E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টু ফিঙ্গার টেস্ট অবৈধ : হাইকোর্ট

২০১৮ এপ্রিল ১২ ১৭:৪৭:৫৭
টু ফিঙ্গার টেস্ট অবৈধ : হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার : ধর্ষণের শিকার ক্ষতিগ্রস্ত নারীর ক্ষেত্রে হাতের দুই আঙুলের মাধ্যমে (টু ফিঙ্গার টেস্ট) ধর্ষণ পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

দুই আঙুলের মাধ্যমে ধর্ষণ পরীক্ষা পদ্ধতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর ব্লাস্ট, আসক, মহিলা পরিষদ, ব্র্যাক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, নারীপক্ষসহ দুই চিকিৎসক এ সংক্রান্ত রিট আবেদনটি করেন।

রিটে দুই আঙুলের মাধ্যমে ধর্ষণ পরীক্ষার পদ্ধতিকে সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১, ৩২ ও ৩৫(৫) ও সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ ধারার পরিপন্থী দাবি করা হয়।

ব্লাস্টের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্রসচিব বরাবর রুল জারি করেন। সেখানে ‘টু ফিঙ্গার্স টেস্ট’ কেন আইনানুগ কর্তৃত্ববহির্ভূত এবং অবৈধ হবে না জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসচিবকে ধর্ষণের শিকার মেয়েশিশু ও নারীদের জন্য নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দেন।

পরীক্ষাটি বাতিলের দাবি যে কারণে :

ধর্ষণের পর একজন মেয়েশিশু বা নারীকে দীর্ঘ ও কঠিন স্বাস্থ্যপরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এর একটি ‘টু ফিঙ্গার্স টেস্ট’। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক জানান, স্বাস্থ্যপরীক্ষার প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য চাওয়া হয়। সে জন্য পরীক্ষাটি করা হয়ে থাকে। তবে শিশুদের যোনিপথের আঘাত খালি চোখেই দেখা যায়। সে জন্য খুব জরুরি না হলে পরীক্ষাটি করা হয় না।

মানবাধিকারকর্মীরা যে যুক্তি তুলছেন, তা হলো পরীক্ষাটির ফলাফল অনুমানভিত্তিক। এটি ধর্ষণের শিকার মেয়েশিশু ও নারী এবং চিকিৎসকের দৈহিক গড়নের ওপর নির্ভর করে। শিশু ও অল্প বয়স্ক নারীদের জন্য পরীক্ষাটি যন্ত্রণাদায়কও। আরও যে প্রশ্নটি উঠছে, তা হলো বিবাহিত নারীরা যখন ধর্ষণের শিকার হবেন, তখন ‘টু ফিঙ্গার্স টেস্ট’-এর কোনো যুক্তিই নেই।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনায় যা আছে :

দিকনির্দেশনায় চিকিৎসককে প্রথমে স্বাস্থ্যপরীক্ষা সম্পর্কে ধর্ষণের শিকার নারী বা মেয়েশিশুর অভিভাবককে জানানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণে ঘটনার পারিপার্শ্বিকতার ওপর জোর দিতে বলা হয়েছে। চিকিৎসকেরা অন্যান্য আলামত যথেষ্ট বিবেচিত হলে ‘টু ফিঙ্গার টেস্টের’ প্রয়োজন আছে কি নেই, সে সম্পর্কে মন্তব্য করবেন। তাঁরা একান্ত প্রয়োজন না হলে টু ফিঙ্গার টেস্ট করবেন না বলেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া সনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে মর্যাদাহানিকর ভাষা ব্যবহারে বিশেষ করে ‘অভ্যাস’, ‘অভ্যস্ত’ এমন শব্দ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ১২, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test