E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিক্ষায় সাড়া ফেলেছে পলাশবাড়ীর কাশিয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

২০২৩ সেপ্টেম্বর ০৫ ১৮:৫৫:১৪
শিক্ষায় সাড়া ফেলেছে পলাশবাড়ীর কাশিয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

রবিউল ইসলাম, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর প্রত্যন্ত গ্রাম নলডাঙ্গা। ৪ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে আটটায় ওই গ্রামের পাশে ঋষিঘাটে গিয়ে দেখা যায় গ্রামের কয়েকজন শিক্ষার্থী নৌকায় করে নদী পার হয়ে পড়ালেখা করতে যাচ্ছেন কাশিয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।ওই এলাকার অভিভাবকরা বলছেন একটু দুরে হলেও যেহেতু ওই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা ভাল হয় তাই কষ্ট করে হলেও সেখানেই সন্তানদের পাঠাচ্ছেন তারা।

বর্তমান সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থার। এক সময় নতুন বই পেতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হতো এখন বছরের প্রথম দিনই বই তুলে দিচ্ছেন বর্তমান সরকার,তাছাড়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের মোবাইলে পৌঁছে দিচ্ছেন উপবৃত্তির টাকা।

পলাশবাড়ী উপজেলা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দুরে অবস্থান কাশিয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির।স্থাপিত হয় ১৯৪০ সালে।২০১৬ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন মনিরুজ্জামান মন্ডল মিথুন, এরপরই পাল্টে যেতে থাকে বিদ্যালয়টির চিত্র। একের পর এক সাফল্য অর্জন করতে থাকে বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টিতে প্রবেশ করতেই দেখা যাবে বারান্দায় বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের টব। প্রতিটি শ্রেণী কক্ষে বিভিন্ন মনীষীর ছবিসহ শিক্ষণীয় বিভিন্ন অঙ্কন চিত্র, মনে হবে প্রতিটি শ্রেনী কক্ষই যেন এক একটি জ্ঞান অর্জন কেন্দ্র। ফলাফলের দিক থেকে বরাবরই ভাল করে আসছে বিদ্যালয়টি। প্রতিবছর শতভাগ পাশসহ প্রতিবছরই বৃত্তিলাভ করে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সকাল নয়টায় পাঠদান শুরুর আগেই শরীরচর্চা এর পর দেশ গড়ার শপথের সাথে "শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ, শেখ হাসিনারবাংলাদেশ" শ্লোগানে মুখরিত হয় বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টিতে শিশু শিক্ষার্থীদের পড়ার রুমটি বেশ দৃষ্টিনন্দন।প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান মন্ডল মিথুন নিজেই নেচে গেয়ে ছড়ার মাধ্যমে শিখাচ্ছেন তাদের। বর্তমানে ২৫৭ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছেন বিদ্যালয়টিতে।

বেশ কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা বললে তারা জানান,আমরা সন্তানদের এই বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে নিরাপদে থাকি কারন শিক্ষকরা তাদের সন্তানদের আন্তরিকতার সাথে পাঠদান করান।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান জানান,শিক্ষকরা আমাদের সাথে পরামর্শ করেই সব কাজ করেন,আমরা তাদের সব সময় সহযোগিতা করে থাকি যার কারনে বিদ্যালয়টির শিক্ষা ব্যবস্থা উপজেলা জুড়ে সাড়া ফেলেছে।

সহকারি শিক্ষক ফাহিমা খানম ও ফজলুল করিম মানিক জানান,প্রধান শিক্ষকের দিক নির্দেশনায় আমরা বিদ্যালয়ে পাঠদান করাই, আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি যাতে আরো ভাল করা যায়।

প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান মন্ডল মিথুন জানান, কাশিয়াবাড়ীর প্রত্যন্ত পল্লী এলাকা থেকেও আমাদের বিদ্যালয়ে পড়তে আসে। ম্যানেজিং কমিটি, সহকারি শিক্ষকবৃন্দসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এই বিদ্যালয়টি আরো এগিয়ে নিতে চাই।

সহকারি শিক্ষা অফিসার ফিরোজ কবীর জানান, আমার ক্লাস্টারের মধ্যে এটি একটি অগ্রগামী বিদ্যালয়,শিক্ষকদের আন্তরিকতার জন্যই এটি সম্ভব হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার(ভারঃ) আরজুমান আরা গুলেনুর জানান, আমি নতুন এসেছি এখনও ওই বিদ্যালয়ে যাওয়া হয়নি তবে শুনেছি সেখানে অনেক ভাল পড়ালেখা হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান জানান, বর্তমান সরকার তৃণমুল পর্যায় থেকে শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন, কয়েক দিন আগে কাশিয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ওখানকার শিক্ষার পরিবেশটা বেশ ভাল লেগেছে।শিক্ষকরা অনেক আন্তরিক। আশা করবো সব বিদ্যালয়েই যেন এমন হয়।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ জানান, বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে,বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই নতুন বই তুলে দেওয়া, উপবৃত্তি দেওয়া এসব বর্তমান সরকারই করেছে।

তিনি আরো বলেন, কাশিয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এখন উপজেলার মধ্যে ভাল করছে, সেখানকার প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান মন্ডল মিথুন সহ সব শিক্ষকরা অনেক পরিশ্রমের কারনেই এটা সম্ভব হয়েছে।

(আরআই/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test