E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস

বড়লেখায় অবাধে চলছে পাহাড় কাটা

২০১৫ জুন ০৫ ১১:৪০:১৬
৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস
বড়লেখায় অবাধে চলছে পাহাড় কাটা

বড়লেখা (মৌলভীবাজার)প্রতিনিধি:মৌলভীবাজারের বড়লেখায় আইনের তোয়াক্কা না করেই চলছে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অনেকে টিলা কেটে নির্মাণ করছেন বসত বাড়ি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রভাবশালী সঙ্গবদ্ধ চক্র অধিক টাকা কামাতে প্রাকৃতিক টিলা কেটে সাবাড় করছে।

প্রতিদিন অন্তত: ২শ’ ট্রাক ও ট্রাক্টর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে পাহাড়ের মাটি বহন করার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এসব পরিবহনের অধিকাংশের নেই বৈধ কাগজপত্র অথচ উপজেলার সদর রাস্তা চালাচ্ছে অবৈধ কারবার। ফলে প্রতিনিয়ত বিপর্যস্থ হচ্ছে পরিবেশ, পরিবর্তন হচ্ছে মানচিত্র ও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা। ইতিপূর্বে মাটি কাটতে গিয়ে উপজেলায় কয়েকজন মাটি শ্রমিকের নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পরিবেশ আইন এবং দুর্ঘটনা কোন কিছুই যেন টিলা কাটা রোধ করতে পারছে না। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মচরীর সাথে মাটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের গোপন রফাদফায় সাবাড় হচ্ছে পাহাড় টিলা।

সরেজমিনে উপজেলার পাহাড় ঘেষা কাঁঠালতলী, বিওসি কেছরিগুল, ডিমাই, উত্তর শাহবাজপুর, সায়পুর, কলাজুরা, হাকাইতি, কাশেমনগর, জামকান্দি, মোহাম্মদ নগর, মুড়াউলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নির্বিচারে পাহাড় টিলার (সরকারি খাস ভুমি) মাটি কাটা চলতে দেখা গেছে। মাটি পরিবহনের কাজে অধিকাংশ নাম্বার প্লেট বিহীন ট্রাক ও ট্রাক্টর নিয়োজিত। মাটি শ্রমিকরা জানায়, এক ট্রিপ মাটি ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। অনেক ভূমি মালিক নিঁচু ভূমি ভরাটের কাজে টিলার মাটি ব্যবহার করেন। ট্রিপ প্রতি শ্রমিকরা ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা পেয়ে থাকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাটি পরিবহনের কাজে নিয়োজিত এক ট্রাক চালক জানায়, অধিকাংশ গাড়ির মালিক রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী মহলের আত্মীয়-স্বজন। তারা এ মহলের যোগসাজসে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে টিলার মাটি বিক্রি করছে। এক্ষেত্রে গাড়ি চালক ও মাটি শ্রমিকরা তেমন লাভবান না হলেও মাটির ব্যবসা করে সঙ্গবদ্ধ একটি চক্র ও পরিবহন মালিকরাই অল্প দিনে কোটিপতি বনে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কমপক্ষে ২শ’ ট্রাক ও ট্রাক্টর বিভিন্ন পাহাড় টিলা কাটার মাটি বহন করার কাজে নিয়োজিত। মাটি বোঝাই এসব গাড়ি অনবরত একই রাস্তায় যাতায়াতের কারণে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ যেন দেখার কেই নেই।
কিছু এলাকায় বসত বাড়ি নির্মাণ করতেও অনেকে টিলা কাটছে। আলাপকালে এরা জানায় তারা আদৌ

জানে না টিলা কাটায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়-টিলা থেকে মাটি কাটার ফলে ধ্বংস হচ্ছে গাছপালা, ঝোঁপঝাড়, জঙ্গলসহ বনাঞ্চল। বসত হারিয়ে বিলুপ্ত হচ্ছে নানা প্রজাতির পশুপাখি। এর প্রভাবে প্রতিনিয়ত হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির ভারসাম্য, সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা ও অকাল বন্যা।
বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোহাম্মদ আমিনুর রহমান জানান, পাহাড় টিলা কাটা বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে জনগণ ও জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মতবিনিময় সভা অনিুষ্ঠিত হয়েছে। পাহাড় টিলা কাটা বন্ধে ইতিমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরে কয়েকটি মামলা করা হয়েছে। পাহাড় ঠিলা কাটার কোন আলামত পাওয়া গেলে এ থেকে বিরত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পাহাড়-টিলা কাটার বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।



(এলএস/এসসি/জুন০৫,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test