E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফারুকী হত্যাকাণ্ডে 'রহস্যময়ী' নারী আটক

২০১৪ আগস্ট ৩০ ১২:১৩:৫৪
ফারুকী হত্যাকাণ্ডে 'রহস্যময়ী' নারী আটক

স্টাফ রিপোর্টার : সুপ্রীম কোর্ট জামে মসজিদের ইমাম এবং বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ইসলামিক অনুষ্ঠানের উপস্থাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম ফারুকী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ‘রহস্যময়ী’ নারীকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ থেকে আটক করা হয়েছে।  তার নাম মাহমুদা আক্তার (৩০)।

ঢাকা মেট্রোপলিন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও জোনের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে পরিবারের অভিযোগ ছিল। তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকায় আনা হচ্ছে।’

মাহমুদা আক্তারকে আটকের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানান, তাকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের একটি বাসা থেকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে তাকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, তাকে আটকের বিষয়ে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় কথা হয়েছে। তাকে ঢাকা পাঠানো হবে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার নূরুল ইসলাম ফারুকীর ছেলে ফয়সাল ফারুকী এবং তার এক অনুসারি আব্দুর রহমান অভিযোগ করেছিলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের পূর্বে ওই নারী কাজের বুয়া সেজে বাসায় প্রবেশ করে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে। পরে সে ওই বাসা থেকে একটি বোরকা পরে বেরিয়ে যায়। তার ক্লিয়ারেন্স পেয়েই নির্ভয়ে বাসায় প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা। এরপর তারা নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

ফারুকীর ছেলে ফয়সাল আরও জানিয়েছিলেন, ‘বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পূর্ব রাজাবাজারের নূরুল ইসলাম ফারুকীর ১৭৪ নম্বর ভাড়া বাসার দ্বিতীয় তলায় কলিং বেল বাজে। বাসার গৃহপরিচারিকা শরীফা দরজা খুলতেই দেখতে পায় নোংরা কাপড় পরা অবস্থায় ২৫ থেকে ৩০ বছরের এক নারী। দরজা খুলতেই ওই নারী ‘হুজুরে কই, হুজুরে কই’ বলতে বলতে বাসার ভেতরে ঢোকে। ফারুকীর নিয়মিত সাক্ষাতের সামনের রুমে না বসে ওই নারী বাসার ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর ভেতরের বেডরুম (শয়ন কক্ষ) থেকে ফারুকী বের হয়ে আসেন। তাকে পেয়েই ওই অজ্ঞাত নারী বলতে থাকেন ‘আমার কেউ নেই, আমাকে একটা কাজ দিন।’ ফারুকী তাকে শান্ত হতে বলেন। এর মধ্যে ফারুকীর স্ত্রী এবং বাসার অন্যান্য লোকজনের সঙ্গেও তার কুশল বিনিময় হয়। এসময় বাসায় ফারুকীর এক ছেলে এবং তার অনুসারী আরো দুই নারী বাসায় ছিলেন। ওই নারী একে একে বাসার সব কয়টি কক্ষে প্রবেশ করে।

ফারুকীর অনুসারী আব্দুর রহমান বলেন, ‘ওই নারী বাসায় আশার আগে হুজুরের মোবাইল ফোনেও ফোন দিয়েছিল। বাসায় এসে সে প্রথমে বলে তার বাড়ি সাতক্ষীরা, আবার কিছুক্ষণ পর সে জানায় তার বাড়ি সুন্দরবন এলাকায়। এসময় বাসায় অবস্থানরত সবার সঙ্গেই তার কথা হয়। কিছুক্ষণ বাসায় থাকার পরই ওই নারী হুজুরকে (ফারুকী) জানায় সে গাউছিয়া যাবে। আবার একবার জানিয়েছে গুলিস্তান যাবে। কিন্তু কিভাবে যাবে সে চেনে না। এরপর হুজুর তার ভাগ্নির ছেলে মেহেদী হাসানকে একটি রিকশা করে দিতে বলেন। এসময় ওই নারী একটি বোরকা পরে বাসা থেকে বের হয়। মেহেদী তাকে নিয়ে গ্রিন রোডে একটি রিকশায় তুলে দিলে ওই নারী তাকে জানায় এখন সে একা একাই যেতে পারবে। এই বলে সে চলে যায়।’

তিনি আরো বলেন, ‘ওই নারী বাসায় এসে বিভিন্ন তথ্য দিয়েছে। সে সাড়ে ৪টায় বাসায় প্রবেশ করে। বের হয়ে যায় ৬টার দিকে। বাসায় প্রবেশ করে সে কান্নাকাটিও করে। বাসার ভেতরে সাধারণত কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। কিন্তু ওই নারী দ্রুত বাসার ভেতরে প্রবেশ করে।’

ফারুকীর অনুসারী আব্দুর রহমান বলেন, ‘ওই নারীর বাসায় আসা এবং আবার চলে যাওয়া ছিল উদ্দেশ্যমূলক। এখন তা আমরা বুঝতে পারছি।’

(ওএস/এইচআর/আগস্ট ৩০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test