E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীর স্বাক্ষরের অজুহাতে ৫৩ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ

২০১৪ ডিসেম্বর ১১ ২০:১৫:৫১
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীর স্বাক্ষরের অজুহাতে ৫৩ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ

কালিয়া প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর স্বাক্ষরের অৎুহাত দেখিয়ে কোন প্রকার তদন্ত ছাড়াই নড়াইলের কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৫৩জন ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার নভেম্বর মাস থেকে ভাতার টাকা উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রেরিত আবেদনের স্বাক্ষরটি আদৌ মন্ত্রীর কিনা এ নিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তদন্ত ছাড়াই ৫৩জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বন্ধ করে দেওয়ায় ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা লজ্জাসহ বিপাকে পড়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কালিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আব্দুল মান্নান কালিয়া উপজেলার ৫৩ জন মুক্তিযোদ্ধাকে অমুক্তিযোদ্ধা ও ভুয়া আখ্যায়িত করে এবং এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বরাবর গত ১২ অক্টোবর একটি আবেদন করেন। আবেদনের ওই কপিটি ১১ নভেম্বর কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে পৌছায়। যার উপর ২৫ অক্টোবরে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের স্বাক্ষর ও সীল যুক্ত রয়েছে। চিঠির ওপর গোল সিলের মধ্যে ৬৮২ স্বারক নম্বর ও ৩০ অক্টোবর রয়েছে। উল্লেখ করার মত বিষয় হলো কালিয়ার ইউএনওকে সম্বোধন করে লেখা হয়েছে, “দয়া করে ভাতা বন্ধ করে তদন্ত প্রতিবেদন দেবেন”। মন্ত্রীর স্বাক্ষরিত ওই আবেদন পত্রটি কিভাবে তার দপ্তরে এসে পৌছাল তাও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঠিক বলতে পারেননি। কালিয়া উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোঃ শাহিন হোসেন বলেছেন, ১১ নভেম্বর মন্ত্রীর স্বাক্ষরিত আবেদনপত্রটি গ্রহন করা হয়েছে। আবেদনের ভিত্তি কতটুকু সত্য এমন সংশয় আমারও ছিল। তবে এ বিষয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর পিএস-এর সাথে কথা বলে এবং আবেদনের উপর ৬৮২ স্বারক দেখে আমি নিশ্চিত হয়ে ভাতা বন্ধ করেছি। তবে পত্রটি সরকারি বিধিমোতাবেক আসেনি।

কালিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকতা অসিত বরণ সাহা বলেছেন, আবেদনপত্র কিভাবে এসেছে তা আমি জানিনা। আমি ইউএনও নির্দেশ মোতাবেক গত নভেম্বর মাস থেকে ৫৩জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ করে রেখেছি। নড়াইল জেলা প্রশাসক আঃ গফ্ফার খান বলেছেন, বিষযটি আমার জানা নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার বিষয়টি সরাসরি উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার এখতিয়ারে থাকে। ফলে এ বিষয় আমাকে না জানালেও চলে। তবে বিষয়টির খোজ খবর নেব। কালিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার তরিকুল ইসলাম বলেছেন, একজন মন্ত্রী কখনও উপজেলা নির্বাহী অফিসারেকে ’দয়া করে শব্দ ব্যবহার করতে পারেননা। মন্ত্রীর স্বাক্ষর ও সীল জাল করে কেউ এমন ঘটনা ঘটাতে পারে। তদন্ত ছাড়া এভাবে হটাৎ করে ভাতা বন্ধ অনুচিত। তদন্ত করলে সবই পরিস্কার হয়ে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

আবেদনকারি কালিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আব্দুল মান্নান আবেদনপ্রত্র প্রেরেণের সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, আমি মন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছি কিন্তু এটি কিভাবে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে এলো তা বলতে পারি না। ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা শেখ হাবিবুর রহমান (গেজেট নং-৬৩৫, জাতীয় তালিকা দ্বিতীয় খন্ড ১০০) জানিয়েছেন, আমাদের বিরুদ্ধে যে আবেদন করেছেন তিনি আমাদের হয়রানি করার জন্য এ কাজ করেছেন। মিথ্যা ঘটনার বিরুদ্ধে আমারা কালিয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের মাধ্যমে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

(এমএইচএম/পি/ডিসেম্বর ১১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test