E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরিশাল শেখ রাসেল পুনর্বাসন কেন্দ্রের শিশুদের বিক্ষোভ

২০১৯ মার্চ ০৫ ১৭:৪১:২৪
বরিশাল শেখ রাসেল পুনর্বাসন কেন্দ্রের শিশুদের বিক্ষোভ

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : নগরীর রূপতলীস্থ শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের মাঠ দখল করে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের অফিস কমপ্লেক্স নির্মান চেস্টার প্রতিবাদে দিনভর বিক্ষোভ করেছে সুবিধা বঞ্চিত, নিপীড়িত শিশু-কিশোররা। 

একমাত্র খেলার মাঠটি রক্ষার করার জন্য বিক্ষোভের সময় অঝোঁড়ে কেঁদেছে এসব শিশু-কিশোররা। কেন্দ্রের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে ব্যাট-বল, ফুটবলসহ বিভিন্ন ক্রীড়া সামগ্রীসহ বিক্ষোভ করে তারা।

সূত্রমতে, সোমবার দুপুরে জেলা সমাজ সেবা কমপ্লেক্স নির্মানের জন্য আনা নির্মান সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার দাবিতে ও খেলার মাঠ রক্ষার জন্য বিক্ষুব্ধরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে। খবর পেয়ে সমাজ সেবা বিভাগের উপ-পরিচালক শাহাপাড় পারভীন ঘটনাস্থলে গিয়ে খেলার মাঠে অফিস কমপ্লেক্স নির্মান না করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর শিশু-কিশোররা বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে।

কেন্দ্রের নিবাসী নগরীর এ ওয়াহেদ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, কেন্দ্রের মধ্যে এতোবড় অফিস ভবন নির্মান করা হলে আমাদের খেলাধুলাসহ সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে। নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকতে হবে আমাদের। পুনর্বাসন কেন্দ্রের নিবাসী ও এ. ওয়াহেদ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী নিকিতা আক্তার বলে, ইতোমধ্যে আমাদের একটি ভাড়া ভবনে থাকতে হয়েছে। সেখানে স্কুলে যাওয়া ছাড়াও বাকি সময়টাতে বন্ধী জীবন কাটাতে হয়েছে। সেখান থেকে আমাদের এই পুনর্বাসন কেন্দ্রে স্থানান্তর করায় এখানে আমরা খেলার মাঠ পেয়েছি কিন্তু এখন সেই মাঠটিতেও ভবন নির্মানের পায়তারা করা হচ্ছে। আমরা আমাদের একমাত্র খেলার মাঠটিতে কোন ভবন নির্মান করতে দেবনা। এজন্য তারা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষন ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের উপ-প্রকল্প পরিচালক শুভংকর ভট্টাচার্য জানান, ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা “শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষন ও পুনর্বাসন” প্রকল্পের উদ্বোধণ করেন। ২০১৬ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ খাতের আওতায় সরকারী কর্মসূচীর আদলে শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষন ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের কার্যক্রম চলছে। বরিশালে এই কার্যক্রমের আওতায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯৪ জন সুবিধা বঞ্চিত ও আইনী সাহায্যপ্রার্থীসহ ১৪ কেটাগরির শিশু-কিশোরী বসবাস করছে। এর আগে একটি ভাড়া বাড়িতে তাদের কার্যক্রম চলতো। তারা সেখানে একপ্রকার বন্দি জীবন কাটাতো। ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর মাসে রূপাতলীতে সমাজ সেবা বিভাগের অব্যবহৃত স্থাপনা ও জমিতে শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষন ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। সেখানে খেলার মাঠসহ সু-পরিসর জায়গা রয়েছে। তবে এখানে বালিকাদের (মেয়ে) একটি ডরমেটরির পাঁচটি কক্ষে থাকার ব্যবস্থা হলেও ৯২ জন বালক (ছেলে) শিশু-কিশোরদের এখনও ভাড়া ভবনেই থাকতে হচ্ছে।

সম্প্রতি ওইস্থানে জেলা সমাজসেবা বিভাগের বহুতল অফিস কমপ্লেক্স নির্মানের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। সোমবার দুপুরে ঠিকাদারের লোকজন মালামালসহ কমপ্লেক্স নির্মান করতে আসলে শিশু-কিশোরীরা তাদের খেলার মাঠ এবং খোলা মেলা জায়গা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকায় কেন্দ্রের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে শেখ রাসেলের ছবি এবং বিভিন্ন দাবী সম্বলিত প্লাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় শিশুদের অঝোড়ে কাঁদতে দেখা যায়।

মঙ্গলবার দুপুরে সমাজ সেবা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাহাপাড় পারভীন বলেন, রূপাতলীতে সমাজ সেবা বিভাগের জায়গায় জেলা অফিস কমপ্লেক্স নির্মানের টেন্ডার হয়েছে। ভবনের প্লানসহ সাইট প্লান পাশ হয়েছে। ভবন নির্মানের জন্য ঠিকাদার মালপত্র এনেছে। এতে শিশুরা তাদের খেলার মাঠ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশংকা করছে। তিনি বলেন, শিশু-কিশোরীরা বিক্ষোভ করছিলো।

খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বুঝিয়ে শান্ত করেছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে যাব। এনিয়ে আমরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিব। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই শিশুদের দাবী এবং কমপ্লেক্স নির্মানের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

(টিবি/এসপি/মার্চ ০৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test