E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মাদারীপুরে দুই স্কুলছাত্রী হত্যা : ৪ মাসেও মামলার চার্জসীট হয়নি

২০১৫ ডিসেম্বর ১৩ ১৯:২৪:০৪
মাদারীপুরে দুই স্কুলছাত্রী হত্যা : ৪ মাসেও মামলার চার্জসীট হয়নি

মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর মস্তফাপুরের চাঞ্চল্যকর দুই স্কুলছাত্রী হ্যাপি ও সুমাইয়া হত্যাকান্ডের ৪ মাসেও মামলা চার্জসীট দেওয়া হয়নি। রবিবার মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নিহত হ্যাপী আক্তারের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে পূনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন।

উল্লেখ্য, চলতি বছর ১৩ আগস্ট স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাদারীপুরের মস্তফাপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অস্টম শ্রেণীর দুই স্কুলছাত্রী সুমাইয়া ও হ্যাপীকে অপহরণের পর ধর্ষণ শেষে নির্যাতন করে বিষ খাইয়ে হত্যা করে বখাটেরা। পরে ঐ দুই ছাত্রীকে সদর হাসপাতালে ফেলে রেখে বখাটেরা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় পরের দিন ১৪ আগস্ট নিহত সুমাইয়ার বাবা বিল্লাল শিকদার থানায় মামলা করেন। কিন্তু তাতে প্রধান আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় বিচার নিয়ে শংকা দেখা দেয়ায় হত্যার এক মাস পর ১৩ সেপ্টেম্বর নিহত হ্যাপীর মা মুক্তা বেগম বাদী হয়ে মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ঐ গ্রামের শওকত নার্গাসীর ছেলে রানা নার্গাসীকে প্রধান আসামি করে অপহরণ শেষে ধর্ষণের পর হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

এই মামলায় আসামিরা হলো রানা নার্গাসী (২১), মেহেদী হাসান (২০), শিপন শিকদার (২০), রফিকুল ইসলাম দরজী (২০), উজ্জ্বল শিকদার (২৫), রকিব শিকদার (২১), আলামিন হাওলাদার (২০) ও সাজন বেপারী (২০)।

এই আসামীদের মধ্যে প্রথম পর্যায় পুলিশ মস্তফাপুরের রকিব শিকদার, শিপন শিকদার, রফিকুল ইসলাম দর্জী ও প্রধান আসামী রানা নার্গাসীর মা সালমা বেগমকে গ্রেফতার করে মডেল থানা পুলিশ। পরে ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর প্রধান আসামী রানা নার্গাসীকে জেলার শিবচর উপজেলা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বাদীপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট ইয়াদ মোর্শেদ সজল বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতেই এর আগে হত্যা মামলা নিয়েছে পুলিশ। তবে ঘটনার একমাস পর মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে রানা র্নাগাসীকে প্রধান আসামি করে অপহরণ শেষে ধর্ষণের পর হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। দায়ের করা মামলায় বিজ্ঞ আদালত সদর থানার ওসিকে সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে পুনঃরায় লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করা হলে ১৮ সেপ্টেম্বর আদালত নামঞ্জুর করে”।

নিহত হ্যাপীর মা মুক্তা বেগম বলেন, গত ১৫ নভেম্বর হাইকোর্টে বিচারিক আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের পর রবিবার শুনানি শেষে হাইকোর্ট-এর দ্বৈত বেঞ্চ আমার মেয়ে হ্যাপির লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে পূনরায় ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন।

অপরদিকে নিহত হ্যাপীর চাচা কবির খান ও মা মুক্তা বেগম, সুমাইয়ার বাবা বিল্লাল শিকদারসহ পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে সদর থানায় ঘুরেও কোনো কূলকিনারা না পেয়ে পরে বাধ্য হয়ে আদালতের আশ্রয় নিতে হয়েছে। এ ঘটনার শুরু থেকেই থানায় মামলা গ্রহণে পুলিশ নানাভাবে হয়রানি করেছে। এখনও তারা নানাভাবে আমাদের হয়রানী করছে। তাছাড়া মামলার আসামীর পরিবারের লোকজন আমাদের হুমকিসহ মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। এমনকি এখন পর্যন্ত মামলার চার্জসীট হয়নি। মামলার তারিখে তারিখে আদালতে যাই। শুনানী হয়। আবার বাড়িতে ফিরে আসি। জানিনা সুষ্ঠু বিচার পাবো কিনা।
হ্যাপীর মা মুক্তা বেগম আরো বলেন, আসামী পক্ষের লোকজন আমাদের নানা ভয় দেখাচ্ছে। তাই আমার ৫ম শ্রেণীতে পড়া মেয়ে সুমনা ও আরেক মেয়ে জানাতুলকে নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি। ওর বাবা বিদেশে থাকে। তাই ভাবছি এ ব্যাপারে থানায় জিডি করবো।

অপর নিহত সুমাইয়ার বাবা বিল্লাল শিকদারও আসামীদের হুমকির কথা জানায়। সে দ্রুত মেয়ের বিচারের দাবী জানায়।

(এএসএ/এইচআর/ডিসেম্বর ১৩, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test