E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খালেদার সাজা বাড়ানোর আপিল প্রত্যাহারের অনুরোধ জয়নুলের

২০১৮ মার্চ ২৬ ১২:৪৪:২৪
খালেদার সাজা বাড়ানোর আপিল প্রত্যাহারের অনুরোধ জয়নুলের

স্টাফ রিপোর্টার : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের আপিল আবেদন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাবে থাকুন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকুন। রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে সরকারের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য অহেতুক মামলা করবেন না’। দুদক খালেদা জিয়ার দণ্ড বাড়ানোর আপিল দায়েরের পর রোববার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সভাপতির কক্ষে তিনি এই কথা বলেন।

জয়নুল আবেদীন বলেন, দেশের মানুষ অত্যন্ত বেদনার মধ্যে আছে। তাদের কথা বলার অধিকার নেই, তারা ভাল নেই। কথা বললেই তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, হয়রানিমূলক ও ভিত্তিহীন মামলা করা হয়। শুধু মামলাই না, সেই মামলায় তাদেরকে রিমান্ডে নেয়া হয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের একটি নির্দেশ আছে, অহেতুক কাউকে রিমান্ডে নেয়া যাবে না। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি, দিনের পর দিন রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। এটা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগের উপর সরকার বিভিন্নভাবে হস্তক্ষেপ করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রধান বিচারপতিকে বিদেশে পাঠিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। মানুষ মনে করে, দেশের কোনো আদালতে বিচার না পেলেও এই আদালতে (সুপ্রিম কোর্টে) এলে অন্তত তারা ন্যায় বিচার পাবেন। কিন্তু সেই বিচার থেকে আজ তারা বারবার বঞ্চিত হচ্ছেন। আইনজীবীরাও তাদের নিজেদের ও মক্কেলদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারছেন না। কারণ সরকার বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। আদালত ইচ্ছা করলেই নিরপেক্ষ বিচার করতে পারছেন না।

নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার প্রসঙ্গ টেনে জয়নুল আবেদীন বলেন, ওই মামলায় যেভাবে গেজেট হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি। আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে বলেছি, যতক্ষণ পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ আদালতের অর্থনৈতিক শক্তি না আসবে, যতক্ষণ পর্যন্ত পৃথক সচিবালয় না হবে, ততদিন পর্যন্ত এ দেশের আদালত স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, সমস্ত বিচার বিশ্লেষণ করে আইনজীবীরা দেখেছেন, বিগত নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ কোথাও কোনো ভোট দিতে পারেনি। এখনও তারা আগামী নির্বাচন কীভাবে হবে সে নিয়ে সন্দিহান। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, তারাই আবার জিতে যাবে। তাদের কাছে নাকি জাদুর কাঠি আছে। সেজন্য দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীরা ভোট দিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছে, নিরপেক্ষভাবে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারলে সর্বোচ্চ আদালতে যে ফলাফল হয়েছে একই ফলাফল সারা বাংলাদেশে হবে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করেছে দুদক। এ বিষয়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, বাংলাদেশের গণ মানুষের নেতা খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক মামলায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ৫ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। সেই সাজা বাড়ানোর জন্য দুদক আর সরকার একাকার হয়ে গেছে। আর সেজন্য নাকি তারা আবার নতুন করে আপিল করেছে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণ মানুষের নেতা, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। তার বিরুদ্ধে এক এগারোর বেআইনি সরকার মামলা করেছিল। সেই মামলায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই সাজা দেয়া হয়েছে। তাই আমরা আশা করি আপনারা (দুদক) এই সাজা নিয়ে রাজনীতি না করে যে আপিলটি দায়ের করেছেন প্রত্যাহার করে নেবেন। সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে আমি দুদককে এ অনুরোধ জানাচ্ছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সরকারের উৎসাহে দুদক এই আপিলটি করেছে। দুদক তার নিজস্ব এখতিয়ারে এই আপিল দায়ের করেছে বলে আমি মনে করি না। মনে হচ্ছে, সরকার এ বিষয়ে দুদককে চাপ দিচ্ছে। চাপ দিয়ে এই আপিল করিয়েছে।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২৬, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test