স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা : মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল ১।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

প্রমানিত ২, ৪, ৬, ১৬ নং অভিযোগে ফাঁসির আদেশ এবং ১, ৩, ৭, ৮নং অভিযোগে মতিউর রহমান নিজামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল ১।

নিজামীর বিরুদ্ধে প্রমানিত অভিযোগসমূহ

অভিযোগ-১ : এই অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৩ আগস্ট নিজামী চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে শহর ছাত্রসংঘের এক সুধী সমাবেশে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার বক্তব্য দেন। ওই সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রসংঘের সভাপতি আবু তাহের হিন্দু সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দেন। নিজামী ওই সভায় উপস্থিত থেকেও আবু তাহেরের বক্তব্যের বিরোধিতা না করে মৌন সম্মতি দেন।

অভিযোগ-২ : একই বছরের ২২ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক একাডেমি হলে আল-মাদানি স্মরণসভায় স্বাধীনতাকামীদের নিশ্চিহ্ন করতে নেতা-কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেন নিজামী।

অভিযোগ-৩ : একই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন প্রাঙ্গণে এক ছাত্রসমাবেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন নিজামী।

অভিযোগ-৪ : একই বছরের ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর যশোর বিডি হলে ছাত্রসংঘের মিটিংয়ে জিহাদের সমর্থনে বক্তব্য দেন নিজামী। ওই মিটিংয়ে তিনি নিরীহ বাঙালিদের হত্যার নির্দেশ দেন।

অভিযোগ-৬ : নিজামীর নির্দেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় একই বছরের ৮ মে পাবনার সাঁথিয়া থানার করমজা গ্রামের লোক জড়ো করে নির্বিচারে অসংখ্য লোককে হত্যা করা হয়। ধর্ষণ করা হয় নারীদের।

অভিযোগ-৭ : একই বছরের ২৭ ও ২৮ নভেম্বর পাবনার সাঁথিয়া থানার ধুলাউড়ি গ্রামে ডা. আবদুল আওয়ালের বাড়িসহ আশপাশের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ৩০ জনকে। নিজামীর নির্দেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সেখান থেকে চারজনকে ধরে ইছামতী নদীর পাড়ে নিয়ে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। এদের মধ্যে শাহজাহান আলীকে গলা কেটে ফেলে চলে যাওয়ার পর ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান।

অভিযোগ-৮ : ১৬ এপ্রিল ঈশ্বরদী থানার আটপাড়া ও বুথেরগাড়ী গ্রামে হামলা চালিয়ে ১৯ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

অভিযোগ-১৬ : সারা দেশে ছাত্রসংঘ ও আলবদর বাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী যে অপরাধ করেছে তার দায় নিজামীর। কারণ ছাত্রসংঘের সভাপতি ও আলবদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে ওই সব কর্মকাণ্ডে পরিকল্পনাকারী ও উসকানিদাতা ছিলেন তিনি।

>>রায়ের সংক্ষিপ্তসার পড়া শুরু

>>২০৪ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু

>>ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়েছেন বিচারপতি

>>ট্রাইব্যুনালে নিজামী

>>নিজামীকে ট্রাইব্যুনালে আনার জন্য কারাগারে প্রিজন ভ্যান

>>কাশিমপুর থেকে নিজামীকে ঢাকায় স্থানান্তর

>>নিজামীর বিরুদ্ধে অভিযোগসমূহ

>>বুধবার নিজামীর রায় ঘোষণা

(ওএস/অ/অক্টোবর ২৯, ২০১৪)