E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ডিএনএ টেষ্টে ধর্ষণ প্রমাণিত, গ্যাঁড়াকলে চেয়ারম্যান!

২০২২ ডিসেম্বর ০৭ ১৭:০৪:৫৯
ডিএনএ টেষ্টে ধর্ষণ প্রমাণিত, গ্যাঁড়াকলে চেয়ারম্যান!

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিচার প্রার্থী নারীকে মাদক সেবন করিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ডিএনএ টেষ্ট পজিটিভ হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক হরিদাশ রায় আদালতে চার্জসিট দাখিল করেছেন।

মামলা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের গত ১৫ এপ্রিল ভুক্তভোগী ওই নারী ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদের কাছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে বিচার চাইতে যায়। ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ফরিদ চেয়ারম্যানের গ্রামের বাড়ি হরিশংকরপুর ইউনিয়নের নরহরিদ্রা গ্রামে পৌঁছালে ফরিদ তাকে বাড়ির ভেতর নিয়ে একটি নির্জন ঘরে ডেকে নিয়ে সম্পর্কে তার ভাগ্নে হুদাবাকড়ি গ্রামের ইউনুস মুন্সির ছেলে নজরুলকে দিয়ে ইয়াবা সেবন করায়। এরপর তাকে ধর্ষন করে। ধর্ষণের ফলে জ্ঞান হারান ভিকটিম। পরদিন সকাল ১৬ এপ্রিল ধর্ষিতা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন এবং মামলা করে জবানবন্দি পেশ করেন।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, আমি সেদিন ভয়ে কিছু বলতে পারিনি। আমাকে মাদক সেবন করিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে ফরিদ। মামলা দায়েরের পর পুলিশ দুই নং আসামী নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। আসামী নজরুল নিজেকে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়ে ধর্ষনকান্ডের সবিস্তার বর্ণনা করেন।

ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ সেচ্ছায় আদালতে হাজির হলে বাদী বিবাদীর সম্মতিতে তদন্ত কর্মকর্তা বিজ্ঞ আদালতের কাছে তাদের ডিএনএ টেষ্টের আবেদন করেন। আদালতের অনুমতিতে বাদিনীর জব্দকৃত আলামত ও ভ্যাজাইনাল সোয়াবের ডিএনএর সাথে আসামীদের ডিএনএর মিল আছে কিনা তা পরীক্ষার জন্য সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়।

পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ফরেনসিক বিভাগের ডেপুটি চিফ ডিএনএ এনালিষ্ট আহম্মাদ ফেরদৌস গত ৯ সেপ্টম্বর ঝিনাইদহের আমলী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ডিএনএ এনালিষ্ট রিপোর্ট প্রেরণ করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৬ অক্টোবর ডিএনএ রিপোর্ট রিসিভ করেন।

ডিএনএ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, “কাপড়ের অপর একটি কর্তিত অংশ হতে একাধিক মানুষের মিশ্র ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া যায়। সেখানে খোন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ ও অজ্ঞাত একজন পুরুষের ডিএনএ উপস্থিত”।

পুলিশী রিপোর্টে বলা হয়েছে অজ্ঞাত পুরুষের যে ডিএনএর কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে ভিকটিমের স্বামী মহসিন আহম্মেদের। চার্জসিটে উল্লেখ করা হয়, ডাক্তারী পরীক্ষা, আসামীর জবানবন্দি, ডিএনএ এনালাইসিস রিপোর্ট ও ঘটনার পারিপার্শ্বকতায় এজাহার নামীও আসামী খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ ও নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০(সংশোধনী/০৩) এর ৯(৩) ধারায় প্রাথমিক ভাবে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে গত ৩১ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করেন। যার অভিযোগ নং ৪২৫।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক হরিদাশ রায় ডিএনএ টেষ্টে ধর্ষনের আলামত পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে ফোন করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

(একে/এএস/ডিসেম্বর ০৭, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test