E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সালথায় প্রেমিকের উপর অভিমান করে কলেজ ছাত্রীর আত্মহত্যা

২০২২ অক্টোবর ২৮ ১৩:৩৮:১৯
সালথায় প্রেমিকের উপর অভিমান করে কলেজ ছাত্রীর আত্মহত্যা

আবু নাসের হুসাইন, সালথা : ফরিদপুরের সালথায় প্রেমিকের উপর অভিমান করে রানী আক্তার মীম (১৭) নামে এক কলেজ ছাত্রী আত্মহত্যা করার খবর পাওয়া গেছে। নিহত মীম, উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের দিমজুর আফছার মাতুব্বরের মেয়ে। তিনি সালথা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) রাত ৯ টার দিকে মোবাইল ফোনে প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়া করে মিম ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তার পরিবারের দাবি। তবে প্রেমিক ছেলেটির নাম ও ঠিকানা জানাতে পারেনি কেউ।

জানা যায়, দিনমজুর বাবার স্বপ্ন ছিল একমাত্র মেয়ে রানী আক্তার মিমকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে ভাল একটা চাকরীতে যোগ দিবে। আর মায়ের স্বপ্ন ছিল যদি চাকরী না পায় তাহলে অন্তত ভাল একটা ছেলের (পাত্র) হাতে তুলে দিবে তাকে। তাদের স্বপ্ন অনুযায়ী মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মেয়েকে মানুষ করার চেষ্টা চালিয়ে যান মা-বাবা। তবে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণের আগেই প্রেমের ফাঁদে পড়ে আত্মহত্যা করে মিম। এতে মুহুর্তেই মা-বাবার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়।

মিমের বাবা আফছার মাতুব্বর বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে আমি ও আমার স্ত্রী বাড়ির পাশে একটি মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে যাই। মিলাদে যাওয়ার পর একটা ছেলে আমাকে ফোন করে বলে, আপনি তারাতারি বাড়িতে যান। বাড়ি গিয়ে দেখেন আপনার মেয়ের কি অবস্থা তা দেখেন। আমি স্ত্রীকে নিয়ে দ্রুত বাড়িতে এসে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। অনেক ডাকাডাকীর পরেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে দেখি আমার মেয়ে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। এরপর থেকে ওই ছেলের ফোন বন্ধ। তবে তার ছবি রয়েছে আমার মেয়ের মোবাইলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নেওয়ার সময় মেয়ের ফোনও নিয়ে গেছে। আমাদের ধারনা ওই ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের সম্পর্ক ছিল।

তিনি আরো বলেন, ঘটনার আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের ঝগড়া হয়। পরে অভিমান করে আমার একমাত্র মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আমি ওই ছেলের সন্ধান চাই। পাশিপাশি ওর বিচার চাই। আমি গরীব মানুষ। তারপরেও মেয়েটা নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। ওকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিলাম।

মিমের মা মোছা: নাজমা বেগম বলেন, আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। এক ছেলে বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে। আরেক ছেলে ছোট। আর একমাত্র মেয়ে মিমকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল আমাদের। ওকে উচ্চশিক্ষা দিয়ে ভাল একটা চাকরী দিতে না পারলেও ভাল একটা চাকরীজীবী ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। সেই স্বপ্ন আজ মাটির নিচে চলে গেল।

মিমের চাচা উকিল মাতুব্বর বলেন, মিমের সঙ্গে একটা ছেলে প্রেম সম্পর্ক ছিল। ধারনা করছি- ওই ছেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে রাগারাগি করে আত্মহত্যা করেছে মিম।

গট্টি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলু বলেন, আমি স্থানীয়দের কাছ থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি, তাতে সম্ভবত মেয়েটা তার প্রেমিকের সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদিক বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিমের বাবা-মা একটি মিলাদ মাহফিলে যান। বাড়িতে তাদের মেয়ে সালথা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মিম একা ছিল। মিমের সঙ্গে একটা ছেলের সম্পর্ক রয়েছে। প্রেম ঘঠিত বিষয় নিয়েই মিম ঘরের ফ্যানের সাথে শরীরের ওঁড়না গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে শুনেছি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মিমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এএনএইচ/এএস/অক্টোবর ২৮, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test