E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ডিসেম্বরের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা সেলিম ওসমানের

২০১৬ মার্চ ১৭ ১২:১০:০৭
ডিসেম্বরের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা সেলিম ওসমানের

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি :নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, আপনারা সকলের একত্রিত থেকে কাজ করবেন। আপনরা যদি সহযোগীতা করেন তাহলে মার্চ থেকে কাজ শুরু করবো। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে অপরাজনীতি গলাটিপে হত্যা করে নারায়ণগঞ্জে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

নিকোজিশন করে অথবা কাউকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে হাত বাড়িয়ে দিলাম। হাতে হাত রেখে উন্নয়নের কাজ করুন। জনগনের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জনগনের জন্য গোলামি করতে হবে। কোন অবস্থাতেই সময় নষ্ট করে জনগনের ভোটের সাথে বেঈমানী করা যাবে না। উন্নয়নের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

বুধবার(১৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের শীতলক্ষ্যা কমিউনিটি সেন্টারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমান্ডের উদ্যোগে আয়োজিত প্রয়াত ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহার রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের পূর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছি। আর আমাদের সৃষ্টি করেছে বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু কোন দলের নয়। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। মুক্তিযোদ্ধারা যেন কোন অবস্থাতেই রাজনৈতিক ভেদাভেদে জড়িয়ে না পড়েন। আমরা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। পরে তার পায়ে অস্ত্র জমা দিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে নেমেছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমরা থেমে গিয়ে ছিলাম। ২১টি বছর আমরা নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা বলে পরিচয় দিতে লজ্জা পেয়েছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করেছেন। এখন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ বাস্তবায়ন করাই হবে প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার স্বপ্ন।

মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, নিজেকে নিজে বড় বলা যায় না। মুক্তিযোদ্ধাদের নামের আগে বীর বলতেই হবে এমন কোন কথা নাই। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। আর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান অবশ্যই বীরত্বের।

নিজের মা প্রয়াত ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহার উদ্বৃত্তি দিয়ে তিনি বলেছেন, আমার মা বলে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করতে। আমার মায়ের উদ্যোগে আমরা নারায়ণগঞ্জের ১হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মানিত করেছি। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে ফলাফল শুনে আমার মা আত্মতৃপ্ত হয়নি। উনি বলে ছিলেন শুধু ক্রেষ্ট দিয়ে আর ভাল খাইয়ে সম্মানিত করা যায় না। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাানিত করতে হলে তাদের জন্য আজীবন সম্মানের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন তারা সম্মান পান। মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি নাতনিরাও যেন তাদের দাদার পরিচয় নিয়ে গর্ব করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা আমাদের মায়ের নির্দেশ মোতাবেক সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

মুক্তিযোদ্ধাদের আহবান রেখে তিনি বলেন, আপনারা মুক্তিযোদ্ধারা আপনাদের কমান্ডার মোহাম্মদ আলীর সহযোগীতা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের জায়গা যেভাবেই হোক একটি স্থাপনা তৈরি করেন। প্রয়োজনে টিন সেটের ঘর তৈরি করে হলেও সেখানে বসার ব্যবস্থা করেন। যাতে করে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে গিয়ে বসতে পারেন। অবসর সময় কাটাতে পারেন মন খুলে হাসতে পারেন।

নাগিনা জোহা সম্পর্কে সেলিম ওসমান বলেন, উনার মৃত্যুর পর প্রমানিত হয়েছে উনি কতটা শ্রদ্ধার মানুষ ছিলেন। উনার পরিবার আমাদের পরিবার থেকে অনেক বড় মাপের রাজনৈতিক পরিবার ছিলো। ভারতের কাশেমনগর যেটা কিনা উনার চাচার নামে। কাশেম নগরে অনেকটা পাক ভারতের রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু। আমার নানা বাড়ির এখনও অনেকে সংসদ সদস্য, বিচারক সহ অনেক উচু পর্যায় রয়েছে। কি কারনে জানিনা উনারা বাংলাদেশে এসে ছিলেন। আমার বাবাকে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বলা হয়। এই সংগঠক হওয়ার পুরো কৃতিত্বটাই ছিল আমার মায়ের। আমার মা নাসিম ওসমানের মত রাজনৈতিক নেতা সৃষ্টি করে ছিলেন। যে কিনা আমার দাদা ও বাবার মত মৃত্যুর পরও বেঁচে আছেন। আমার মাও মৃত্যুর পর বেঁচে আছেন। উনার মৃত্যুতে নারায়ণগঞ্জের মানুষ প্রতিদিনই উনার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করছেন। এমনটা দেশের অন্য কোন মায়ের জন্য হয়েছে বলে আমার জানা নাই। আপনারা সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন উনি যেন জান্নাতবাসী হতে পারেন।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী তার বক্তব্যে, প্রয়াত ভাষা সৈনিক শামসুজ্জোহা, ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহা ও মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার কমান্ডার মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা মোহর আলী চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার ডেপুটি কমান্ডার নুরুল হুদা, সাবেক কমান্ডার সামিউল্লাহ মিলন, যুদ্ধ কালীন কমান্ডার এম এ সাত্তার, সদর উপজেলার কমান্ডার শাহজাহান ভূইয়া জুলহাস, বন্দর উপজেলার কমান্ডার আব্দুল লতিফ প্রমুখ।




(এমকেআর/এস/মার্চ১৭,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test