E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরিশালে বোরো চাষীরা ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত

২০১৫ মে ১২ ১৭:০৬:২৫
বরিশালে বোরো চাষীরা ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত

বরিশাল প্রতিনিধি : চলতি বছর বোরো চাষীরা জমিতে বাম্পার ফলন পাওয়া সত্বেও একমাত্র বাজার মনিটরিংয়ের অভাবে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে প্রান্তিক চাষীরা দাদন ব্যবসায়ী মহাজনদের কাছ থেকে আনা দাদনের ধান ও সুদের টাকা পরিশোধ নিয়ে এখন মহাদুশ্চিন্তায় ভূগছেন।

প্রান্তিক চাষীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, জেলার প্রত্যেকটি উপজেলার বেশিরভাগ প্রান্তিক চাষীরাই স্থানীয় মহাজনদের কাছ থেকে মৌসুমের শুরুতে ১ হাজার টাকার বিনিময়ে ১ মন ধান ও নগদ ১ হাজার টাকা হারে দাদন নিয়েছেন। পরবর্তীতে চাষীরা বোরো জমিতে অধিক ফলনের আশায় উচ্চমূল্যে বীজ ক্রয় করে বীজতলা তৈরীসহ চাষাবাদ করেছেন। সেচ কাজে জ্বালানী তেলসহ কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষকদের গত বছরের তুলনায় এ বছর উৎপাদনে বেশী টাকা গুনতে হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবছর প্রতি মন ধানের উৎপাদন খরচ হয়েছে প্রায় ৬’শ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ বোরো ধান বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকায়। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যয্য মূল্য না পাওয়ায় দাদন ব্যাবসায়ীদের টাকা ও ধান পরিশোধ করা নিয়ে চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। সূত্রে আরো জানা গেছে, ধানের বাজার মূল্য কম হওয়ায় জেলার সর্বত্র ধান কাটা শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। একদিকে ধানের বাজার মূল্য কম অন্যদিকে শ্রমিক সংকট ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারনে উঠতি পাকা ফসল ঘরে তুলতে না পেরে চাষীরা আরো হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারী সহায়তা, সহজ শর্তে কৃষি ঋণ না পেলে প্রান্তিক বোরো চাষীদের গোয়ালের গরু কিংবা স্ত্রীর গহনা বিক্রি করেই মহাজনের দাদনের টাকা সুদসহ পরিশোধ করতে হবে। সূত্রে আরো জানা গেছে, চলতি বছর জেলার দশটি উপজেলায় সর্বমোট ৬১ হাজার ৩৬৯ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, সরকার কৃষকদের জন্য ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণের ব্যবস্থা করলেও ব্যাংকিং সেক্টরের নিয়মনীতিসহ নানা জটিলতায় কৃষকরা ব্যাংক ঋণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই বাধ্য হয়েই দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে তাদের টাকা সংগ্রহ করতে হয়েছে। চাষীদের অভিযোগ, উৎপাদিত বোরো ফসলের বাজার মূল্য এক শ্রেনির মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রন করছেন। ফলে চাষীরা নায্য মূল্য থেকে হচ্ছেন বঞ্চিত। আর ওইসব মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারী ভাবে এখন পর্যন্ত বাজার মনিটরিং না করার কারনেই চাষীরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না।
(টিবি/পিবি/মে ১২,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test