মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : অবশেষে উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষণা প্রত্যাহার করেছে বিআইডব্লিউটিএ। মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সরকার দলীয় এমপি ও জেলা প্রশাসনের আপত্তির মুখে সোয়া এক ঘণ্টা পর আবারও উদ্ধার কাজ শুরু করেছে বিআইডব্লিউটিএ।

শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ আবারও উদ্ধার কাজ শুরুর ঘোষণা দিলে নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনরা হাততালি দিয়ে স্বাগত জানায়। শনিবার সকাল পর্যন্ত মোট ৫৪টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।


এদিকে মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া লঞ্চটি ২৬ ঘণ্টা পর শুক্রবার বিকেলে দৃশ্যমান হলেও রাত শেষে এখনও উদ্ধার তৎপরতা চলছে। রাত ৩টার দিকে উল্টো হয়ে থাকা লঞ্চটি সোজা করতে সক্ষম হয় উদ্ধাকারী দল।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গজারিয়া উপজেলার দৌলতপুর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে লঞ্চডুবির এ ঘটনা ঘটে।

উদ্ধার হওয়া ৪৭ লাশের মধ্যে ৪৪ জনের লাশ শনাক্ত শেষে তাদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা হলেন, জুলহাস হোসেন (৩৪), মোশারফ দেওয়ান (৩৫), জামাল শিকদার (৫০) ও তার ছেলে আবির (১১), সেতারা বেগম (৫৫), টুম্পা বেগম (২৬), শিশু মাহি, শিশু সুমনা, জলিল মালত (৫০), মানিক (১৪), আব্দুল্লাহ আল রেদওয়ান (৪০), রাফিয়া বেগম (৬০), খোরশেদ আলম খোন্দকার (৭৫), ওসমান গণি মোল্লা (৭০), ইসমাইল ফকির (৬০), কৃষ্ণ কমল দাস ৫০, আব্দুল জলিল (৫৫), তাসলিমা আক্তার রিয়া (২৫), রাশিদা বেগম (৫৬), লাইলী বেগম (৫৫), ঋতু (২৪), আব্দুল মান্নান দেওয়ান (৬৫), লক্ষ্মী দাস (৮৫), রজিয়া (৩২), শিশু রুমান, আব্দুল জলিল খান (৭০), মিন্টু সুখানী (৪০), মাসুম (৩৮), রিমা আক্তার (৩২), আহসানুল্লাহ কবিরাজ (৫৫), আরিফ রিসাত (১১), মিন্টু (২৭), রফিকুল ইসলাম (৪৫), নাঈম (১১), সায়েত ঢালী (৩৫), মেহরাজ খন্দকার (১২), শিরিন শিলা (২৪), আল আমিন (৭), সুমন বেপারি (২৭), বিউটি বেগম (২৩) লিটন মল্লিক (২৩), আব্দুুস সালাম(৪৫), মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম সরদার(৪৫)।

নিখোঁজ হওয়া আহসানউল্লাহ কবিরাজের (৫৫) পুত্র গোলাম মোস্তফা আক্ষেপ করে বলেন, ‘লাশ গুম করার জন্য লাশের বিভিন্ন অঙ্গ কেটে ফেলা হচ্ছে। এতে করে স্বজনের লাশ শনাক্ত করতে সমস্যা হচ্ছে। শুক্রবার রাতে যেসব লাশ উদ্ধার করা হয়েছে প্রতিটিরই পেট, হাত-পা কাটা।

তবে উদ্ধারকারীরা বলছেন উদ্ধার করতে গিয়ে লঞ্চের বিভিন্ন জায়গায় লেগে কেটে যাচ্ছে মৃতদেহের শরীর।

এর আগে খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছায়। এরইমধ্যে লঞ্চটি শনাক্ত করে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যাদি সম্পন্ন করছে প্রত্যয়ের অফিসারসহ ডুবুরিরা।।

ডুবে যাওয়া লঞ্চের যাত্রী খালেক মিয়া জানান, সদরঘাট থেকে দুপুর একটার দিকে শরীয়তপুরের উদ্দেশে রওয়ানা হয় লঞ্চটি। পথে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে। এতে মাত্র ৩ মিনিটের মধ্যে লঞ্চটি ডুবে যায়। লঞ্চটিতে ২৮০ থেকে ৩০০ যাত্রী ছিল।

তীরের দিকে ডুবন্ত লঞ্চ : নারী ও শিশুসহ ২৯ লাশ উদ্ধার

মেঘনায় লঞ্চ ডুবি : নারী ও শিশুসহ ২২ লাশ উদ্ধার

মেঘনায় লঞ্চ ডুবির ঘটনায় ১২ জনের লাশ উদ্ধার

তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে মেঘনায় লঞ্চ ডুবি, ৭ লাশ উদ্ধার

তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে মেঘনায় লঞ্চ ডুবি, ৫ লাশ উদ্ধার

(ওএস/অ/মে ১৭, ২০১৪)