E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অভয়ারণ্যে মাছ শিকার,  সুন্দরবনের ৪ বনকর্মী বরখাস্ত

২০১৬ মার্চ ৩০ ১৮:৪০:০৯
অভয়ারণ্যে মাছ শিকার,  সুন্দরবনের ৪ বনকর্মী বরখাস্ত

বাগেরহাট প্রতিনিধি : পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভয়ারণ্যে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে চার বনকর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া বনকর্মী হলেন, কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের বনপ্রহরী (এফজি) আ. সবুর মোল্লা  এবং নৌযান চালক (বিএম) আনিসুর রহমান, নাছির উদ্দিন ও মোশারেফ হোসেন।

একই অভিযোগে শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ এবং কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসও) শাহ মো. নোমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। এই দুই কর্মকর্তাকে তিন দিনের মধ্যে তাদের দায়িত্ব অবহেলার জবাব দিতে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে বন বিভাগ।

সুন্দরবন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জাতিসংঘের ইউেিনস্কোর তিন সদস্যের পর্যবেক্ষণ বিশেষজ্ঞ ফ্রান্সের ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারাবিয়ান ইউনিটের প্রকল্প কর্মকর্তা ফ্যানি এডোলফিন এম ডোভের, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রকৃতি সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ নওমি ক্লার ও ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা (মনিটরিং অফিসার) মিজুকি মুরাই গত ২৩ থেকে ২৫ মার্চ ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইট সুন্দরবনের কটকা, কচিখালী, নীলকমল ও পশ্চিম অভয়ারণ্যের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। ইউনেস্কোর বিশেষজ্ঞ দলটি ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইট সুন্দরবনে তিন দিন ধরে জলস্থলের জীববৈচিত্র্য, মাটি-পানি ও প্রাণপ্রকৃতির বর্তমান অবস্থা সরেজমিন পর্যবেক্ষণ কালে শরণখোলা রেঞ্জের কটকা গেলে অভয়ারণ্য এলাকার খালে জেলেদের জাল পেতে মাছ শিকারের দৃশ্য তাদের নজরে পড়ে। পরবর্তীতে বিশেষজ্ঞরা সুন্দরবন থেকে ফিরে বন বিভাগের কাছে অভিযোগ করলে এই চার বনকর্মীকে বুধবার বরখাস্ত করা হয়। একই অভিযোগে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ ও কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা (এসও) শাহ মো. নোমানকে কারণ দর্শানোর নোটি প্রদান করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম।

অভিযোগ রয়েছে, সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকার সব ধরণের বনজ সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ থাকলেও শরণখোলা রেঞ্জের এসিএফ ও রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ ওইসব কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত অসাধু বনকর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বনজীবীদের নিষিদ্ধ এলাকায় সম্পদ আহরণে সুযোগ করে দেন। এই সুযোগে বনজীবীরা অভয়ারণ্য বনের বন্যপ্রাণি শিকার, নদী-খালে মৎস্য আহরণ ও বনের মূল্যবান গাছ কেটে উজাড় করে ছলেছে। এসব অনিয়মের খবর বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জেনেও না জানার ভান করেন। ফলে বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন আজ হুমকির মুখে পড়েছে।

বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম জানান, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে তিনিও ছিলেন। কটকা এলাকায় গেলে অভয়ারণ্য খালে জেলেদের মাছ ধারর চিত্র তার চোখে পড়ে। তাই কর্তব্য অবহেলার দায়ে চার বনকর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এবং রেঞ্জ কর্মকর্তা এসিএফ কামাল ও কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাদের কাছে তিন দিনের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব চাওয়া হয়েছে।

অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে, শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মো. কামল উদ্দিন আহমেদ চার বনকর্মী বরখাস্তের কথা স্বীকার করলেও তাদেরকে কারণ দর্শানোর বিষয়টি এড়িয়ে যান। নোটিশে তাদের কাছে বরখাস্ত হওয়া বনকর্মীদের দায়িত্ব অবহেলার বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

(একে/এএস/মার্চ ৩০, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test