বিএনপির ভেতরে বেপরোয়া রাজনীতি
নেতৃত্বের শূন্যতা, সাংগঠনিক শৃঙ্খলার সংকট

দিলীপ চন্দ : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনীতিতে প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে সক্রিয়। ক্ষমতার বাইরে থাকলেও আন্দোলন ও সংগঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রভাব ধরে রাখার চেষ্টায় থাকা এ দলটি বর্তমানে এক অভ্যন্তরীণ সংকটের সম্মুখীন হয়েছে।
দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে চার হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। এই সংখ্যা শুধু পরিসংখ্যান নয়, বরং এটি দলটির ভেতরে ক্রমবর্ধমান বিশৃঙ্খলার একটি স্পষ্ট চিত্র।
এক বছরের ব্যবধানে চার হাজার শাস্তি
বিএনপির নেতারা বলছেন, সংগঠনকে শৃঙ্খলিত ও দায়িত্বশীল রাখার জন্য তারা তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত মনিটরিং জোরদার করেছেন। যার ফল হিসেবে অনেক অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার অর্থ দলটির কাঠামোতে কোনো বড় ধরনের দুর্বলতা রয়েছে—এটি স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
ক্ষমতার ছায়ায় বেপরোয়া আচরণ?
২০২৪ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাঠপর্যায়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা দেখা দেয়। কিন্তু সেই উদ্দীপনা ইতিবাচকের বদলে কোথাও কোথাও বেপরোয়া রূপ নিয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের মধ্যে রয়েছে—পুলিশের ওপর হামলা, থানায় অগ্নিসংযোগ, জমি দখল, নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজি, এমনকি ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধ।
বিশেষত লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় হামলা, খুলনায় পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধর ও ভোলায় ধর্ষণের ঘটনার মতো ঘটনা রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে—বিএনপি কি নিজেদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে?
নেতৃত্বের দোদুল্যমানতা ও তৃণমূলে বিচ্ছিন্নতা
বিএনপির বর্তমান নেতৃত্ব অনেকটাই কেন্দ্রনির্ভর এবং মাঠপর্যায়ের সঙ্গে সংযোগহীন হয়ে পড়েছে—এমন অভিযোগ নতুন নয়। ঢাকায় বসে কেন্দ্রীয় কমিটির কিছু ঘোষণায় তৃণমূলে বাস্তবিক প্রভাব ফেলে না বলেই মত দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. মাহবুব রশীদ বলেন, "দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকার কারণে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে একধরনের বিক্ষুব্ধ মনোভাব তৈরি হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই এই মনোভাব দখলবাজি ও প্রভাব খাটানোর মতো নেতিবাচক আচরণে রূপ নিচ্ছে।"
শাস্তির বাস্তবতা কতটা কার্যকর?
যদিও চার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে, বাস্তবে এসব শাস্তির ধরন প্রশ্নবিদ্ধ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাময়িক বহিষ্কার বা মৌখিক সতর্কতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, দলের অভ্যন্তরে পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতে শাস্তির প্রয়োগ হয়, যার ফলে প্রকৃত অপরাধীরাও অনেক সময় রক্ষা পেয়ে যায়।
সামনে পথ দুটি
এই মুহূর্তে বিএনপির সামনে দুটি পথ খোলা—একটি হচ্ছে দলের ভেতরের কাঠামোগত সংস্কার ও শৃঙ্খলার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, অন্যটি হচ্ছে নেতাকর্মীদের প্রতি নরম মনোভাব বজায় রেখে তাৎক্ষণিক রাজনৈতিক সুবিধা আদায়।
প্রথম পথটি কঠিন, তবে টেকসই ও ভবিষ্যতমুখী। আর দ্বিতীয়টি হয়তো স্বল্পমেয়াদে লাভজনক, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক ক্ষয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি: বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির আশা
দেশের জনগণ বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি গ্রহণযোগ্য বিকল্প শক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু সেই বিকল্প যদি নিজের দলেই অপরাধ ও বিশৃঙ্খলা সামাল দিতে না পারে, তাহলে জনআস্থা অর্জন সম্ভব নয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির উচিত হবে এখনই আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজেদের সংগঠন ঢেলে সাজানো। প্রয়োজনে দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে মাঠপর্যায়ে জবাবদিহির সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিএনপির চলমান পরিস্থিতি কেবল তাদের দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। যারা ‘পরিবর্তনের আশ্বাস’ দেয়, তাদের আগে নিজেদের মধ্যেই শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও নেতৃত্বের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে হবে। নইলে পরিবর্তনের স্বপ্ন ক্রমশই জনগণের জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
(ডিসি/এসপি/জুলাই ০৮, ২০২৫)
পাঠকের মতামত:
- ১০টির বেশি সিম থাকলে ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেবে বিটিআরসি
- স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের প্রস্তুতি বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সভা
- গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০ হাজার ছাড়াল
- বৈষম্যবিরোধী নেতা রিয়াদের বাসা থেকে সোয়া ২ কোটি টাকার চেক উদ্ধার
- ইসরায়েল পদক্ষেপ না নিলে সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য
- রাশিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্প, দেশে দেশে সুনামি সতর্কতা
- গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় মামলা
- ফরিদপুরে রাতের অন্ধকারে একটি সার্বজনীন দুর্গা মন্দির ভাঙচুর
- ‘শুল্ক কমানোর সবুজ সংকেত পেয়েছে বাংলাদেশ’
- বৃহস্পতিবার নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা
- ‘জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও জরুরি সংস্কার চায় বিএনপি’
- ‘জুলাই সনদের খসড়া বিষয়ে বিএনপি ইতিবাচক’
- ‘সরকার অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে কাজ করছে’
- লংগদুতে সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রমিক নিহত
- সাতক্ষীরা সদরের ডিবি সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত শুরু
- সাতক্ষীরায় শিক্ষার্থীদের সড়ক নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধি সভা অনুষ্ঠিত
- ফরিদপুরে মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার, ইয়াবা উদ্ধার
- সিলেটে ডঃ আবদুল মজিদের সভাপতিত্বে স্বাধীনতা বিরোধীদের সভা অনুষ্ঠিত হয়
- কুড়িগ্রামে জুলাই সংগঠক জোবায়ের হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ
- এশিয়ান কাপে বাংলাদেশের কঠিন প্রতিপক্ষ
- নতুন ভোটার হচ্ছেন ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার
- আগস্টের শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা
- শক্তিশালী হচ্ছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট, র্যাংকিংয়ে টানা উন্নতি
- বোয়ালমারীতে কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ
- পাংশায় আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
- শীত আসতেই মুখ-হাত-পায়ে চামড়া উঠছে, কী করবেন?
- বেলকুচিতে জনমত জরিপে এগিয়ে বদিউজ্জামানের মোটরসাইকেল
- কমলনগরে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আটক
- হিমেল হাওয়ায় কাবু কুড়িগ্রামের মানুষ
- ‘কোন মানুষ অর্থের কাছে চিকিৎসায় হেরে যাবে না, সবাই বাঁচবে’
- ঝিনাইদহে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ কর্মী নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি
- রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল ৩ মোটরসাইকেল আরোহীর
- প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি, বিএনপি নেতা চাঁদের নামে মামলা
- মা
- প্রজন্মের কাছে এক মুক্তিযোদ্ধার খোলা চিঠি
- পারিবো না
- ঝিনাইদহে বজ্রপাতে মৃত দুই কৃষক পরিবারকে তারেক রহমানের মানবিক সহায়তা প্রদান
- লক্ষ্মীপুরে গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু
- অতিরিক্ত ঠান্ডায় ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা
- লক্ষ্মীপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন
- রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করছে জান্তা
- নৌকার পক্ষে সমর্থন জানানেল এডভোকেট আব্দুল মতিন
- লক্ষ্মীপুরে দোকান ঘর বিক্রির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা
- মহুয়া বনে
- বিজনেস সামিটের পর্দা নামছে আজ