E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভোমরা বন্দর থেকে অপহৃত ব্যবসায়ি ঘের ব্যবসায়ী উদ্ধার

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ২৪ ১৮:১২:০৭
ভোমরা বন্দর থেকে অপহৃত ব্যবসায়ি ঘের ব্যবসায়ী উদ্ধার

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : ২৯ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর থেকে অপহৃত এক চিংড়ি ঘের ব্যবসায়িকে  উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় গ্রেফতার করা হয়েছে এক পুলিশ সিপাহীসহ চারজনকে। মঙ্গলবার রাত ১২ টার দিকে যশোরের শার্শা উপজেলার  যাদবপুর গ্রামের কাজির বেড় নামকস্থানের শহীদুল ইসলাম ওরফে সান্টু গাজীর বাড়ি থেকে এ গ্রেফতার ও উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।

উদ্ধারকৃত ব্যবসায়ির নাম আব্দুস সেলিম (৩৫)। তিনি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার জাফরপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বাতুয়াডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল কাদের গাজীর ছেলে পুলিশ সদস্য বেলাল হোসেন (৪১)। ( কনষ্টেবল নম্বর-১৫৪১, বর্তমানে খাগড়াছড়িতে কর্মরত), যশোর জেলার শার্শা উপজেলার কাজিরবিল গ্রামের আকরাম হোসেনের ছেলে রবিউল ইসলাম (২২), একই উপজেলার যাদবপুর গ্রামের মৃত আজিম উদ্দিন মাষ্টারের ছেলে হাফিজুর রহমান (৩২) ও সাতক্ষীরা শহরের দক্ষিণ পলাশপোল গ্রামের মুনসুর আলীর ছেলে তুহিন হোসেন (৩৫)।

কালীগঞ্জ উপজেলার জাফরপুর গ্রামের উম্মে আম্মান সাথী জানান, সদর উপজেলার মাহমুদপুর গাঙনিয়া গ্রামে তার স্বামী আব্দুস সেলিমের ১৩ বিঘার একটি চিংড়ি ঘের রয়েছে। গত সোমবার সকাল ৯টার দিকে তার স্বামী ঘেরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। পথিমধ্যে সে তার বাবাকে মোবাইল ফোনে জানায় যে ভোমরা বন্দরে কবীর হোসেন ও আলমগীর নামে দু’বন্ধু তার জন্য অপেক্ষা করছে।

ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে দেবর আব্দুর রহিমের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানতে পারেন যে ২৯ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে তার স্বামী আব্দুস সেলিমকে ভোমরা বন্দরের বিজিবি ক্যাম্পের উত্তর পাশের একটি ফাঁকা জায়গা থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করা হয়েছে। পরে তার মোবাইলে রিং করে দাবিকৃত ২৯ লাখ টাকার মধ্যে ২০ লাখ টাকা ওই দিন বিকেল তিনটার মধ্যে এসএ পরিবহনের মাধ্যমে পাঠাতে বলা হয়। তা না দিলে স্বামীকে জীবন্ত পাওয়া যাবে না বলে জানানো হয়। টাকা পাঠানোর ঠিকানা এসএ পরিবহন কাউণ্টারে এসে মোবাইল করলে জানিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। এরপর এসএ পরিবহণ কাউন্টারে এলে তাকে চারটি বিকাশ নম্বর দেওয়া হয়। তাতে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যায়ক্রমে পাঠানো হয়। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করার পর তিনি বাদি হয়ে মঙ্গলবার সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা (৪৫ নং) করেন।

সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইনামুল হক জানান, অপহরণের বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত শুরু করেন। একপর্যায়ে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর সহকারি পুলিশ সুপার আতিকুল হকের নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল যশোরের শার্শা উপজেলার যাদবপুর গ্রামের কাজীর বেড় নামকস্থানের শহীদুল গাজী ওরফে সান্টু গাজীর বাড়ি থেকে চোখ বাধা অবস্থায় অপহৃত ব্যবসায়ি আব্দুস সেলিমকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে খাগড়াছড়ি থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্য বেল্লাল হোসেনসহ রবিউল ইসলাম, হাফিজুর রহমান ও তুহিন হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মুক্তিপণ বাবদ এক লাখ ১৫ হাজার টাকা।

তবে উদ্ধার হওয়া ব্যবসায়ি আব্দুস সেলিম জানান, মুক্তিপণ আদায়ের দাবিতে তাকে আটক রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। তবে গ্রেফতারকৃতরা এ নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক আবুজার গিফারি জানান, ভিকটিম ও অপহরণকারিদের বুধবার দুপুরে শার্শা থেকে সাতক্ষীরা গেয়িন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার আদালতে সাত দিনের রিমাণ্ড আবেদন জানানো হয়েছে। ভিকটিম আব্দুস সেলিম জ্যেষ্ট বিচারিক হাকিম -৩ আদালতের বিচারক মোর্শেদুল আলমের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।

(আরকে/এএস/ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test