E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শেবামেকের অধিকাংশ চিকিৎসক রোগী দেখেন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ১২ ২২:১৩:০০
শেবামেকের অধিকাংশ চিকিৎসক রোগী দেখেন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : অফিস চলাকালীন সময় দায়িত্বে অবহেলা করে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবামেক) হাসপাতালের অধিকাংশ চিকিৎসক অধিক মুনাফার লোভে রোগী দেখেন প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। বিশেষকরে মাইক্রোবায়ালজি, প্যাথলজি ও বায়োকেমিষ্টের অধিকাংশ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া জেলার প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধিকাংশ চিকিৎসকের বিরুদ্ধেও এ অভিযোগ রয়েছে।

সূত্রমতে, শেবাচিম কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানা সত্বেও কখনওই কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ওইসব চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার বিষয়টি দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত চিকিৎসা কেন্দ্র শেরে-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীসহ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই বিভাগগুলোর চিকিৎসকদের সকাল থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার করার কথা থাকলেও তারা দায়িত্বে চরম অবহেলা করে আসছেন। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যেই অধিকাংশ চিকিৎসকেরা কলেজ ফাঁকি দিয়ে চুক্তিবদ্ধ নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ করেন। অথচ ওইসময়েই চিকিৎসকদের কলেজে শিক্ষাদান এবং আউট ডোর থেকে যাওয়া পরীক্ষা নিরীক্ষা করার কথা রয়েছে। আর এজন্য চিকিৎসকদের সরকারীভাবে বায়োকেমিষ্ট ও মাইক্রোবায়লজি, প্যাথলজিসহ অন্যান্য বিভাগে রিএজেন্ট এবং পরীক্ষা নিরীক্ষার সরঞ্জামাদি বরাদ্দ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, চিকিৎসকরা কলেজে পরীক্ষা নিরীক্ষা না করে উল্টো যন্ত্রপাতিগুলোকে অকেজো করে রেখেছেন।

সূত্রে আরও জানা গেছে, মাইক্রোবায়ালজির বিভাগীয় প্রধান ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম অফিস চলাকালীন সময় কাজ করেন প্রাইম ও কনিকা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে, মাইক্রোবায়লজির সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ টিএম জাহাঙ্গীর মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক, মাইক্রোবায়লজির লেকচারার ডাঃ আকবর কবির রয়েল ডায়াগনস্টিক, প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ ফয়জুল বাশার ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, সিনিয়র ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিষ্ট ডাঃ আব্দুল মান্নান কনিকা ও ডিজিটাল ম্যাডি এইড ডায়াগনিষ্টক সেন্টারে রোগী দেখেন।

সূত্রগুলো আরও জানিয়েছেন, এসব চিকিৎসক প্রতিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে রোগী প্রতি পরীক্ষা নিরীক্ষা বাবদ শতকরা ৪০ থেকে ৫০ ভাগ আদায় করে থাকেন। লাভের পরিমান খুব বেশী হওয়ায় জেনে শুনেই ওইসব চিকিৎসক এ অনিয়মের পথকেই বেঁছে নিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, শেরে-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা সত্যিই খুবই খারাপ। ওইসব চিকিৎসকেরা যেসব অনিয়ম করে আসছে সত্যিই তা ভাবা যায়না। তদন্তপূর্বক এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য একাধিক কর্মকর্তারা হাসপাতালের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে বরিশালের সিভিল সার্জন মোঃ মনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি দেখাশুনার দায়িত্ব শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালকের। এখানে আমার কিছুই করার নেই।

শেবামেকেরপরিচালক ডাঃ মোঃ আবুল ফজল বলেন, বিষয়টি আমার জানাছিলোনা। এ ব্যাপারে খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(টিবি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test