E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

বাগেরহাটে প্রস্তুত ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র

সুন্দরবনের কর্মকর্তা-বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল, সরিয়ে আনা হচ্ছে পর্যটক 

২০২৪ মে ২৫ ১৮:৫১:৪৯
সুন্দরবনের কর্মকর্তা-বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল, সরিয়ে আনা হচ্ছে পর্যটক 

সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট বি ক্যাটাগরির ঘুর্ণিঝড় ‘রেমাল’ সুন্দরবন উপকূলে যতোই ধেঁয়ে আসছে বাগেরহাটে আতঙ্ক ততোই বাড়ছে। জেলার প্রায় তিন লাখ মানুষকে নিরাপদ রাখতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্র। এছাড়াও উপকূলবর্তী শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলার উপজেলার দূর্যোগ সহনীয় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভবন আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সিপিপি, যুব রেড ক্রিসেন্টসহ ৩ হাজার ৫০৫ স্বেচ্ছাসেবক। সুন্দরবন বিভাগের সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করে দেশি –বিদেশী পর্যটকসহ মৌয়াল ও জেলেদের ম্যানগ্রোভ এই বন থেকে লোকালয়ে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সুন্দরবনের দুর্বল অবকাঠামো থাকা ৬টি বন অফিস ও টহল ফাঁড়ির কর্মকর্তা-বনরক্ষীদের পার্শ্ববর্তী বন অফিসে অশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। 

বাগেরহাটে আজ শনিবার দুপুর থেকে দমকা হাওয়ার সাথে থেমে-থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। পূর্ণিমা থাকায় জেলার সব নদ-নদীতে পানির উচ্চতা বেড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১০ কিলোমিটার ঝুকিপূর্ণ বেড়িবাধ থাকায় জেলার নদী তীরবর্তী মানুষসহ সব শ্রেনী পেশার লোকজনের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘুর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় দুপুরে জরুরী সভা করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ‘এলার্ট থ্রী’ জারি করে সব বানিজ্যিক জাহাজকে বন্দর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ৩৩টি জাহাজসহ সব লাইটার জাহাজ বন্দর চ্যানেল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ নিরাপদ স্থানে রাখতে মোংলা বন্দর জেটি খালি করে দেয়া হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব ‘এলার্ট ফোন’ জারি করা হলে বন্দর সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে। জেলা, উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন, সিভিল সার্জন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস, মোংলা বন্দর, সুন্দরবন বিভাগ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড কন্টোল রুম খুলে ঘুর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্ততি গ্রহন করেছে।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহম্মদ আল বেরুনী জানান, জেলার ৩৩৮ কিলোমিটার বেড়িবাধের ১০ কিলোমিটার বেশি ঝুকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাস হলে বেড়িবাধের এস ঝুকিপূর্ন অংশ ভেঙ্গে যেতে পারে। এসব ঝুকিপূর্ন বেড়িবাধ রক্ষায় পাউবো’র সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ছুটি বাতিল করে বালু ভর্তি পর্যাপ্ত জিওব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল ধেঁয়ে আসায় জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্র। এছাড়াও উপকূলবর্তী শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলার উপজেলার দূর্যোগ সহনীয় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভবন আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সিপিপি, যুব রেড ক্রিসেন্টসহ ৩ হাজার ৫০৫ স্বেচ্ছাসেবক। নগদ সাড়ে ৬ লাখ টাকা, ৬৪৩ মেট্রিক টন চাল, শুকনা খাবার, পানিসহ পর্যাপ্ত মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম জানান, সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় ধেঁয়ে আসার খবরে বন বিভাগের সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করে তাদের নিরাপদ থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দেশি –বিদেশী পর্যটকসহ মৌয়াল ও জেলেদের ম্যানগ্রোভ এই বন থেকে লোকালয়ে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সুন্দরবনের দুর্বল অবকাঠামো থাকা ঝাপসি, আমুরবুনিয়া, কলমতেজী, নাংলি, লাউঢোব ও ধানসাগর টহল ফাঁড়ি ও অফিসের কর্মকর্তা-বনরক্ষীদের পার্শ্ববর্তী বন অফিসে অশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।

মোংলা বন্দর কর্র্তপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান জানান, ঘুর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় দুপুরে জরুরী সভা করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ‘এলার্ট থ্রী’ জারি করে সব বানিজ্যিক জাহাজকে বন্দর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ৩৩টি জাহাজসহ সব লাইটার জাহাজ বন্দর চ্যানেল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ নিরাপদ রাখতে মোংলা বন্দর জেটি খালি করে দেয়া হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব ‘এলার্ট ফোন’ জারি করা হলে বন্দর সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে।

(এস/এসপি/মে ২৫, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৭ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test