E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সোনাইমুড়ী রুপালী ব্যাংকের কোটি টাকা তসরুপের ঘটনায় ম্যানেজারের বিরুদ্ধে মামলা

২০১৬ মে ০৬ ১৪:০৬:২২
সোনাইমুড়ী রুপালী ব্যাংকের কোটি টাকা তসরুপের ঘটনায় ম্যানেজারের বিরুদ্ধে মামলা

সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর আমিশাপাড়া রুপালী ব্যাংক শাখায় এক কোটি টাকা তসরুপের ঘটনায় শাখা ব্যাবস্থাপক বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।

ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিফাল অফিসার শেখ কামাল হোসেন বাদী হয়ে বুধবার রাতে সোনাইমুড়ী থানায় মামলা দায়েরের কথা নিশ্চিত করেছেন ।

সোনাইমুড়ী থানা ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফুল ইসলাম। পুলিশ সহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগ কারী সংস্থার অভিযুক্তকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

এঘটনায় ব্যাংকের উচ্চ পর্য্যায়ের তদন্ত দল ব্যাপক তদন্ত করে প্রায় এক কোটি টাকার তরুপের হিসাব পেয়েছে।

পলাতক ব্যাবস্থাপক বেলায়েত হোসেনের বোন জান্নাতুল ফেরদৌস বাদী হয়ে তার ভাই নিখোঁজ মর্মে গত মাসের ৩০ তারিখে সোনাইমুড়ী থানা অপর একটি ডিডি হওয়ার কথা জানাগেছে। ব্যাংকের টাকা তসরুপের ঘটনায় ব্যাংকের প্রায় ৬ হাজার গ্রাহকের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

টাকা তসরুপের ঘটনা প্রকাশিত হবার পর থেকে গ্রাহকরা ব্যাংকে নিজেদের একাউন্ট যাচাই করার জন্য প্রতিদিন ভিড় করছে। জনতার ভিড় সামাল দিতে কতৃপক্ষ চরম হিম-শিম পোহাতে হচ্ছে।

জানা যায় সোনাইমুড়ীর আমিশাপাড়া রুপালী ব্যাংক শাখা গত ২৪ এপ্রিল স্থানীয় একাউন্টধারী দ্বীল মুহাম্মদ টাকা তোলার জন্য একটি চেক প্রদান করেন। চেকের বিপরীতে টাকা না থাকার বাহানা করে তাকে টাকা না দিয়ে চেকটি ফেরত দেয়া হয়। এঘটনায় গ্রাহক দ্বীল মুহাম্মদ ক্ষুব্দ হয়ে রুপালী ব্যাংকের আঞ্চলিক ব্যাবস্থাপক শাহেদুর রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তিনি বিষয়টি তদন্ত কর শুরু করেন। এঘটনার ২ দিন পর থেকে শাখা ব্যাবস্থাক বেলায়েত হোসেন আত্মগোপন করেন। পরে শাখা ব্যাস্থাপক বেলায়েত হোসেরে স্থলে মোশারেফ হোসেনকে দায়িত্ব ভার প্রদান করেন।

এঘটনায় ব্যাংকে প্রধান কার্য্যালয় থেকে সহকারী জেনারেল মহা-ব্যবস্থাপক (ওডিট) ফজলুর রহমানকে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমেটি ঘটন করে ব্যাপক তদন্ত কার্য্য চালায়।

তদন্তকারী দল ব্যাংকের ৮৫ লক্ষ টাকা তসরুপের আলামত পায়। এঘটনা জানাজানি হলে ব্যাংকের সঞ্চয়ী, চলতি, স্থায়ী আমনতকারীরা প্রতিদিন ভিড় করতে শুরু করে।

এলাকাবাসী গত বুধবার সকালে ব্যাপক বিক্ষোভ, সমাবেশ, ব্যাংক ঘেরাও করলে, সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ এলাকা বাসীকে শান্ত করে।

রুপালী ব্যাংক আমিশাপাড়া শাখায় গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় বারাহীনগর গ্রামের শাহীন আক্তার তার স্বামী আমির হোসেনকে নিয়ে এসেছেন তার ডিপিএস হিসাব সম্পর্কে খোঁজ নেয়ার জন্য। শাখা ব্যাবস্থাপক মোশারেফ হোসেন শত চেষ্টা করেও তার হিসান নম্বর কম্পিউটারের সার্ভার থেকে ওপেন করতে ব্যার্থ হচ্ছে। শাহীন আক্তার জানায় তার স্বামী বিদেশ থেকে টাকা রোজকার করে এনে ২০১১ সালের জানুয়ারী মাসে ৬ বছর মিয়াদী একটি ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার একটি এফডিয়ার খোলেন। আগামী ৫ মাস পরে সুধে আসলে ৩ লক্ষ টাকা হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু এখন সুদ আসল কোনটাই নেই। তবে শাখা ব্যাবস্থাপক মোশারেফ হোসেন তাকে জানায় যেহেতু টাকা জমার পাকা রশিদ রয়েছে সেহেতু যথা সময়ে তাকে পুরো টাকা ফেরত দেয়া হবে। এভাবে শত শত গ্রাহকের হিসাব থেকে টাকা তসরুপের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীরা জানায়।

এদিকে আইন প্রয়োগ কারী বিভিন্ন সংস্থার লোক জন পলাত ব্যাবস্থাপক বেলায়েত হোসেনের বাড়ী সহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক খোঁজ খবর সহ তাকে আটকরে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

জানা যায় বেলায়েত হোসেন গত ২০১২ সালে রুপালী ব্যাংক আমিশাপাড়া শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৪ সালে ২১ অক্টোবর তিনি প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে পদন্নতি পেয়ে আরা ২৩ তারিখে একি শাখায় যোগ দান করেন। তার বাড়ী উপজেলার ১ নয়াগ ইউনিয়নের জয়াগ গ্রামে।

এবিষয়ে কথা হলে সোনাইমুড়ী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফুল ইসলাম জানায় মামল হয়েছে, যেহেতু আর্থিক দুর্ণীতির বিষয় সেহেতু এই মামলা দুদকে স্থানান্তর করা হবে। আসামী আটকের সবকল প্রক্রীয়া চলছে। তাবে তার বোন জান্নাতুল ফেরদৌসের জিডি সম্পর্কে তিনি অবহিত নন বলে জানায়।


(এনএইচ/এস/মে০৬,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test