E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নির্বাচনি সহিংসতা

দিনাজপুরে পুলিশের গুলিতে একজনের মৃত্যু, আহত ১২ 

২০২৪ এপ্রিল ২৯ ১৫:০৮:১৫
দিনাজপুরে পুলিশের গুলিতে একজনের মৃত্যু, আহত ১২ 

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরের বিরলে আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ ১২ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিরল উপজেলার চৌরঙ্গীবাজার এলাকায় সিঙ্গুল হামিদ-হামিদা উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ সহিংসতার ঘটনা ঘটে।

নিহত মোহাম্মদ আলী কাচুয়া (৬৫) উপজেলার সিঙ্গুল ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মাবুদ বক্সের ছেলে। তিনি নির্বাচনে সদ্য বিজয়ী ইউপি সদস্য প্রার্থী (টিউবওয়েল) জোবায়দুর রহমানের চাচা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, ভোট গণনার পর ফলাফল নিয়ে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এবং নির্বাচনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের বন্দি রাখাকে কেন্দ্র করে সহিংসতা শুরু হলে পুলিশের গুলিতে একজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

সহিংসতা পরবর্তী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদসহ, পুলিশ, ব্যাব ও গোয়েন্দার উবর্ধতন কর্মকর্তারা।

একজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ জানান, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানে আলমকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

দিনাজপুর পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ জানান, ‘ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছিল। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা তাদের ফলাফলে সন্তুষ্টও হয়েছেন। কিন্তু দুই ইউপি সদস্য প্রার্থী ফলাফল মেনে না নেওয়ায় সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে উত্তেজিত সমর্থকেরা ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকেন। এ সময় কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে ফিরে আশ্রয় নিলে সমর্থকেরা ভোটকেন্দ্রেও হামলা চালান। এক সময় নির্বাচনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের জোর করে একটি রুমে বন্দি করে রাখা হয়। দু'পক্ষের মধ্যে তুমুল মারামারি লাগে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বাধ্য হয়ে শর্ট গানের কয়েক গ্রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এতে ওই ব্যক্তি আহত হয়। চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।’

প্রত্যক্ষদর্শী হায়দার আলী জানান, ‘আজিমপুর ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার মধ্যেই শেষ হয় গণনা। কেন্দ্রে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনী পলাফল ঘোষণার পর মেম্বার পদে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ১ নং ওয়ার্ডের টিউবয়েল প্রতীক নিয়ে জবাইদুর রহমান ২০ ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন। পরাজিত প্রার্থী সাইদুর রহমানের সমর্থকরা মেনে না নিয়ে কেন্দ্র প্রবেশ করে হামলা চালায়। উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ উত্তেজনা থামাতে চেষ্টা করেন। পরবর্তীকালে উত্তেজিত জনতা ভোটকেন্দ্রে ও পুলিশের ওপরে চড়াও হন। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০টি গুলিটি ছোঁড়ে। ফলে ওই গুলি মোহাম্মদ আলী চাচার শরীরে লাগে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।’

দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. জিল্লুর রহমান জানান, নিহত ব্যক্তির শরীরে পিঠের বাঁ পাশে গুলির চিহ্ন রয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

(এসএস/এসপি/এপ্রিল ২৯, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test