E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শীতের শুরুতেই খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত রাজবাড়ীর গাছিরা  

২০২২ নভেম্বর ২৫ ১৭:০৫:২২
শীতের শুরুতেই খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত রাজবাড়ীর গাছিরা  

মিঠুন গোস্বামী, রাজবাড়ী : মানসম্মত খেজুরের গুড়, পাটালি জন্য বিখ্যাত রাজবাড়ী জেলায় দিন দিন খেজুর গাছের সংখ্যা কমতে শুরু করছে। তবে গুড় ও পাটালির দাম ভালো হওয়ায় শীত শুরু হতে না হতে গাছিরা খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছে।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় গাছিরা চলছে গাছের কান্ড কাটা ও নলি বসানোর কাজে ব্যস্ত। তারা জমির আইলে ও রাস্তার পাশে লাগানো খেজুর গাছের মাথার অংশ থেকে ডাল কেটে পরিষ্কার করছেন। হাতে দা, কোমরে রশি বেঁধে গাছিরা কাজ করছেন। এরই মধ্যে কয়েকজন গাছে রস আহরণের জন্য বাঁশের তৈরি নলি বসাতে শুরু করেছেন। ক’দিন পর রস নামাবেন গাছিরা।

জানা গেছে, বর্তমানে খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হচ্ছে, এক সপ্তাহ পরে আবার হালকা চেঁছে বাঁশের তৈরি নল লাগানো হবে। পরে সেখান থেকে রস সংগ্রহ করা হয়।

কালুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের পাইকারা মোড়ের গাছি ওয়াজেদ আলী শেখ বলেন, প্রথমে খেজুরগাছের মাথার অংশকে ভালো করে কেটে পরিষ্কার করা হয়। এরপর পরিষ্কার সাদা অংশ কেটে রস সংগ্রহ করা হয়। অত্যান্ত ঝুঁকি নিয়েই আমরা কোমরে রশি বেঁধে গাছে ঝুলে রস সংগ্রহের কাজ করি।আমি দীর্ঘ ৩০ বছরের অধিক সময় ধরে খেজুরের রস সংগ্রহ করে গুড় ও পাটালি তৈরি করি। মাঝে কয়েক বছর বাদ দিলেও গত দুই বছর যাবত আবার এই রস সংগ্রহ করে গুড় ও পাটালি তৈরি করি। আগের থেকে এখন ভালো দাম পাওয়ায় কষ্ট হলেও এই কাজ করি।

বালিয়াকান্দি উপজেলা নারুয়া ইউনিয়নের কি কমলা গ্রামের গাছি রশিদ মন্ডল বলেন, শীত শুরু হয়ে গেছে। এ জন্যে আমরা এখন থেকেই গাছ প্রস্তুত করছি। আগেভাগে চাঁচ দিলে শীতের শুরুতেই রস নেমে যাবে। আমি দীর্ঘ ৩০ থেকে ৪০ বছর যাবত এই কাজ করি। আমার তৈরি খেজুরের গুড় ও পাটালির যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। শীতের সময় আসলেই আমার বাড়িতে ভিড় করে গুড় ও পাঠালি কেনার জন্য।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েকজন গাছি জানান, দিন দিন খেজুর গাছের সংখ্যা কমে আসলেও যে কয়েকটি গাছ আছে সেগুলো থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ সময় তারা বলেন গাছের ওপরিভাগের নরম অংশ চাঁচ বা দা দিয়ে কেটে রস নামানো হয়। একবার গাছে চাঁচ দিলে দু-তিন দিন রস পাওয়া যায়। সাধারণত খেজুরগাছ পূর্ব ও পশ্চিম দিকে কাটা হয়, যাতে সূর্যের আলো সরাসরি ওই কাটা অংশে পড়তে পারে।

বালিয়াকান্দির বালিয়াকান্দি উপজেলার জয়নাল আবেদিন বলেন, আগের মতো খেজুরগাছ এখন আর দেখা যায় না। চাষিরা এখন আর জমিতে আলাদা করে খেজুর গাছের চাষ করেন না। শুধু রাস্তার পাশে কিংবা জমির আইলে কম-বেশি খেজুরগাছ দেখা যায়। গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এ ঐতিহ্য অনেকটায় হারিয়ে যেতে বসেছে।

(এমজি/এসপি/নভেম্বর ২৫, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test