E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সুন্দরবনে প্রবেশে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা, হতাশ বনজীবীরা

২০২৫ মে ৩১ ১৯:৩৮:৩৩
সুন্দরবনে প্রবেশে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা, হতাশ বনজীবীরা

সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : সুন্দরবনে বাঘ হরিণসহ বন্যপ্রাণী ও মাছের প্রজনন মৌসুমে তিন মাসের জন্য সব নদ-নদী খালে মাছ ও মধু আহরণ বন্ধসহ দেশী-বিদেশী পর্যটক প্রবেশ নিষিদ্ধ জরি করেছে সুন্দরবন বিভাগ। 

রবিবার (১ জুন) থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বহাল থাকবে। গোটা সুন্দরবনে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে গত ২৪ মে থেকে জেলে, মৌয়ালী ও পর্যটকদের সুন্দরবনে প্রবেশের পাশ (অনুমতিপত্র) দেয়া বন্ধ করা হয়েছে। তবে, বন বিভাগের এই সিদ্ধান্তে সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল জেলে বনজীবী ও পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িতদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।

সুন্দরবন প্রবেশে তিন মাসের নিষিদ্ধ জরির বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার জেলে ইয়াহিয়া শিকদার, রুস্তম বয়াতী, আলী আকব্বরসহ অনেক জানান, এই নিষেধাজ্ঞা সময়ে আমরা এখন পরিবার পরিজন নিয়ে কি খাবো। মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিয়ে সারা বছর সুন্দরবনের নদ-নদী খালে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। এখন বনবিভাগ মাছ ধরা বন্ধ করায় আমাদের তিনমাস বেকার হয়ে থাকতে হবে। সমুদ্রে মৎস্য আহরণ বন্ধ কালে যেভাবে জেলেদের মৎস্য বিভাগ খাদ্য সহয়তা দেয় সেভাবে আমাদেরও প্রণোদনা দেয়ার ব্যবস্থা করা নহোক। তা না হলে পেটের দায়ে অনেকে এই সময়ে অনেকে অবৈধ উপায়ে সুন্দরবনে ঢুকে মাছ আহরণ করতে বাধ্য হবে।

শরণখোলা বাজারের মৎস্য আড়ৎদার জালাল মোল্লা ও তুহিন বয়াতী বলেন, সুন্দরবনে এইখন মাছ আহরণের ভরা মৌসুম। এই সময়ে তিনমাস মাছ ধরা বন্ধ ঘোষণা করায় মৎস্য আড়ৎদাররা প্রতি বছরই লাখ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আড়ৎদারের দাদনের টাকা পরিশোধ করার বিকল্প উপায় না থাকা ও জীবন ধারণ করতে ২০ হাজার জেলের একটি বড় অংশই চোরা পথে সুন্দরবনে ঢুকে নিষিদ্ধ সময়ে মাছ আহরণ করে।

সুন্দরবন ট্যুর অপারেটর আব্দুল্রা বনি জানান, তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা সময়ে পর্যটনের সাথে জড়িত দুই হাজারের অধিক পরিবার দারুন অর্থ সংকটে পড়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়। তিনি সুন্দরবনের এই নিষেধাজ্ঞার সময় এক মাসে নামিয়ে আনার দাবি জানান।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড এই ম্যানগ্রোভ বনে বাঘ হরিণসহ বন্যপ্রাণী ও মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের নদ-নদী খালে মাছ ও মধু আহরণ বন্ধসহ দেশী-বিদেশী সব পর্যটক প্রবেশ নিষেদ্ধজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এজন্য গত ২৪ মে থেকে জেলে, মৌয়ালী ও পর্যটকদের সুন্দরবনে প্রবেশের পাশ (অনুমতিপত্র) দেয়া বন্ধ করেছে। এই তিন মাস সুন্দরবনে মাছ ও মধু আহরণসহ সব ধরনের পর্যটক প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সময়ে সুন্দরবনে কেউ যেতে পারবেনা। এই নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগেই জেলে, মৌয়ালী ও সব পর্যটকদের সুন্দরবন থেকে বের করে আনা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে সুন্দরবন সন্নিহিত লোকালয়ে প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবে, এবার সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল দরিদ্র বনজীবীদের তালিকা করে তাদের খাদ্য সহায়তাসহ প্রণোদনা দেয়ার জন্য বন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

(এস/এসপি/মে ৩১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩১ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test