E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী আটক

২০২৩ জুন ১৪ ১৮:১০:২৬
নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী আটক

বিশেষ প্রতিনিধি, মাদারীপুর : মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পলিতা গ্রামে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ ও স্বামীর পরিবারের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে বর্ণী বাড়ৈ (২০) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে বলে পারিবারিকভাবে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার (১৪ জুন) সকালে বাবার বাড়ি রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পলিতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বর্ণী বাড়ৈ ওই গ্রামের মৃত চিন্ময় বাড়ৈর মেয়ে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে পাঠিয়েছে। এই ঘটনায় সকালেই স্বামী পার্থ চক্রবর্তীকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও নিহত পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার পলিতা গ্রামের মৃত চিন্ময় বাড়ৈর মেয়ে বর্ণী বাড়ৈ (২০) একই উপজেলার বৌলগ্রামের শেখর চক্রবর্তীর ছেলে পার্থ চক্রবর্তীর (২৫) সাথে প্রায় দুই বছর আগে প্রেমের সর্ম্পকের পর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামীসহ শশুরবাড়ির লোকজন এক লাখ টাকার জন্য নানাভাবে মানসিক ও শারিরিকভাবে নির্যাতন করতো। সেই নির্যাতন সইতে না পেরে গত এক মাস আগে বর্ণী বাড়ৈ বাবার বাড়ি পলিতা গ্রামে চলে আসেন।
গত রবিবার ও সোমবার কয়েক দফা গৃহবধূ বর্ণী বাড়ৈর সাথে স্বামী পার্থ চক্রবর্তীর মোবাইল ফোনে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে সোমবার বিকেলে বর্ণী বাড়ৈ সবার অজান্তে ঘুমের ঔষধসহ বিভিন্ন ধরণের ঔষধ খান। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে তার অবস্থা অবনতি হলে মঙ্গলবার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার আরো অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার ভোর রাত ৪ টার সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে বর্ণী বাড়ৈ মারা যান।

নিহত বর্ণী বাড়ৈর ভাই চঞ্চল বাড়ৈ বলেন, আমার বোনকে ওর স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময় নির্যাতন ও যৌতুকের টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিলেন। এসব কারণেই আমার বোন আত্মহত্যা করেছে। আমি তাদের শাস্তির দাবী জানাই।

নিহত বর্ণী বাড়ৈর মা শেফালী বাড়ৈ বলেন, আমার মেয়ের স্বামীর বাড়ির লোকজন এক লাখ টাকার জন্য প্রায় চাপ দিতেন। তাছাড়া ও উচ্চবর্ণ ও নিন্মবর্ণের কারণে ওর শশুরবাড়ির লোকজন এই বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। এসব নিয়ে প্রায় আমার মেয়েকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। আর এ কারণেই আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। যাদের অত্যাচারে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে, আমি তাদের বিচারের দাবী জানাই।

অভিযুক্ত নিহতের স্বামী পার্থ চক্রবর্তী বলেন, আমি তিন লাখ টাকা দেনা আছি। তাই এক লাখ টাকা আমার শাশুরী আমাকে এমনিতেই দিতে চেয়েছিলেন। অথচ তারা এখন আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন।

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এ ঘটনায় নিহতের স্বামী পার্থকে আটক করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

(এএসএ/এসপি/জুন ১৪, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test