E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

রাজবাড়ীতে এক পরিবারের তিনজন বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত 

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২০ ১৮:১০:৫৫
রাজবাড়ীতে এক পরিবারের তিনজন বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত 

একে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির জঙ্গল ইউনিয়নের সমাধীনগর গ্রামের এক পরিবারে একসঙ্গে তিনজন ৪৮তম বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। 

তারা হলেন- ডা. শিবাজী প্রসাদ বিশ্বাস, তার ছোট ভাই ডা. গৌরব বিশ্বাস এবং শিবাজীর স্ত্রী ডা. ইন্দ্রানী সাহা। শিবাজী ও গৌরব প্রয়াত সমাধীনগর আর্য্য সংঘ বিদ্যামন্দির মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিনয় কৃঞ্চ বিশ্বাস ও সাধুখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীলিমা রানী বিশ্বাসের সন্তান। অন্যদিকে ইন্দ্রানী সাহা শিবাজীর স্ত্রী, তিনি বরিশালের অজয় সাহা ও লিপিকা সাহার মেয়ে।

জানা গেছে, শিবাজী প্রসাদ বিশ্বাস ২০১২ সালে সমাধীনগর আর্য্য সংঘ বিদ্যামন্দির মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১৪ সালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজে। বর্তমান শিবাজী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে এফসিপিএস (মেডিসিন) পার্ট-২ কোর্স করছেন।

তার ছোট ভাই গৌরব বিশ্বাস ২০১৪ সালে সমাধীনগর আর্য্য সংঘ বিদ্যামন্দির মাধ্যমিক বিদ্যলয় থেকে এসএসসি এবং ২০১৬ সালে দ্বারিয়াপুর ডিগ্রী কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। বর্তমান গৌরব বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এমডি (ইন্টারনাল মেডিসিন) কোর্স করছেন রেসিডেন্ট হিসেবে।

অন্যদিকে শিবানী প্রাসাদের স্ত্রী ইন্দ্রানী সাহা ২০১৫ সালে বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১৭ সালে বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন চট্রগাম মেডিকেল কলেজে। বর্তমান ইন্দ্রানী সাহা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে এফসিপিএস (গাইনি ও অবস) পার্ট-২ কোর্স করছেন।

শিবানী প্রসাদ জানান, তার বাবার খুব ইচ্ছা ছিল তার দুই সন্তানের অন্তত একজন হলেও যেন চিকিৎসক হন। দেশের মানুষের সেবায় যেন সে নিবেদিত থাকে। তারা বাবা মারা যান ২০১৪ সালে। বাবার মৃত্যুর পর তারা খুব হতাশ হয়ে পড়েন। তাদের মা তাদেরকে আগলে রাখেন। বাবার ইচ্ছার কথা স্মরণে রেখে তারা দুই ভাই-ই পড়াশোনা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা দুই ভাই-ই মেডিকেলে ভর্তিও সুযোগ পান। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেটাও তার বাবা দেখে যেতে পারেননি। তাদের বাবা বেঁচে না থাকলেও তাদের বাবার সেই ইচ্ছা তারা লালন করে চলছেন। তাদের বাবার স্বপ্ন পূরণে তারা কাজ করবেন। দেশের মানুষের সেবায় তারা নিজেদেরকে সব সময় নিয়োজিত রাখবেন।

তিনি আরও বলেন, তাদের ইচ্ছা ছিল যেকোন এক ভাই দেশের বাইরে চলে যাবেন। কিন্তু তাদের বাবা সেটা পছন্দ করতেন না। দেশের প্রতি তার বাবার একটা অন্য রকম ভালোবাসা ছিল, টান ছিল। বাবার সেই দেশপ্রেমকে তারা সম্মান জানান। দুই ভাইসহ ইন্দ্রানী দেশের মানুষের সেবায় তারা বাকী জীবন কাটাবেন। মানুষের সেবার মধ্য দিয়েই তারা তাদের বাবাকে স্মরণ করবেন। সবার কাছে তারা দোয়া চান।

প্রতিবেশি অমিয় প্রসাদ রায় জানান, একই পরিবারের তিনজন বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ায় শুধু পরিবার নয়, পুরো এলাকাই আনন্দে উচ্ছ্বসিত।

সুপারিশপ্রাপ্ত তিনজনের মা নীলিমা রানী বিশ্বাস আবেগে আপ্লুত হয়ে জানান, আজ ওদের বাবা বেঁচে থাকলে খুবই খুশি হতেন। তার জীবনদশায় সে তার সন্তানদের সফলতা দেখে যেতে পারল না। এটা তাদের পরিবারের জন্য খুবই কষ্টের। এই মহাআনন্দের খবরেও তারা মর্মাহত। তবে তার একমাত্র চাওয়া, সন্তানরা যেন দেশের মানুষের সেবার মধ্য দিয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণ করে।

(একে/এসপি/সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test