E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

২০২২ ডিসেম্বর ১৪ ১৭:০৪:৫৫
কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

শেখ ইমন, শৈলকুপা : ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জমির উপরিভাগের মাটি (টপ সয়েল) কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। কৃষকদের নানা কৌশল-প্রলোভনে ফেলে ব্যবসায়ীরা টপ সয়েল কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। টপ সয়েল কেটে নেওয়ায় কৃষিজমি তার উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ৬ নম্বর সারুটিয়া ইউনিয়নের নবগ্রাম, ৯ নম্বর মনোহরপুর ইউনিয়নের দামুকদিয়া, মাধবপুর; উমেদপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর, পৌর এলাকার সাতগাছি গ্রাম, আবাইপুর ইউনিয়নের কৃপালপুর গ্রাম, হাকিমপুর ইউনিয়নের বরিয়া গ্রাম মাঠ, কাচেরকোল ইউনিয়নের হামদামপুর এলাকার জিকে খালের পাড় ও কুমার নদীর চরসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষিজমির মাটি কাটা হচ্ছে। এসব এলাকায় সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে ট্রাক্টর আর তাতে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। এসব মাটির বেশির ভাগই যাচ্ছে ইটভাটায়। কেউ কেউ কৃষিজমিতে পুকুর কাটছেন।

মাটি ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম বলেন, কৃষকের সঙ্গে চুক্তি করেই তাঁরা কৃষিজমির মাটি নিয়ে থাকেন। কৃষিজমির মাটি কাটতে কোনো বিধিনিষেধ নেই। শুধু পুকুর খনন করলে প্রশাসনকে একটু জানালেই চলে।

নবগ্রাম মাঠের রেজাউল ইসলাম নামের এক চাষি বলেন, তিনি তাঁর উঁচু সবজিখেতের মাটি কেটে ধানের জমি বানিয়েছেন। বিনিময়ে মাটি ব্যবসায়ীরা তাঁকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এভাবে তাঁদের মাঠের অনেক কৃষক সবজিখেতকে ধানের খেত বানিয়েছেন। অনেক কৃষক প্রতি ট্রাক্টর মাটি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।

একই গ্রামের চাষি সমসের আলী জানান, অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকদের জমির টপ সয়েল কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। যে কারণে সবজিখেত নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া পাশের জমির মাটি কেটে নিচু করলে বাধ্য হয়ে উঁচু জমি ভেঙে যাওয়ার ভয়ে পাশের জমিও নিচু করতে হয়। এভাবে চলতে থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে সবজি চাষ উঠে যাবে।

দামুকদিয়া মাঠের কৃষক মন্টু বিশ্বাস বলেন, তিনি তাঁর জমি সমান করার জন্য মাটি কাটার অনুমতি দিয়েছেন। মাটি ব্যবসায়ীরা মেশিন দিয়ে কেটে মাটি নিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান বলেন, কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি যাকে টপ সয়েল বলে। এ মাটি কাটলে জমি তার উর্বরতা শক্তি হারায়। কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি এবং কৃষিজমিতে পুকুর খননের ওপর বিধিনিষেধ থাকলেও ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। তিনি এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।

অবাধে কৃষিজমির মাটি কাটা নিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বনি আমিন বলেন, উপরিভাগের মাটি কেটে কোনো অবস্থাতেই কৃষিজমি নষ্ট করা যাবে না। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এসআই/এসপি/ডিসেম্বর ১৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test