E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে মন্দিরের কাছাকাছি মসজিদ নির্মাণ না করার আবেদন

২০১৬ জুলাই ০৪ ১৮:৫৯:৫২
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে মন্দিরের কাছাকাছি মসজিদ নির্মাণ না করার আবেদন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শিবপুর সনাতন ধর্মীয় মন্দির থেকে ঢিঁল ছোঁড়া দূরত্বে জনবসতিশূন্য এলাকায় মসজিদ নির্মাণ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার আশাঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় তারা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে এক প্রেস ব্রিফিং এ এসব কথা উল্লেখ করেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শিবপুর সনাতন ধর্মীয় মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্যামল কুমার সরকার প্রেস ব্রিফিং এ উল্লেখ করেন, অবিভক্ত ভারতের মধ্যে অবস্থানকালিন সময় থেকে শিবপুর ইউনিয়নের হিন্দু ও মুসলিমরা একই বৃন্তে দু’টি কুসুম হিসেবে বসবাস করে আসছেন। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কোন ঘাটতি ছিল না। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী কতিপয় ভারতীয় বংশোদ্ভুত উগ্রবাদি মুসলিমদের কারণে শিবপুরসহ সাতক্ষীরার বিস্তীর্ণ অঞ্চল সারা দেশের সঙ্গে কয়েক মাস যাবৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে এই এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লোকজন।।

প্রশাসনের কঠোর ভূমিকার কারণে সে পরিস্থিতির পরিবর্তণ হলেও ওই মহলটি চুপ করে বসে নেই। তারা যে কোন মূল্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন,২০০৩ সালে বারপোতা গ্রামের স্বর্গীয় মণীন্দ্রনাথ মণ্ডলের সন্তানদের দান করা তিন শতক জমিতে আমরা শিবপুর সনাতন ধর্মীয় মন্দির তৈরি করে ২০০৪ সাল থেকে সেখানে পূজা অর্চনা করে আসছি। এখানে প্রতি বছর দুর্গাপুজা, শ্যামাপুজা, সরস্বতীপুজাসহ বাংলা নববর্ষে উৎসবমুখর পরিবেশে পদাবলী কীর্তণ পরিবেশিত হয়ে থাকে। এতে অংশগ্রহণ করে থাকেন ৫নং ওয়ার্ডের বারপোতা, ডুমুরপোতা গ্রামসহ শিবপুর ইউনিয়নের সংখ্যালঘুরা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট থাকার কারণে এসব অনুষ্ঠানে অসাম্প্রদায়িক চেতনার মুসলিমরাও শরীক হওয়ায় সকল অনুষ্ঠান পরিণত হয় মিলন মেলায়। যা’ বাংলাদেশের যে কোন প্রান্তের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এতিহ্যকে হার মানায়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন,তিন সপ্তাহ আগে আমাদের সনাতন ধর্মীয় মন্দির থেকে ঢিল ছে^াঁড়া দূরত্বে নিজের জমিতে একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন লাবসার ঠিকাদার সিরাজুল ইসলাম। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ মন্দিরের কার্যক্রম পরিচালনায় বিঘ্ন সৃষ্টির বিষয়টি জমির মালিক সিরাজুল ইসলামকে অবহিত করলে তিনি মসজিদ নির্মাণের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। কিন্তু গত ইংরাজী পহেলা জুলাই থেকে ওই মসজিদ নির্মাণ স্থানের রাস্তার বিপরীতে একইভাবে একটি মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। ওই জমি ভারতীয় বংশদ্ভুত আবুল হোসেনের কাছ থেকে ঠিকাদার সিরাজুল ইসলাম কিনেছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ, আওয়ামী লীগ ও পুলিশিং কমিটির নেতৃবৃন্দকে অবহিত করলেও তারা কোন এক অজ্ঞাত কারণে ভূমিকা রাখতে পারছেন না। এসব কারণে ওই বিশেষ মহলটি আবুল হোসেনের নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করতে আবারো মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে তারা মনে করছেন।
তাই আগামিতে যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পূজা অর্চনা নিয়ে এলাকার মুসলিম ধর্মালম্বীদের মধ্যে কোন বিরোধ সৃষ্টি না হয় ও এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকে সেজন্য জনমানবশূন্য এলাকায় শিবপুর সনাতন ধর্মীয় মন্দির থেকে ঢিঁল ছোঁড়া দূরত্বে মসজিদ নির্মাণ না করার জন্য প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সাংসদ, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল মানুষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ সময় শিবপুর ইউনিয়নসহ এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।









(আরএনকে/এস/জুলাই০৪,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test