তবে ঐ যুবক ও তার মানসিক ভারসাম্যহীন মা সহ ভাই এবং বোনসহ গত ২০ বছর যাবত ভোগ দখলে আছেন। ঐ যুবক জানায়, উক্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালত উভয় পক্ষকে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখতে ব্যবস্থার জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। কিন্তু নিজেকে মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা দাবি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক সংকর দাস ঐ যুবককে ভূমি থেকে উচ্ছেদের জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছেন বলে জানায় ঐ যুবক। এক পর্যায়ে সহকারী উপ-পরিদর্শক সংকর দাস ৫ এপ্রিল সকাল ১০টায় জুবায়ের ইসলাম জীবনকে মুঠোফোনে ফোন করে থানায় তাঁর সাথে দেখা করতে বলেন। তার ফোন পেয়ে ঐ দিন দুপুর ১২টায় জুবায়ের ইসলাম জীবন থানায় গেলে সহকারী উপ-পরিদর্শক সংকর দাস থানার দোতলার একটি কক্ষে নিয়ে একটি সাদা কাগজে তাকে স্বাক্ষর করতে বলেন।

এ সময় সহকারী উপ-পরিদর্শক সংকর দাস মামলার বাদীর স্বামী (ঐ যুবকের খালু) মো: কামাল খানকে মুঠোফোনে ফোন করে বলেন- আমি জীবনকে থানায় নিয়ে এসেছি। তাকে ওসি সাহেবের রুমে নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে নিব। যুবক আইজিপি অফিসে দেয়া আবেদনে উল্লেখ করেন, ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি ভয় পেয়ে সহকারী উপ-পরিদর্শক সংকর দাসকে জিজ্ঞাসা করেন এখানে কি লেখা হবে? প্রতিউত্তরে এএসআই সংকার দাস বলেন- তুই ঈদের পর ভূমির দখল ও এলাকা ছেড়ে চলে যাবি। ঘটনা বুঝতে পেরে তিনি স্বাক্ষর করতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে টেনে হেঁচড়ে হাজতে ঢুকানোর ভয় দেখায় এবং তার মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে হুমকি দিয়ে বলেন- এতদিন ভালো সংকরকে দেখসোস, এবার খারাপ সংকরকে দেখবি। তরে মামলাও দিমু, তরে সব কিছু করমু। এতে ঐ যুবক জোবায়ের জীবন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) পুলিশ মহাপরিদর্শকের বরাবরে এএসআই সংকার দাসের বিরুদ্ধে লিখিত এ অভিযোগ দায়ের করেন জোবায়ের জীবন। তিনি বলেন, বর্তমানে আমি আমার মানসিক প্রতিবন্ধী মা ও আমার ভাই-বোনকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার বিরুদ্ধে এএসআই সংকার দাস স্যার মিথ্যা মামলা দেয়ার হুমকি দেয়ার পর থেকে আমি ভালভাবে খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমাতে পারছি না। বাধ্য হয়ে এ ব্যাপারে আমি সাংকার দাস স্যারের বিরুদ্ধে আইজিপি মহোদয়ের বরাবরে আবেদন করেছি।

এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এএসআই শংকর দাস বলেন, কত মানুষ কত কথাই বলে ভাই। আমি সাদা কাগজে সাইন নেইনি। তাকে আমি বলেছি, আপনি এ বাড়ি ছেড়ে চলে যাবেন এ কথা লিখে স্বাক্ষর করে চলে যান।

এ ব্যপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, অভিযোগকারীকে আমার কাছে পাঠিয়ে দেন। এ বিষয়টি আমি দেখছি।

(এমএস/এএস/এপ্রিল ১৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test