E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

তীব্র তাপদাহ আর লোডশেডিং 

নওগাঁয় বোরো আবাদসহ জনজীবন বিপর্যস্ত

২০২৩ এপ্রিল ১৬ ১৭:৫৬:২৩
নওগাঁয় বোরো আবাদসহ জনজীবন বিপর্যস্ত

নওগাঁ প্রতিনিধি : তীব্র তাপদাহ আর বিদ্যুতের ঘনঘন লোড শেডিং এবং সেচ কাজে পানি সংকট নওগাঁর পোরশাসহ জেলাজুড়ে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে খেটে খাওয়া মানুষ সহ কেউই সচাচর ঠিকমত কাজ করতে পারছেনা। এতে পবিত্র এই রমজানে অনেকেই পানি সমস্যায় দিনাতীপাত করছেন। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। কয়েকমাস থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় ভূ-উপরিস্থ বিভিন্ন জলাশয়ের পানি শুকিয়ে গেছে। একই সঙ্গে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নীচে নেমে গেছে। বৃষ্টিহীন এই তীব্র খরায় উপজেলার জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। তীব্র খরায় পুড়ছে বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত এ জেলার বিভিন্ন উপজেলা। বেড়েছে ভ্যাপসা গরম। প্রচন্ড গরমে মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে অস্থিরতা। টানা তাপদাহে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এর প্রভাব পড়েছে স্বাভাবিক কাজকর্মেও। বিভিন্ন অফিস বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কোথাও স্বস্থি নেই।

বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। রোজগারের আশায় প্রচন্ড গরম আবহাওয়া উপেক্ষা করেই তাদেরকে হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে যেতে হচ্ছে। তবে রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানাগেছে, এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। যা বৃষ্টি না হলে অব্যাহত থাকবে। এরই মধ্যে পোরশা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে রিং কুয়া গুলো শুকিয়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় মটর স্থাপন করায় রিং কুয়া গুলোতে পানি শুকিয়ে গেছে বলে জানানগেছে। ফলে খাবার পানি সংকটে পড়েছে এলাকার জনসাধারন। অপরদিক ভূগর্ভস্থ পানি দিয়ে ঠিকমত সেচ কাজ পরিচালনা করা যাচ্ছেনা। ফলে অনেক এলাকায় সেচ সংকটে বোরো ধান উৎপাদন ব্যহত হতে পারে বলে অনেকে ধারনা করছেন।

স্থানীয় বোরো চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, খরার কারণে এলাকা ভেদে অতিরিক্ত সেচ দিতে হচ্ছে। এতে বোরো উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তবে খরার কারনে বাড়তি সেচ দিতে হচ্ছে। ঘনঘন লোড শেডিং এ সেচ কাজ চরম ব্যহত হচ্ছে বলে তারা জানান। ফলে বোরোর উৎপাদন ঠিক রাখতে পারবেন কিনা তা নিয়েও চিন্তিত তারা। তারা জানান, এ খরা আরো অব্যাহত থাকলে বোরো ধানের উৎপাদন কম হতে পারে। বৃষ্টি না থাকায় ঘনঘন সেচ দিতে হচ্ছে। তবে তারা এরকম খরা এর আগে দেখেননি বলে জানান।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা মিলন কুমার জানান, উপজেলায় গভীর ও অগভীর নলকূপ রয়েছে ৩ হাজার ৭৩৯টি। এসব উৎস থেকে প্রাপ্ত পানির ৯৯ শতাংশ ব্যবহার করা হয় সেচ কাজে আর বাকি ১ শতাংশ ব্যবহার করা হয় খাবার পানি হিসাবে। জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত তিন বছরে ইউনিয়ন পর্যায়ে গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে ১ হাজার ২০০টি। এসব নলকূপের ১৫০- ৫০০ফুট লেয়ার রয়েছে। এছাড়াও কিছু এলাকায় লেয়ার রয়েছে ৩০০-৩৫০ফুটের মধ্যে। এসব উৎসের পানি ১০০ ভাগ খাবার পানি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। তবে অতিরিক্ত সেচ এবং পানি ব্যবহারের কারনে ভূগর্ভস্ত পানির স্তর নেমে যাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। এর পরেও জনস্বাস্থ্য দপ্তর পানির ব্যবহার ঠিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৮ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে। চলতি খরায় উৎপাদন কম হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। সে লক্ষ্যে তিনি এবং উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাগণ মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বোরো ধানের মাঠ পরিদর্শন ও কৃষকদের বোরো জমিতে ৩-৪ ইঞ্চি পরিমান পানি ধরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান। তবে বৃষ্টির অভাবে এ মৌসুমে আম, কাঁঠালের মতো মৌসুমি ফলগুলোরও ক্ষতি করতে পারে বলে তিনি মনে করছেন। আর বৃষ্টি না হলে এ উপজেলায় বোরো আবাদসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কিছুটা হলেও বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।

(বিএস/এসপি/এপ্রিল ১৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test