E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পলাশবাড়ী রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টরের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

২০২৩ নভেম্বর ২৬ ১৭:৫৮:৫৪
পলাশবাড়ী রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টরের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

রবিউল ইসলাম, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে শুরু হয়েছে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (টিআইডিপি-৪) এর আওতায় ২০২৩-২৪  অর্থবছরে ইউআরসি/টিআরসিতে ৩ দিন ব্যাপী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য শিক্ষাক্রম বিস্তরণ প্রশিক্ষণ। উক্ত প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষকদের (শিক্ষক) জন্য বরাদ্দকৃত বাজেট থেকে মোটা অংকের টাকা বাঁচিয়ে নিম্নমানের প্রশিক্ষণ উপকরণ প্রদানসহ প্রশিক্ষণার্থীদের যাতাযাত ভাতা কম দেয়াসহ নানা অভিযোগ উঠেছে পলাশবাড়ী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর রবিউল ইসলাম এঁর বিরুদ্ধে। অনেকেই বলছেন এই কাজে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন একই অফিসে প্রায় ১ যুগ থেকে কর্মরত সহকারী ইন্সট্রাক্টর সোহেল মিয়া। 

আরডিপিপি-এ বাজেটে দেখা যায়, প্রতিটি প্রশিক্ষণে দুই জন করে ট্রেইনার থাকবে। প্রতি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য তথ্যপত্র, একটি কলম, একটি প্যাড, নেম কার্ড এর জন্য বরাদ্দ ৫'শ টাকা ও প্রতি প্রশিক্ষণার্থী একটি করে ব্যাগ বাবদ ৫'শ টাকা বরাদ্দ। মোট ৩২টি ব্যাচে প্রশিক্ষণ হবে। যেখানে প্রশিক্ষণার্থী থাকবে প্রতি ব্যাচে ৩০ জন করে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রেস থেকে ছাপানো একটি তথ্যপত্র যার মূল সর্বোচ্চ ১'শ থেকে ১'শ ২০ টাকা, ১৫ থেকে ২০ টাকা মূল্যের একটি কলম, ১০ টাকা মূল্যেরনএকটি নেম কার্ড, ২০ থেকে ৩০ টাকা মূল্যের একটি প্যাড এবং প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য একটি করে ব্যাগ যার বাজার মূল্য আনুমানিক (সর্বোচ্চ) ৩০০ টাকা। যা সর্বমোট গিয়ে দাঁড়ায় ৪'শ ৫০ থেকে ৪'শ ৬০ টাকা। কিন্তু এসবের জন্য বাবদ বরাদ্দ আছে ১ হাজার টাকা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রতি প্রশিক্ষণার্থীর বাজেট থেকে গায়েব করা হচ্ছে ৫'শ ৫০ থেকে ৫'শ ৪০ টাকা। ৩২ ব্যাচে মোট প্রশিক্ষণার্থী থাকবে ৯৬০ জন। যাদের (প্রশিক্ষণার্থী) বাজেট থেকে গায়েব করা হবে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা।

এখানেই শেষ নয়, বাজেটে দেখা যায় প্রতি প্রশিক্ষণার্থী প্রতিদিন খাবার পাবে ২'শ ৮০ টাকা। অনুসন্ধান বলছে প্রশিক্ষণ শুরুর প্রথম দিনই শুধু দেয়া হচ্ছে এই খাবার, বাকী দুই দিন দেয়া হচ্ছে শুধু নাস্তা যার মূল্য ২৫ থেকে ৩০ টাকা। তবে ইন্সট্রাক্টর রবিউল ইসলাম বলছেন বাকী দু'দিন খাবারের পরিবর্তে নগদ টাকা দেয়া হবে।

প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা বলেন, পরিপত্রে দেখা যায় ৩০ জনের ব্যাচে যাতাযাত বাবদ বরাদ্দ করা হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা, দু'জন ট্রেইনার ও ৩০ জন প্রশিক্ষণার্থী যাদের প্রত্যেকে ২ হাজার ৩'শ ৪৩ টাকা পাওয়ার কথা থাকলে সেখানে প্রশিক্ষণার্থীদের দেওয়া হচ্ছে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২'শ ৫০ টাকা, তিন দিনে মোট ৭'শ ৫০ টাকা। প্রশিক্ষণার্থীদের অনেকেই জানান, সকাল ৯ টায় প্রশিক্ষণ শুরু হয়, উপজেলা শহর থেকে যারা ২০-২২ কিলোমিটার দুর থেকে আসেন তাদের সকাল ৭টার সময় বের হতে হয়, এতো সকালে যানবাহন কম পাওয়া যায় তাই যানবাহন রিজার্ভ নিয়ে আসতে হয়, সেখানে তিন দিনে ২ হাজার ২ হাজার ২'শ টাকা খরচ হয়। অথচ যাতাযাত ভাতা পাই তিন দিনে সর্বোচ্চ ৭'শ ৫০ টাকা। এতে করে নিজেদের পকেটের টাকা খরচ হয়। এসব মিলে কয়েক লক্ষ টাকা গায়েবের অভিযোগ উঠেছে ইন্সট্রাক্টর রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে। প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা আরো জানান, প্রশিক্ষণ শেষে আমাদেরকে যা দেয় তাই নিতে হয়।

শিক্ষা অফিসার (ভারঃ) আরজুমান আরা গুলেনুর জানান, এটা শিক্ষা অফিসের দেখার বিষয় নয়, তাদেরকে আমরা শুধু তালিকা দেই, বরাদ্দের বিষয়টা তারাই দেখে।

সহকারী ইন্সট্রাক্টর সোহেল মিয়া জানান, কোন অনিয়ম হয়নি। কে কি বললো সেটা তার বিষয়।নিউজ করলে মামলার হুমকিও দেন তিনি।

ইন্সট্রাক্টর রবিউল ইসলাম জানান, বরাদ্দ অনুযায়ী সবকিছু দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকরা কেউ কেউ বাড়ী থেকে খাবার নিয়ে আসেন, তাই তাদের খারাবের পরিবর্তে নগদ টাকা দেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান জানান, যেদিন প্রশিক্ষণের উদ্বোধন হয়েছিল সেদিন গিয়েছিলাম, বরাদ্দের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি।

(আরআই/এসপি/নভেম্বর ২৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test