E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

ভারতের কেদারনাথ ও মায়াপুর মন্দিরের আদলে তৈরি পূজামণ্ডপ নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের

২০২৩ অক্টোবর ২২ ১৯:১৬:১১
ভারতের কেদারনাথ ও মায়াপুর মন্দিরের আদলে তৈরি পূজামণ্ডপ নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের

মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : ২০ অক্টোবর ষষ্টী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া হিন্দু ধর্মালম্বিদের বৃহত্তম শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ এখন দেশজুড়ে। মৌলভীবাজার জেলা জুড়েও চলছে মন্দিরে মন্দিরে পূজার নানা আনুষ্টানিকতা। রবিবার ছিলো মহাষ্টমী। এদিন বেলা বাড়ার সাথে সাথে শহরের প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে বাড়তে থাকে পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীর আগমণ। তবে জেলা সদরের ১১৭টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ছে শহরের ত্রিনয়ণী ও মহেশ্বরী পূজা মণ্ডপ।

ভারতের উত্তরাখণ্ডে অবস্থিত হিন্দু ধর্মালম্বীদের প্রধান তীর্থস্থান কেদারনাথ মন্দির ও পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া অঞ্চলে অবস্থিত মায়াপুর মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে মৌলভীবাজার শহরের দুটি মণ্ডপ। কেদারনাথ মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে শহরের গীর্জাপাড়ার কাশিনাথ স্কুল এন্ড কলেজ মাঠের মহেশ্বরী দুর্গা মণ্ডপ ও সৈয়ারপুর এলাকায় ত্রিনয়ণী শিববাড়ী মণ্ডপটি তৈরি করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মায়াপুর মন্দিরের আদলে। মার্গিন কাপড়, সাদা ককসিট আর নানা রঙের শৈল্পিক মিশ্রণে প্রস্তুত মণ্ডপ দুটি তৈরিও বেশ ব্যায়বহুল।

মÐপ দুটির কর্তৃপক্ষ জানান, তারা প্রতি বছরই দুর্গোৎসবকে প্রাণবন্ত করতে নতুনত্বের কোন কমতি রাখেন না। সনাতন ধর্মের মূল ঐতিহ্যকে ধারণ করে একেক বছর একেক ডিজাইনে প্রস্তুত করা হয় এই দুটি মণ্ডপ। ফলে দর্শনার্থীদের নজর আর ব্যাপক উপস্থিতি থাকে এ-দুটি মণ্ডপ ঘিরেই।

রবিবার (২৩ অক্টোবর) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মৌলভীবাজার শহরের গীর্জাপাড়ার মহেশ্বরী মণ্ডপে পূজারী ও দর্শনার্থীর ঢল। মণ্ডপের বাহিরে রয়েছে নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা। পাশেই মহেশ্বরী পূজা উদযাপন পরিষদের অস্থায়ী স্টল। সেখানে দ্বায়িত্বরত এক সদস্য জানান, এবছর দর্শনার্থীদের নজর কাড়তে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে ভিন্ন আঙ্গিকে। এককথায় মণ্ডপের ভিতর ও বাহিরে প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে শিল্পের সর্বোচ্চ ছোঁয়া।

মহেশ্বরী পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি সুরজিত কিশোর দাস চৌধুরী বলেন, কুসংস্কার, অপসংস্কৃতি, বিশ্বাসঘাতকতা ও হানাহানির সমাজ থেকে আমরা উড়িয়েছি মহেশ্বরীর পূজা মণ্ডপের পতাকা। আমরা মনে করি ’ধর্ম যারযার উৎসব সবার’। এবার আমাদের মহেশ্বরীতে পঞ্চম আয়োজন। প্রতিবারই আমরা চেষ্টা করি নতুন থিম ভিত্তিক পূজা করার জন্য। সেকারণেই কেদারনাথের ১২শ বছরের পুরনো মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে মহেশ্বরী মণ্ডপ। যেকারণে শুধু কেদারণাথ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করায় সিলেটের বিভিন্ন এলাকা থেকে দেখার জন্য দর্শনার্থীরা ব্যাপকবভাবে আসছেন।

একই চিত্র সৈয়ারপুর এলাকার ত্রিনয়ণী শিববাড়ী মণ্ডপেও। ওই মণ্ডপটি তৈরি করা হয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী মায়াপুর মন্দিরের আদলে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় মণ্ডপের বাহিরে দূরদূরান্তের অসংখ্য দর্শনার্থীর উপচেপড়া ঢল। মণ্ডপটিতে নজরকাড়া শৈল্পিক কারুকাজের পাশাপাশি রাতে উচ্চমাত্রার লাইটিংয়ের চোখধাঁধানো আলোয় পূজায় আসা দর্শনার্থীদের বিমোহিত করবে।

ত্রিণয়নী শিববাড়ী পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রীকান্ত সূত্রধর, জানান, আমরা প্রতি বছর মণ্ডপ তৈরিতে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করি। ফলে এবছরও দর্শনার্থীদের ব্যাপক আগমন আর চাহিদার আলোকে মায়াপুর মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে।

এদিকে এবারের দুর্গোৎসবের আয়োজনে বড়দের পাশাপাশি ছোট্ট শিশুদেরও নতুন জামা-কাপড় আর সাজগোজ করে বাবা-মা’র সঙ্গে ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে। তাদের চাওয়া এমন দিন যেন আসে বারে বারে।

বাবার সাথে ঘুরতে আসা শিশু সত্যাশ্রী দাস চৌধুরী জানায়, দুর্গোৎসবে আমার সবচেয়ে প্রিয় মহেশ্বরী। এখানে অঞ্জলী দিতে অনেক ভাল লাগে। এখানের প্রকৃতিও অনেক সুন্দর।

(একে/এএস/অক্টোবর ২২, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test