E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আগৈলঝাড়ায় হানাদারমুক্ত দিবস পালিত

২০১৭ ডিসেম্বর ২২ ১৫:০৬:২৯
আগৈলঝাড়ায় হানাদারমুক্ত দিবস পালিত

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পনের পর সারা দেশ বিজয় উৎসব পালন করলেও বরিশালের আগৈলঝাড়া হানাদার মুক্ত হয় ২২ ডিসেম্বর।

আগৈলঝাড়া হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে শুক্রবার উপজেলা কেন্দ্রীয় মসজিদে সকল শহীদ মুক্তি যোদ্ধার রুহের মাগফেরাত কামনা, মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দেশ ও জাতির অগ্রগতি কামনায় দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। দোয়া মোনাজাতে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের দ্বায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহম্মেদ রাসেল, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা আওয়ামীলীগ সমন্বয়ক আবু সালেহ লিটনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মুসল্লীরা অংশ গ্রহণ করেন।

সূত্র মতে, বিজয়ের ৬ দিন পর আজকের এই দিনে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা (তৎকালীন গৌরনদী উপজেলা) বিজয় পতাকা উড়েছিল। দীর্ঘ ২৮দিন মুক্তিবাহিনী ও মুজিব বাহিনীর যৌথ আক্রমনে বাধ্য হয়ে এই দিন শতাধিক পাকসেনা গৌরনদী সরকারী কলেজে মাঠে মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। আর এই আত্মসমর্পনের মদ্য দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বশেষ হানাদারমুক্ত হয় আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী।

স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪৬ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানে এখনও সরকারী উদ্যোগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত হয়নি কোন স্মৃতিসৌধ। আজও সরকারীভাবে চিহ্নিত হয়নি আগৈলঝাড়া উপজেলার ৬টি ও গৌরনদী উপজেলার ৪টি বধ্যভূমি।

হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা এসকল এলাকায় কয়েক হাজার লোক নির্বিচারে হত্যা করে। পাকহানাদার বাহিনীর হাতে ইজ্জত হারাতে হয়েছিল ৩ শতাধিক মা-বোনের।

শহীদ মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, এ্যাডভোকেট আ. করিম সরদার এমএলএ’র উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠনের মাধ্যমে গঠন করা হয় মুক্তি বাহিনী। ওই দলের প্রধান ছিলেন মরহুম মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান তালুকদার। তার সহযোগী ছিলেন মরহুম মুক্তিযোদ্ধা নুর মোহম্মদ গোমস্তা।

কোটালীপাড়ার হেমায়েত উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠন করা হয় পৃথক বাহিনী। যা পরবর্তিতে হেমায়েত বাহিনী নামে পরিচিতি লাভ করে। হেমায়েত বাহিনী আগৈলঝাড়া-রামশীল-পয়সারহাট-সিকিরবাজার এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধ করেন। সর্বশেষ মুজিব বাহিনীর একটি দল ভারত থেকে ট্রেনিং শেষে আগৈলঝাড়ায় এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ওই দলের নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক চিফ হুইপ ও বর্তমান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ।

এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেন রকিব সেরনিয়াবাত, ফজলুর রহমান হাওলাদার ও মেজর শাহ আলম তালুকদার। বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ১৬ ডিসেম্বরের পূর্বেই আত্মসমর্পণ করলেও সরকারি গৌরনদী কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পে অবস্থানরত পাক সেনারা ১৯৭১ সালের ২২ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনীর মেজর ডিসি দাসের মাধ্যমে মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলো। সেই থেকেই ২২ ডিসেম্বর আগৈলঝাড়া ‘মুক্ত দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

(টিবি/এসপি/ডিসেম্বর ২২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test