E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ত্রিমোহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল দশা

২০১৫ নভেম্বর ১৭ ১৬:১৮:৩০
ত্রিমোহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল দশা

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার প্রায় ৮৮বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ত্রিমোহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এখন বেহাল দশা। পরিত্যক্ত ভবন যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অবিভাবক ও সচেতন মহল।

এছাড়াও ওই ভবনের খুলে পড়া জানালা, টিন , পাঠদানের কক্ষে রাখায় শিক্ষার্থীদের বসা ও পাঠদানের সমস্যা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বার বার অবগত করেও কোন কাজ হয়নি বলে জানান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন পাঠ গ্রহন করছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহসিন আলী জানান, ১৯২৫ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করার সময় মাটির তৈরি ভবন দিয়ে যাত্রা শুরু করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে প্রতিষ্ঠানটি নানা সমস্যায় জর্জড়িত থাকলেও স্বাধীনতা অর্জনের পর বিদ্যালয়টিকে সরকারি করন করা হয়। তখন মাটির কয়েকটি কক্ষ নির্মাণ করে পাঠদান করা হতো। এরপর ১৯৮২ সালে টিন শেডের চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়।

দীর্ঘদিন ব্যবহার ও সংস্কার না করার ফলে ওই ভবনের শ্রেণি কক্ষগুলো পাঠদানের অনুপযোগী হলে ২০০০ সালে নতুন ৫কক্ষ বিশিষ্ট আরও একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হলে ওই কক্ষগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরিত্যক্ত ঘোষণা করার দীর্ঘ ১২বছর পার হলেও সরকারি ভাবে ভেঙ্গে ফেলার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।

বিদ্যালয় চলাকালে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা সবার অজানতেই ওই কক্ষে খেলাধুলা করে। যার কারণে যে কোন বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। একাধিকবার ঝড়ে এই ভবনের টিনগুলো উড়ে যাওয়ায় শত শত টাকার সম্পদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কক্ষগুলোর লোহার জানালা-দরজা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় রাতের আধারে এই সব পরিত্যক্ত কক্ষগুলোতে মাদকের আসর বসায় এলাকার দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে কয়েকটি জানালা, দরজা , টিন খুলে পড়লে পাঠদানের শ্রেণি কক্ষে রাখা হয়েছে। যার কারণে শিক্ষার্থীদের একই কক্ষে গাদাগাদি করে পাঠ গ্রহণ ও বসার সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

বিদ্যালয়টি বর্তমানে ২নং কাশিমপুর ইউনিয়নের পিএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু পিএসসি পরীক্ষার সময় কক্ষের স্বল্পতার কারণে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে। এই সমস্যার কারণে পাশের ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু কক্ষ নিয়ে কেন্দ্র চালাতে হয় বলে প্রধান শিক্ষক জানান। তিনি আরও বলেন, যদি এই পরিত্যক্ত ভবন ভেঙ্গে নতুন করে কিছু ভবন তৈরি করা হয় তাহলে একটি সুন্দর পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পাঠ গ্রহণ করতে পারবে এবং এই কক্ষের স্বল্পতার সমস্যা দূর হবে।

কমিটির সভাপতি আফজাল হোসেন জানান, গত কয়েক বছর থেকে সমাপনি পরীক্ষায় শতভাগ পাশ থাকলেও প্রায় ৪শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য পর্যাপ্ত বেঞ্চ, শ্রেণি কক্ষ, লাইব্রেরী নেই। যার কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনা করার ক্ষতি হচ্ছে।

পরিত্যক্ত ভবনের দেয়াল ফেটে গেছে। ঝড়ে টিন খুলে উড়ে যে কোন সময় বড় ক্ষতি ও দেয়াল ভেঙ্গে পড়তে পারে। তিনি আরো বলেন, ২০১১সালের শেষ দিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করা কালে বিষয়টি জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মজনুর রহমান জানান, এই বিদ্যালয়ের সমস্যা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হয়েছে ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া বিনতে তাবিব জানান, দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

(বিএম/এএস/নভেম্বর ১৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test