E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

তাড়াশে ভিজিএফ চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম

২০১৫ জুলাই ১৩ ১৩:০৫:২৫
তাড়াশে ভিজিএফ চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : তাড়াশের নওগাঁ ইউনিয়নের ভিজিএফ কার্ডের চাউল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঈদকে সামনে রেখে দুঃস্থ্যদের মধ্যে সরকারী ভাবে প্রতি বছরই ২টি ঈদে ভিজিএফ চাল হিসেবে ১০ কেজি করে বরাদ্দ দেওয়া হয়।

গতকাল রবিবার নওগা ইউনিয়নে ভিজিএফ কার্ডধারীদের মধ্যে ১০কেজি করে চাল বিতরণ করার নিয়ম থাকলেও দলীয় নেতাকমীদের পেট ভরাটে গিয়ে দুঃস্থদের চাল দাড়িপাল্লার পরিবর্তে বালতি দিয়ে মেপে ১০কেজির স্থলে সাড়ে ৭ কেজি থেকে ৮কেজি করে বিতরন করেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান। ফলে চেয়ারম্যান প্রায় আড়াই মেঃ টন দুঃস্থ্যদের চাল আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে ও অভিযোগে প্রকাশ, প্রতি বছর সরকার ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার উপলক্ষে গরীব, অসহায়, দুঃস্থ্যদের মধ্যে ১০কেজি করে ভিজিএফ কার্ডের নামে প্রকল্প গ্রহন করে চাউল বরাদ্দ দেয়। তাড়াশ উপজেলায় এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভিজিএফ কার্ডের সংখ্যা ১০হাজার ৭শ ৪৯। ৫নং নওগা ইউনিয়নে ভিজিএফ কার্ডের সংখ্যা ১২৪৭টি। যার চাউলের পরিমান হয় ১২টন ৪৭০কেজি। তিনি গড়ে উক্ত কার্ডধারীদের মধ্যে ৮কেজি করে চাউল বিতরণ করলে ৯টন ৯শ’ ৬০ কেজি বিতরন করা হয়েছে। আর ২টন ৪৯০ কেজি চাল চেয়ারম্যান ও তার সাংঙ্গপাঙ্গ ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছে। গত মঙ্গলবার তাড়াশ খাদ্য গুদাম থেকে চাউল উত্তোলন করেন। নিয়ম অনুসারে যে দিন চাল বিতরণ করা হবে সেই দিন অথবা তার আগের দিন চাউল উত্তোলন করতে হবে। কিন্তু নওগা চেয়ারম্যান চাল আত্মসাত করার লক্ষে চাউল উত্তোলনের ৬দিন পর বিতরণ শুরু করেছে। তিনি গত রোববার নওগা ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিএফ কার্ডের চাউল বোর্ড অফিস থেকে বিতরণ না করে নিজের ক্ষমতা বলে এবং নিজস্ব লোক দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে চাল বিতরন করার জন্য নওগা বাজার বেছে নেন। গরীব, অসহায়রা রোজা রেখে গাড়ী যোগে দুর-দুরান্ত থেকে চাউল নিতে আসে। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ খন্দকার কার্ডধারীদের মধ্যে ১০কেজির স্থলে সাড়ে ৭ কেজি থেকে ৮ কেজি করে চাউল বিতরন করেছে। এ সময় কার্ড ধারী অসহায় লোকজন এত কম চাউল নিতে অস্বীকৃতি জানায়ে বিক্ষোভ করতে থাকলে চেয়ারম্যানের বাহিনী তাদের বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখায়ে বলে এই চাউল নিতে হবে না নিলে চুপচাপ বাড়ী যেতে হবে। সেখানে সামাদ চেয়ারম্যানের ভাই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ উদ্দিন তার বাহিনী নিয়ে উপস্থিত থেকে চাল বিতরণ করছেন। তার দাপটে অসহায় লোকজন ভয়ে ৭/৮ কেজি করে চাউল নিয়ে বাড়ী চলে যাচ্ছে। তাদের দাপটে এলাকার লোকজন কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। চাউল বিতরনের সময় ট্যাক অফিসার থাকলেও তিনি চেয়ারম্যান বাহিনীর ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়নি। এ সময় কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে চাউলের ওজন কিছু সময়ের জন্য বেড়ে সাড়ে ৮কেজি হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানায় সামাদ চেয়াম্যানের চেয়ে তার চাচা ভাই আ’লীগ নেতা আলহাজ আলী বড় চেয়ারম্যান। নওগা চেয়ারম্যান সাড়ে ১২টন চাউল বরাদ্দ পেলেও তিনি বিতরণ করেছেন প্রায় ১০ টনেরও কম। আর আত্মসাত করেছেন প্রায় আড়াই টন চাউল। চাউল বরাদ্দ পেলেও বিতরন করেছে মাত্র ৯ মে: টন। অবশিষ্ট চাউল বিক্রি করে টাকা আতœসাৎ করেছে। চাউল বিতরনের সময় ট্যাগ অফিসার উপস্থিত থাকলেও তিনি ছিলেন কিংকর্তব্য বিমুখ। এ কারণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। এব্যপারে চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ চাউল আনতে ট্রাক ভাড়া করতে হয়েছে ১০হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ খরচের টাকা কোথায় পাব। আমরা এব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, চাউল বিতরনের সময় ট্যাগ অফিসার হিসেবে বিআরডিবি একজন সহকারী কর্মকর্তাকে দেখাশোনা করার জন্য রাখা হয়েছে। ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম তরুন জানান আমাদের নওগাতে সাংবাদিক সংস্থা আছে। তাদের ম্যানেজ করলেই সবাইকে তারা ম্যানেজ করবে বলে তিনি বলেন। সচেতন মহল মনে করেন দুঃস্থ্যদের চাউল যারা আত্মসাত করছে আগামীত জনগণ তাদের প্রত্যাখান করনে। তবে এলাকাবাসি ভিজিএফ কার্ডের চাল কম দিয়ে আত্মসাতের বিষয়টি তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্র্তপক্ষের দৃষ্ঠি আকর্ষন করেছেন।

(এমএমএইচ/এসসি/জুলাই১৩,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test