E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটোরে আদালত ও পুলিশ হেফাজত থেকে তিন আসামীর পলায়ন

২০১৫ মার্চ ০১ ১৮:৫০:৩৫
নাটোরে আদালত ও পুলিশ হেফাজত থেকে তিন আসামীর পলায়ন

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত থেকে প্রতারনা ও অর্থ আত্মসাতের  মামলার আসামী বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের বড়াইগ্রাম উপজেলা সাধারণ সম্পাদক হেলেনা খাতুন তিন সহযোগিসহ পালিয়ে গেছে। মামলার পলাতক অন্য আসামীরা হলেন নওগাঁ জেলার মান্দা থানার শ্রীরামপুর (সুতীহার) গ্রামের হামিদুর রহমান হামদোর ছেলে মুস্তাকিন সরদার ও তার ছেলে মোহাম্মদ রতন। রোববার আসামীরা আদালতে হাজিরা দিতে ডকে ওঠার পর পালিয়ে যায় বলে বাদীর আইনজীবী সত্যতা নিশ্চিত করেন। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর  আদালত পাড়ায় টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়।

এদিকে আদালতের বিচারক নাদিরা বেগম এ ঘটনায় নিযুক্তীয় আইনজীবী মোকলেছুর রহমানকে সতর্ক করে আত্মসমর্পনকৃত তিন আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদেশ দেন।

মামলা সুত্রে জানাযায়, বাদী নাটোরর লালপুর উপজেলার বেলগাছি গ্রামের ছলিমুদ্দিন খানের ছেলে ইয়াহিয়া খানের ভাগ্নি তানিয়া খাতুনকে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করার জন্য লিখিতভাবে ১২ লাখ ৯১ হাজার টাকা আসামী হেলেনাসহ অন্য দুই আসামী গ্রহন করেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, হেলেনা খাতুন আসামী মুস্তাকিন সরদারকে এনায়েতপুর বেসরকারী মেডিকেল কলেজের একজন পরিচালক হিসাবে পরিচয় দেন। আসামীরা ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই থেকে একই বছরের ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ লাখ ৯১ হাজার টাকা গ্রহণ করেন এবং মেডিকেলে ভর্তি করাতে ব্যর্থ হলে সমুদয় টাকা তারা ফেরত দিবেন বলে অঙ্গীকার করেন। পরবর্তীতে তানিয়াকে মেডিকেলে ভর্তি করাতে ব্যর্থ হন এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন তারা।অত:পর ইয়াহিয়া খান বাদী হয়ে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ওই তিন জনের বিরুদ্ধে দ: বি: ৫০৬/১১৪ ধারায় আদালতে মামলা করেন। আদালতের বিচারক ওই তিন আসামীকে ১লা মার্চ আদালতে স্বশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।

আসামী হেলেনা খাতুন অ্যাডভোকেট মোকলেছুর রহমান এর মাধ্যমে ১ লা মার্চ রোবাবার আদালতের ডকে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। এসময় হেলেনার সাথে অপর দুই আসামী মোস্তাকিন ও রতন জামিনের আবেদন না করে সরাসরি এজলাসে ওঠেন। আদালত মোস্তাকিন ও রতনকে কোন জিম্মাদার আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করার আদেশ দেন এবং জামিনের আবেদন না করা পর্যন্ত কোর্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ মোহাম্মদ জামালকে আদালত কক্ষের ভিতর হেফাজতে রাখার আদেশ দিয়ে অন্য মামলা শুনানীর জন্য নেন। ইত্যোবসরে আসামীরা কৌশলে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ মোহাম্মদ জামাল কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

এইদিকে মামলাটি পুনরায় ডাক পড়লে আইনজীবী মোকলেছুর রহমান মিলন আদালতের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে জানান, আসামীরা পালিয়ে গেছেন। আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।


আদালতের পেশকার জয়ন্ত কুমার দাস বিচারকের নির্দেশে আদালতে ঘোষনা করেন যে, সমন পেয়েও আসামীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলো।

এদিকে বাদীর আইনজীবী দীনেশ চন্দ্র মন্ডল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামীরা আদালত থেকে পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী।

উল্লেখ্য , আসামী হেলেনা খাতুন চাকুরী দেওয়ার নামে ও ঠিকাদারী কাজসহ বিভিন্ন কাজ করে দেওয়ার নামে ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে একাধিক ব্যাক্তির কাছ থেকে টাকা নেন। কাজ না হলে আসামীরা টাকা ফেরত চাইলে হেলেনা তাদের চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে হেলেনার হিসাব নম্বরে টাকা না থাকায় চেকগুলি ফেরত হয়। হেলেনা খাতুনের বিরুদ্ধে নাটোরের জেলা ও দায়রা জজসহ বিভিন্ন আদালতে এধরনের প্রায় ৫০ লাখ টাকার চেক ডিজঅনারের ঘটনায় তিনটি মামলা বিচারাধীন আছে।

(এমআর/এএস/মার্চ ০১, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test