E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান অভিভাবকরা

পটুয়াখালীতে দু’শিক্ষককের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

২০১৫ আগস্ট ২৬ ২১:০৯:৫২
পটুয়াখালীতে দু’শিক্ষককের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : পটুয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে দু’শিক্ষককের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক ইংরেজি বিষয়ের আক্তারুজ্জামান ও বানিজ্য বিভাগের মতিউর রহমানকে এক সপ্তাহের পাঠদান স্থগিত করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দু’শিক্ষককের বিরুদ্ধে আলাদা করে দু’দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে পটুয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে গেলে বিদ্যালয় সূত্র জানায় যৌন নির্যাতনের ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ। একটি তদন্ত কমিটিতে মোঃ শাহাদৎ হোসেনকে আহবায়ক, মোর্শেদা বেগম ও কুদ্দুসুর রহমানকে সদস্য এবং আরেকটি কমিটিতে মোঃ মাহাদৎ হোসেনকে আহবায়ক, মৃনাল কান্তি ও কুদ্দুসুর রহমানকে সদস্য করা হয়েছে। নির্ভরযোগ্য একটি জানিয়েছে উভয় তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত সম্পন্ন করে প্রধান শিক্ষকের নিটক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।

এদিকে পটুয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির প্রভাতি শাখার ২০ ছাত্রীর অভিভাকরা শিক্ষক আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে পটুয়াখালী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বাকাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে তার একটি চিঠি তিনি হাতে পেয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত তদন্ত কার্য শুরু করতে পারেন নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির বালিকা বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্য জানান, শিক্ষক আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনা প্রায় সকল অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ওই সূত্র আরো জানায়, এর আগে বরগুনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে থাকাকালে একই অভিযোগে শিক্ষক আক্তারুজ্জামানকে পটুয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। এখানে এসেও একই রকম অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় নকল সরবরাহের অভিযোগে মামলা বিচারাধিন রয়েছে বলেও জানান তদন্ত কমিটির সদস্যরা। অভিযুক্ত অপর শিক্ষক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগ বিষয়ে তদন্ত কমিটি মুখ খুলতে রাজী হয়নি।

তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরই জেলা প্রশাসক বরিশালের ডিডিকে তাৎক্ষণিকভাবে ওই দুই শিক্ষককে বদলির অনুরোধ জানিয়েছেন। এছাড়া অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন।

এদিকে মঙ্গলবার সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গেলে উৎকণ্ঠিত ও আতঙ্কিত অভিভাবকরা জনান, শিক্ষকদের এ অনৈতিক কর্মকান্ডের কারনে তারা সন্তানদের বিদ্যালয় পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারছেন না। বিদ্যালয়ের সামনে উপস্থিত দশম শ্রেণির বানিজ্য বিভাগের ছাত্রী লিওনার বড় বোন ছোট আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাহমিদা আফরীন সাংবাদিকদের জানান, শুধুমাত্র প্রাইভেট না পড়ার কারণে তার ছোট বোনকে ক্লাসে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড় করিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত শিক্ষক মতিউর রহমান। তাছাড়া বিধি বর্হিভূতভাবে তার বাসায় কোচিং সেন্টার বানিয়ে সেখানে ছাত্রীদের যেতে বাধ্য করতো। এসব ঘটনার জন্য তারা প্রধান শিক্ষককের নমনীয় মনোভাবকে দায়ী করেন। তিনি আরো জানান শিক্ষকদের এ প্রাইভেট বাণিজ্যের কথা জেনেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না করায় দিন দিন তাদের অত্যাচার বেড়ে চলছে। এসব কাজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান অভিভাবকরা।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক অমিতাভ সরকার জানান,তদন্ত শেষ হলে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিদ্যালয়ে এসব অনৈতিক কাজ কোন ভাবেই প্রশ্রয় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

(এসডি/পি/অাগস্ট ২৬, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test