E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কর্ণফুলীর ইউনিয়ন যুবলীগে ঢুকতে মরিয়া ‘বিতর্কিতরা’ 

২০২৩ মে ২১ ১৭:১৪:১৪
কর্ণফুলীর ইউনিয়ন যুবলীগে ঢুকতে মরিয়া ‘বিতর্কিতরা’ 

জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম : চরপাথরঘাটা-জুলধা ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি দেয়ার পর, একের পর এক কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে। জেলা ও উপজেলা নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, মত বিনিমেয়ের মধ্য দিয়ে চলছে সম্মেলনের তুমুল প্রচারণা।

সম্মেলনে পদপ্রার্থী ও কর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ ও উল্লাস বিরাজ করছে। কিন্তু শঙ্কা তৈরি হয়েছে বাকি তিন ইউনয়ন কমিটিতে সাবেক ত্যাগী ছাত্রনেতা এবং দলের দুঃসময়ে যারা ছাত্রলীগ করে রাজপথে ছিলেন। তাঁদের সঠিক মূল্যায়ন হবে কিনা! এ নিয়েও চলছে পুরো উপজেলা জুড়ে আলোচনা।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের কঠোর নির্দেশে কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজিম উদ্দিন হায়দার ও সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম হক ক্লিন ইমেজের সংগঠন গড়তে তৎপরতা শুরু করলেও ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগে ভিড়তে মরিয়া বিতর্কিতরা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কিছু মাদক ব্যবসায়ি, বিভিন্ন মামলার আসামি, চোরাকারবারি ও বিতর্কিত অপকর্মে জড়িতরা।

ফলে, যে লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের অন্যতম এই সহযোগী সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা এসেছিল; তা নিয়ে আশাবাদী হলেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না দুঃসময়ের-তৃণমূলের কর্মীরা। কারণ নানা সেলফি যুবলীগ ও নেতাকে যারা হোয়াটস অ্যাপে বা ফেসবুকে এসএমএস/ছবি পাঠান এমন নেতাকর্মীরা পদ পেতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। যুবলীগের একাধিক সূত্র এমন তথ্য জানিয়েছে।

কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা, বড়উঠান ও চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটিতে বিতর্কিতরা যেন আসতে না পারে, সে জন্য সংগঠনের শীর্ষ দুই নেতার কাছে আবেদন জানিয়েছেন দুঃসময়ের-তৃণমূলের কর্মীরা। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হচ্ছে, এমন খবরে যুবলীগের পদ-প্রত্যাশীরা জোর তদবির চালাচ্ছেন। যে কোন উপায়ে যেন ‘বিতর্কিতজনরা’ পদ দখল করতে পারেন।

দলীয় সূত্র বলছে, বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি করতে নির্দেশ দিয়েছে সংগঠনের অভিভাবক উপজেলা আওয়ামী লীগ। তবে থেমে নেই অভিযুক্তদের দৌড়ঝাঁপ। এরই মধ্যে যুবলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বাসা ও অফিসে ভিড়ছেন বিভিন্ন অপকর্মকারীরা।

তবে কর্ণফুলী আওয়ামী লীগের নেতারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পদে দলের ত্যাগী, পরিক্ষিত ও দুঃসময়ের নেতাকর্মীরাই স্থান পাবেন। এখানে বিতর্কিতরা বা অপকর্মে জড়িতরা স্থান পাবেন না। কিন্তু কতটুকু রাখতে পারবেন সে কথা, এ প্রশ্নের উত্তর মিলবে তিন ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণার পর। কারণ কিছুদিন আগে চরপাথরঘাটা ও জুলধা ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে।

উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ওসমান উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সর্বক্ষেত্রেই এই বিষয়গুলো মাথা রেখে কাজ করছি। যারা সত্যিকার অর্থে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যারা প্রমাণিত তাদেরকে যুবলীগের কোন কমিটিতে পদ দেওয়া হবে না। এদের পদ দিয়ে আমরা দুর্বল নেতৃত্ব তৈরি করব না। কমিটিতে ত্যাগী-পরীক্ষতদের মূল্যায়ন করা হবে ।’

এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম হক বলেন, ‘আসলে এ ব্যাপারে মন্ত্রী মহোদয় ও জেলা কমিটির সাথে পরামর্শ করে যারা ছাত্রলীগ করে রাজপথে ছিল তাঁদেরকেই মূল্যায়ন করা হবে। বিতর্কিত কেউ কমিটিতে স্থান পাবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করলে তো আবার বিতর্কিত থাকবে। এখানে একেক গ্রুপ একেক জনকে ঘায়েল করেন। আবার রাজনীতি যারা করে তাঁদের দোষও বেশি, কারণ কমিটি করতে গেলে আমাদের বিভিন্ন নেতাদের তদবির রাখতে হয়। তারপরও চেষ্টা করব যাতে বিতর্কিত কেউ কমিটিতে স্থান না পায়।’

এ ব্যাপারে কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি নাজিম উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘যারা ত্যাগী, ছাত্র রাজনীতি করে ওঠে এসেছে, ওখান থেকে যাচাই বাছাই করে কমিটির পদে আনা হবে। আমার সুস্পষ্ট কথা যারা মামলা-হামলার আসামি, ইয়াবা ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি তারা কোনো মতেই কমিটিতে স্থান পাবেন না।’

প্রসঙ্গত, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মণির নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক যুব কনভেশনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন সংগঠনটি।

(জেজে/এসপি/মে ২১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test