E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হস্তান্তরের আগেই আগৈলঝাড়া বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্রের ভবনে ফাটল

২০১৬ জুন ০৪ ১৭:১৫:৪১
হস্তান্তরের আগেই আগৈলঝাড়া বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্রের ভবনে ফাটল

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : হস্তান্তরের আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে আগৈলঝাড়া উপজেলা বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রর ৩৩/১১ কেভি এমবিএ উপ-কেন্দ্রর ভবনে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বাচাতে সিডিউল বহির্ভূত নিম্ন মানের কাজের দুর্নীতি আড়াল করেত আড়াই বছরে চার প্রকৌশলীকে কৌশলে বদলী। প্রকল্প পরিদর্শনে এসে দাতা দেশের ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, জাইকার আর্থিক সহায়তায় রুরাল ইলেকট্রিকেল আপগ্রেশন প্রজেক্ট প্যাকেজ ১১/১৩ এর আওতায় জার্মান কোম্পানী সিমেন্স এর ইন্ডিয়া ব্রাঞ্চের মাধ্যমে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার ছবিখারপাড় নামক স্থানে ৪০ শতক জায়গার উপর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

সূত্র মতে, ২০১৩ সালে ৩ জুলাই ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আগৈলঝাড়ায় ৫ মেগাওয়াট এমপিআর ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মান প্রকল্প ও ১৩.৫ কি.মিটার সঞ্চালন লাইন একনেকে পাশ হয়। পরবর্তিতে এমপিআর ক্ষমতা বাড়িয়ে ১০ মেগাওয়াটে উন্নীত করে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র বাস্তবায়নের জন্য এনার্জি কমিশন থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যাদেশ দেয়া হয় সিমেন্স ইন্ডিয়া কোম্পানীকে। উপকেন্দ্রর সাথে ১৩.৫ কি.মিটার সঞ্চালন লাইন বাস্তবায়নের সাথে।

বরিশাল পল্লী বিদুৎ সমিতি-২ এর একাধিক প্রকৌশলী ও আগৈলঝাড়া পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা জানান, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের উর্ধতন কর্মকর্তারা প্রকল্প তদারকির দ্বায়িত্বে থাকলেও ওই কর্মকর্তাগণ, প্রকল্প পরিচালক ও জাইকার প্রকৌশলীদের আর্থিক সুবিধা দিয়ে ম্যানেজ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উচ্চ মূল্যের মালামালের পরিবর্তে নিম্নমানের মালামাল দিয়ে সিভিল ওয়ার্কের কাগগুলো সম্পন্ন করে। তাও ত্রুটিমুক্ত নয়।

কাজের শর্ত অনুযায়ি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এক বছর ওই প্রকল্প রক্ষনাবেক্ষনণ করার কথা থাকলেও কোথাও তারা তা করেনি। প্রকল্প বাস্তবায়ন করা কোম্পানী বরিশালেও আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। আগৈলঝাড়ার থেকে ওই প্রকল্পের মান অনেক বঅল বলেও জানান তারা। কারণ হিসেবে তারা বলেন, ওই এলাকায় এনার্জি কমিশনের সচিব বাড়ি থাকায় তাদের ভাল কাজ করতে হয়েছে।

যার ফলে ভবন হস্তান্তরের আগেই বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দূর্নীতি জালে জড়িয়ে একর পর এক জাইকার চার জন প্রকৌশলী পর্যায়ক্রমে প্রকল্পের তদারকি করছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র আরও জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় জাইকার প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম, মোস্তফা কামাল, বিকাশ চন্দ্র দে আর্থিক সুবিধা নিয়ে অন্যত্র বদলী হয়ে যায়। সর্বশেষ প্রকৌশলী সুনীল চন্দ্র দে’ প্রকল্পের কাজ হস্তান্তর না করিয়ে ৮/১০ দিন আগে সিলেট ডিভিশনে বদলী করা হয়েছে।

সম্প্রতি দাতা দেশের প্রতিনিধিরা আগৈলঝাড়া প্রকল্প পরিদর্শনে এসে নিম্ন মানের কাজ দেখে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলেও ওই দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম আ. মালেক বাস্তবায়ন প্রকল্পের নিম্ন মানের কাজের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি বাস্তবায়নকারী উর্ধতন কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। এখন পর্যন্ত প্রকল্প হস্তান্তর হয়নি। অনানুষ্ঠানিকভাবে সঞ্চালনের কাজ চলছে। তবে ভবনে ফাটল সম্পর্কে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ কাজ তদারকির দ্বায়িত্বে থাকা জাইকার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল চন্দ্র দে’র কাছে কাজের নিম্নমান, সিডিউল বহির্ভূত কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে কাজগুলো সিডিউলের বাইরে করা হয়েছে তা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষ করা হয়েছে। প্রকল্পে বালু ফিক্সিংএর জন্য ভবনে ফাটল দেখা দিলেও তা প্রকল্পের কোন ক্ষতি করবে না বলে জানান তিনি।

(টিবি/এএস/জুন ০৪, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test