E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও খাদ্য সংকটে দুর্গতরা

২০১৭ জুলাই ২১ ১৪:৫০:২৫
গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও খাদ্য সংকটে দুর্গতরা

ছাদেকুল ইাসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার চার উপজেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত ১৯৪ গ্রামের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও বিস্তীর্ণ আবাদি জমি থেকে প্রতিদিনই পানি নেমে যাচ্ছে। বানভাসী মানুষ নতুন করে তাদের ঘরবাড়ি ও বাড়ির উঠান মেরামত করতে শুরু করেছেন। তবে পানিবন্দি আড়াই লাখ মানুষের অনেকেই এখনও খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে রয়েছেন।

দুর্গতদের মধ্যে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্রক্ষপুত্র নদের পশ্চিম তীরের উচু বাঁধ ও রেলের জায়গায় আশ্রয় নেওয়া শত শত পরিবার। এসব পরিবারে তীব্র খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া পয়ঃনিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় এসব মানুষ আরও বিপাকে পড়েছেন। অনেকের মধ্যে পানিবাহিতসহ বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই ছড়িয়েও পড়লেও মিলছে না পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা।

সরেজমিনে বালাসী ঘাটের রেলের জমিতে আশ্রয় নেওয়া কর্মহীন হতদরিদ্র মানুষের অভিযোগ, বন্যা আর ভাঙনের শিকার হয়ে শেষ সম্বল নিয়ে কোনও রকমে বাঁধ ও রেলের জমিতে আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক পরিবার। কর্মহীন এসব মানুষ খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। অনেকে একবেলা ভাত খেলেও মেলে না তরকারি। ফলে লবণ, মরিচ, আলু ভর্তা বা পাট শাক দিয়ে কোনও রকমে দিন পার করছেন তারা। গত ১৫ দিন ধরে এ অবস্থা চললেও তাদের কপালে জোটেনি ত্রাণ সহায়তা। এমনকি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি- বেসরকারি পর্যায়ের কেউ কোনও খোঁজখবরও নেয়নি।

সেখানে আশ্রয় নেওয়া জোহরা বেগম বলেন, ‘বন্যার কারণে ঘরবাড়ি ছেড়ে রেলের জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি। থাকার মতো খড়ের ছাপড়া তুলে তার মধ্যে হাঁস-মুরগিসহ স্বামী সন্তান নিয়ে থাকতে হচ্ছে। হাতে টাকা আর কাজকর্ম না থাকায় চাল, ডাল কেনা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে।’

আমেনা বেগম বলেন, ‘১৫ দিন ধরে আশ্রয় নিয়ে থাকলেও কোন ত্রাণ সহায়তা পাননি। এমনকি কেউ খোঁজ খবরও নেয়নি তাদের। বিশুদ্ধ পনি, খাবার ও পয়নিস্কাশননের অভাব থাকায় দুর্ভোগ বাড়ছে। কোন রকম এক বেলা দুমুঠো ভাত জুটলেও কপালে জোটেনা তরকারি। এ কারণে আলু ভর্তা, কচু ভর্তা, পাট শাক যাই পাওয়া যাচ্ছে তাই দিয়ে ভাত খেতে হচ্ছে।’

আনোয়ার হোসেন নামে আরও একজন বলেন, ‘কেমনে পড়ে আছি, কী খাই নাকি খাই না তার কেউ খোঁজ রাখে না। বন্যা আর ভাঙনে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছি। রেলের জায়গায় গরু, ছাগল নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু এভাবে এখানে কতদিন থাকতে পারবো তাও জানি না।’

(এসআইআর/এসপি/জুলাই ২১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test