E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

নওগাঁয় প্রধান শিক্ষক রেজাউলের মৃত্যুর দিন দেওয়া হল যোগদানপত্র!

২০২৩ মে ০৪ ১৭:৩২:৫৫
নওগাঁয় প্রধান শিক্ষক রেজাউলের মৃত্যুর দিন দেওয়া হল যোগদানপত্র!

নওগাঁ প্রতিনিধি : হার্টের অসুখ নিয়ে ৬ মাসের ছুটিতে ছিলেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার আলালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম রেজাউল হক। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি চাকরিতে যোগদান করেন। এর পর বেতন বিলের কাগজপত্র নিয়ে দিনের পর দিন ধর্ণা দেন উপজেলা শিক্ষা অফিসে। কিন্তু দুই মাসেও তাঁর বেতনবিল ও যোগদানের অনুমোদন মেলেনি। দীর্ঘ ৮ মাস ধরে বেতনবিল না থাকায় চরম অর্থ সংকটে ছিলেন এই শিক্ষক। ঈদ-উল-ফিতরেও বেতন-বোনাস উত্তোলন করতে ব্যর্থ হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এ অবস্থায় প্রচ- মানসিক চাপে গত শনিবার তাঁর হার্টএ্যাটাক হলে রামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার বিকেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

শিক্ষক রেজাউল হকের মৃত্যুর সংবাদ জানাজানি হলে ওইদিন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দীক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা তাঁর যোগদানপত্রে স্বাক্ষর করেন। একইদিন তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় উপজেলা শিক্ষা অফিসে। তবে দীর্ঘ দুই মাস ধরে এসব কাগজপত্র কোথায় কার টেবিলে ফাইলবন্দি ছিল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয় সচেতন বাসিন্দাদের মাঝে।

প্রয়াত শিক্ষক রেজাউল হকের স্বজনরা জানান, বিলবেতনের জন্য দিনের পর দিন কাগজপত্র নিয়ে ধর্ণা দিয়েছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার সামসুজ্জামানের কাছে। বিভিন্ন কাগজপত্র ও অজুহাত দেখিয়ে তাঁকে হয়রানী করেন শিক্ষা কর্মকর্তা।

এদিকে যোগদানকালিন নিয়মিত বেতনভাতা ও ঈদ-উল-ফিতরের উৎসবভাতা উত্তোলন করতে না পারায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। চরম অর্থ সংকটে স্ত্রী ও দুটি শিশু সন্তান নিয়ে ঈদের উৎসব পালন করতে পারেন নি। এ অবস্থায় মানসিক চাপে হার্টএ্যাটাক করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই শিক্ষক।

শিক্ষক রেজাউল হক উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের বিলকরিল্যা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০১০ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আলালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বাবা মৃত বসরতুল্যা প্রামাণিক ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রেজাউল হকের ওপর শিক্ষা কর্মকর্তার এমন আচরণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

শিক্ষক রেজাউল হকের স্ত্রী পান্না খাতুন অভিযোগ করে বলেন, বেতনভাতার জন্য স্বামী রেজাউল হক উপজেলা শিক্ষা অফিসে দিনের পর দিন ধর্ণা দিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার সামসুজ্জামান বিভিন্ন অজুহাতে তাঁকে হয়রানী করেন। ঈদেও বেতন-বোনাস উত্তোলন করতে পারেন নি।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার সামসুজ্জামান বলেন, শিক্ষক রেজাউল হককে হয়রানী করা হয়নি। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ও ছুটির আবেদন যখাযথ ছিল না। পরবর্তীতে সঠিক কাগজপত্র উপস্থাপন করায় তা অনুমোদনের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হয়েছিল।

শিক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, গত রবিবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাঁর ছুটি মঞ্জুর করে চাকরিতে যোগদানের অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করেন।

(বিএস/এসপি/মে ০৪, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test