E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘রুপালীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে’

২০১৭ সেপ্টেম্বর ২৭ ১৬:০২:১০
‘রুপালীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে’

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : গত ৮ আগষ্ট সকাল ১১টার দিকে টেলারিং শপ থেকে বাড়ি ফেরার পথে রুপালীকে রাস্তা থেকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে রাজু তার ঘরে ঢোকানোর পর পূর্ণিমা বাহির থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। এরপর পুণিমা স্থানীয় আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সেক্রেটারী রুহুল আমিন, মহিদুল, আয়ুব আলী, আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রবসহ কয়েকজনকে ডেকে আনে। তারা এসে রুপালী ও রাজুকে ঘর থেকে বের করে আনে।

এ সময় রুহুল আমিন রাজুর গালে একটি চড় মেরে কৌশলে তাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন। মহিদুল বোনকে তার জিম্মায় রেখে দেওয়া ও রফিকুল তাকে ভাল পাত্র দেখে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে রান্না বান্নার জন্য মা বুলি দাসীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার এক ঘন্টার মধ্যেই রুপালী আত্মহত্যা করেছে বলে পূর্ণিমা খবর দেয়। বাড়ি ফেরার আগে তিনি রুহুল আমিনকে ঘরের খাটের উপর শুয়ে থাকতে ও রুপালীকে দরজার পাশে ও ঘরের বাইরে পূর্ণিমা মণ্ডলকে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় চলে যান।

রুপালীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তিনি তিনটি মোবাইল ফোন, জামার কয়েকটি ছেঁড়া বোতাম ও একটি প্যান্টের বেল্ট দেখতে পান। এ ছাড়া রুপালীর পা মাটিতে লাগানো ও মাথা ঘরের আড়ার সঙ্গে লেগে ছিল। রুপালীকে গণধর্ষণের পর পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হলেও সাবেক এক ইউপি সদস্য বকুল ও উপপরিদর্শক লিটন বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এক পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ি উপপরিদর্শক লিটনের লেখা রুপালীর আত্মহত্যা সম্পর্কিত একটি কাগজে জোরপূর্বক তার কাছ থেকে সাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। পরে জানতে পারেন যে তার এক মামাসহ দু’জন নিরীহ লোকসহ ১০ জনের নামে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমনকি মৃত্যুর পরপরই পূর্ণিমা মণ্ডলকে উপপরিদর্শক লিটন ধরে নিয়ে গেলেও পরে তাকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ জেলে পাড়ার অরুণ কুমার মন্ডলের ছেলে উত্তম কুমার মণ্ডল মঙ্গলবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে এসব কথা তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়,১৫ বছর আগে সুন্দরবনে মাছ ধরতে যেয়ে বাবা বাঘের কবলে পড়ে প্রাণ হারান। এরপর থেকে মা বুলি দাসী তাকে ও বোন রুপালীকে নিয়ে সরকারি খাস জমিতে অতি কষ্টে বেঁচে আছেন। সম্প্রতি মুন্সিগঞ্জ বাজারে টেইলার্সে কাজ করতে যাওয়ার সময় প্রতিবেশি বিকাশ মণ্ডলের ছেলে রাজু মণ্ডল বিরক্ত করতো রুপালীকে। পলাতক আব্দুর রবসহ অন্য আসামীরা ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে তাদেরকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি ধামকি দিচ্ছে। দেড় মাসের ও বেশি সময় পার হলেও এঘটনায় কোন আসামীকে আটক করেনি পুলিশ। উপরন্তু মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক লিটন আসামীদের সাথে বসে তা নাশতা চক্রে মেতে উঠেন। আসামী ধরার নামে লিটন তার কাছ থেকে তিন হাজার টাকা বিকাশ করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন উত্তম।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রুপালী ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, দু’ নিরাপরাধ ব্যক্তিকে মামলা থেকে অব্যহতি ও উপপরিদর্শক লিটনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উত্তম মণ্ডলের মা বুলি দাসী।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test