E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নানা প্রতিকূলতায় এগিয়ে চলেছে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রটি

২০১৬ জুলাই ২৮ ১১:৪৫:০৬
নানা প্রতিকূলতায় এগিয়ে চলেছে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রটি

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও শহর থেকে প্রায় ১৫ কিঃমিঃ দুরে আরাজী ঝাড়গা নামক স্থানে আমেরুল ইসলাম নামে এক যুবকের একক প্রচেষ্টায় ২০০৮ সালে গড়ে উঠে একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুর্নবাসন কেন্দ্র নামে একটি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে যেখানে জেলার ১১টি ইউনিয়ন থেকে মোট ২৮৬ জন প্রতিবন্ধী শিশু ১ম শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করছে, পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের হাতের কাজ শিখে অর্থ রোজগারও করার চেষ্টা করছে সমাজে অবহেলিত প্রতিবন্ধী শিশুরা।

জাতীয় দিবসগুলোতে প্রতিবন্ধী শিশুদের অংশগ্রহণ করান জেলার অনুষ্ঠানগুলোতে। পুর্ণবাসন কেন্দ্রটিতে বর্তমানে জনবল রয়েছে ৪১জন। প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে ১১০ শতক জমি,প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে আনা-নেওয়ার জন্য রয়েছে ২টি থ্রি-হুইলার। ক্লাশ নেওয়া হয় শুক্রবার বাদে সারা সপ্তাহ। রয়েছে আবাসিক সুবিধাও। চলছে একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফরিদউদ্দিন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র নামে আরো একটি সহযোগি প্রতিষ্ঠান নির্মাণের কাজ।

আমেরুল এক সময় বিভিন্ন এনজিওতে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করতেন। চাকুরীর সুবাধে সমাজের প্রতিবন্ধী শিশুদের কাছাকাছি গিয়ে তাদের জীবন-যাপন সর্ম্পকে জানার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।এরই এক পর্যায়ে মাথায় আসে নিজ এলাকার প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে কাজ করলে কেমন হয়! যেই চিন্তা সেই কাজে নেমে পড়া।কিন্তু উন্নয়নের কথা ভাবলেই তো আর উন্নয়ন করা সম্ভব না।এর জন্য প্রয়োজন অর্থ, জনবল, অবকাঠামো, জমি সহ আরো অনেক কিছু।তবে থেমে থাকেননি তিনি।চাকরীর পাশাপাশি নিজ এলাকায় এ ব্যাপারে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিজের ইচ্ছার কথাগুলো জানান দেওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। সাড়াও পেতে থাকেন সুশীল সমাজ থেকে। অবশেষে চাকরী ছেড়ে এসে নিজের বাসায় চালু করলেন একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুর্নবাসন কেন্দ্র নামক প্রতিষ্ঠানটি।

এ ব্যাপারে কথা হয় একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুর্ণবাসন কেন্দ্রটির পরিচালক আমেরুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন,আমি ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান,ঠাকুরগাঁওয়ের প্রতিবন্ধী শিশুদের উন্নয়নে কাজ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হয়। তবে সমস্যাও রয়েছে অনেক।বর্ষাকাল এলেই আমার বিদ্যালয়ে প্রবেশ সড়কটি দিয়ে প্রতিবন্ধী শিশুদের যাতায়াত কষ্টদায়ক হয়ে পড়ে।রাস্তায় হাটু সমান কাদায় ভরে যায়। আমরা স্বাভাবিক মানুষরাই ঐ পথ দিয়ে যেতে ভয় পাই।এলাকার জনপ্রতিনিধি সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিলেও কোন লাভ হচ্ছে না। রাস্তাটি সংস্কার করা আশু প্রয়োজন। অপরদিকে প্রতিবন্ধী শিশুদের পরিচর্যায় নিয়োজিত ৪১ জন নারী-পুরুষ স্বেচ্ছাশ্রমে প্রতিবন্ধীদের পাঠ দান করাচ্ছেন।তাঁদের বেতন-ভাতা শুরু করা না গেলে হয়তো শিক্ষক শুন্য হয়ে পড়বে প্রতিষ্টানটি।বন্ধ হয়ে যেতে পারে প্রতিবন্ধীদের উন্নয়ন কার্যক্রম।বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে ব্যাপক কর্যক্রম পরিচালনা করছেন।আমি প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করছি। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সমাজের দানশীল ব্যক্তিদের সহায়তা কামনা করছি।

সদর উপজেলার রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি বলেন,সমাজের অবহেলিত প্রতিবন্ধী শিশুদের উন্নয়নে আমেরুল যথেষ্ঠ পরিশ্রম করছে।এখানে অধ্যয়নরত প্রতিবন্ধী শিশুর পরিবার থেকে কোন প্রকার অর্থ নেওয়া হয় না। কাজেই সমাজের বিত্তবানেরা যদি সাহায্য-সহযোগিতা করে তাহলে হয়তো প্রতিষ্ঠানটি সমগ্র জেলার প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করবে।



(এফআইআর/এস/জুলাই ২৮,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test