E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

২০১৬ জুলাই ১৫ ১৮:৫৩:১৬
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে শুক্রবার নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। এই উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসকে সাজানো হয় মনোরম পরিবেশে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সহ একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহে ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙানো হয়। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্রই উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।

অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল উদ্বোধনী ঘোষণা, আনন্দ শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা। এদিন সকাল ১০.৩০ টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। উপাচার্য প্রফেসর ড. এম অহিদুজ্জামান ও স্থানীয় সাংসদ জনাব একরামুল করিম চৌধুরী সমবেত জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলে সম্মিলিতভাবে অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ক্যাপ ও টি-শার্ট বিতরণ করা হয়েছে।

পরে সকাল ১১টায় হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য প্রফেসর ড. এম অহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং রেজিস্ট্রার প্রফেসর মমিনুল হকের পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মামুনুর রশীদ কিরণ এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম।

অনুষ্ঠানের শুরুতে রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. মমিনুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকাল হতে অদ্যাবধি অগ্রগতির বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে নোবিপ্রবির একাডেমিক ও ভৌতঅবকাঠামোগত সর্বাঙ্গীন কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। এখানকার শিক্ষার্থীরা মেধাবী। এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন বিশ জন ছাত্র আজ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্বিত শিক্ষক।

উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, নভেম্বরের মধ্যে চলমান নির্মাণ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। এসময় তিনি স্থানীয় সাংসদ জনাব একরামুল করিম চৌধুরীর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, তিনি (সাংসদ) নোবিপ্রবি পরিবারের অভিভাবক। আমাদের ডাকে তিনি সবসময় ছুটে আসেন। আমরা এ জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এছাড়া তিনি মাননীয় উপাচার্যের গতিশীল নেতৃত্বে নোবিপ্রবিকে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ক্যামব্্িরজের আদলে গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যলয়ের সকল ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

প্রধনান অতিথির বক্তৃতায় একরামুল করিম চৌধুরী এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা যে তিনি এ অজপাঁড়া গাঁয়ে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। ফলে এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ লাভ করেছে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদের বাস্তব জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আজকে উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীরা জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়ছে। এ থেকে বেরিয়ে আসতে প্রয়োজন অভিভাকদের সচেতনতা ও শিক্ষার্থীদের নিজেদের ভেতর কাউন্সিলিং প্রক্রিয়া অনুসরণ। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস মোকাবেলায় সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠীর ঊর্ধ্বে উঠে মুক্তিযুদ্ধের অসামান্য গৌরবের অংশীদার হয়ে আমাদের সত্যিকার মানুষ হয়ে উঠতে হবে। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের মাদক থেকে দূরে থাকারও পরামর্শ দেন।

তিনি ঘোষণা করেন, দেশের সেরা মেধাবীদের স্থান হলো নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। তাই অর্থাভাবে যেন নোবিপ্রবি পরিবারের কোনো শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ না হয়। এজন্য তিনি যথাযথ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে সর্বদা প্রস্তুত আছেন বলে জানান। তিনি আরো বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নোয়াখালীতে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এর উত্তরোত্তর অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। আমাদের গর্ব হওয়া উচিত যে আজকে বাংলাদেশ উন্নতির চরম শিখরে, কারণ শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মামুনুর রশীদ কিরণ এমপি বলেন, জন্মদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক সাফল্য কামনা করি। তিনি বলেন, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নতির শীর্ষে। তারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে মেধার পরিচয় দিচ্ছে। আমার নিজ শিল্প প্রতিষ্ঠানেও এদের কাজের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। আমি নোয়াখালীর সন্তান কর্মক্ষেত্রে নোয়াখালীবাসীর সাফল্য আমাকে অনুপ্রাণিত করে।

সভাপতির বক্তৃতায় উপাচার্য প্রফেসর ড. এম অহিদুজ্জামান বলেন, যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগিয়ে চলার পথের মুকুট। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এগিয়ে চলছে। আমি আশা করি এ বিশ্ববিদ্যালয় একদিন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, দেশরতœ শেখ হাসিনাকে শতকোটি অভিবাদন যে তিনি উপকূলীয় অঞ্চলের শিক্ষার প্রসারে একটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। এতে করে দেশের বিজ্ঞান চর্চায় এক মাইলফলক সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামীতে আমরা সবাই নিজেদের মেধা, যোগ্যতা, সততা ও আন্তরিকতা দ্বারা এ প্রতিষ্ঠানকে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করবো। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ পড়াশোনায় মনযোগী হয়ে নিজেদের দেশের সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার উদাত্ত আহ্বান জানান।

পরিশেষে বক্তব্য রাখেন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আবুল হোসেন। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অতিথিবৃন্দকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-শিক্ষক সমিতির সভাপতি জনাব মেহেদী মাহমুদুল হাসান, অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব তারেক মো. রাশেদ উদ্দিন এবং শিক্ষার্থী আবদুল হামিদ বাপ্পি ও কপালিকা দর্শন প্রমুখ।

(এসইউ/এএস/জুলাই ১৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test