E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

থানায় নেয়ার নামে ভারতীয় নারীকে ধর্ষণ

২০১৭ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৪:৩৩:০৩
থানায় নেয়ার নামে ভারতীয় নারীকে ধর্ষণ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার যুগিখালি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান ও তার চার সহযোগীর বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন এক ভারতীয় নারী।

বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দিয়েছেন ধর্ষিতা ওই নারীর শাশুড়ি।

বিচারক আশরাফুল ইসলাম মামলাটি এজাহারভুক্ত করে তদন্তপূর্বক পুলিশ প্রতিবেদন দেয়ার জন্য কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে যুগিখালি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিজ এলাকায় দলীয় গ্রুপিংয়ের কারণে এই মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে।

মামলার বাদী ধর্ষিতা ওই গৃহবধূর শাশুড়ি মামলায় উল্লেখ করেছেন, তার ছেলে ভারতের পশ্চিমবাংলায় দিন মজুরের কাজ করতে গিয়ে কিছুদিন আগে বিথারী গ্রামের ওই নারীকে বাংলাদেশে এনে বিয়ে করেন। আদালতের অ্যাফিডেভিটও রয়েছে। সংসার করার এক পর্যায়ে এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল হাসান তার ছেলের বউ ও ছেলেকে নানাভাবে বিরক্ত করতেন।

এক পর্যায়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম তাদের বাড়িতে গিয়ে জানান বাজারে পুলিশ এসেছে। তোমাদেরকে আমার সঙ্গে এখনই যেতে হবে। এ কথা বলে ছেলে ও তার স্ত্রীকে চেয়ারম্যান স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসের দোতলায় নিয়ে আসেন।

পরে তাদের কাছে ১৫ হাজার টাকা চেয়ে বলেন, তোমার বউ ভারতীয় নাগরিক। এখানে থাকতে চাইলে পুলিশকে এই টাকা দিতে হবে। অন্যথায় পুলিশ তোমার বউকে গ্রেফতার করবে।

মামলায় আরও বলা হয়, এই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় চেয়ারম্যান থানার ওসির সঙ্গে কথা বলানোর নাম করে ওই রাতেই গৃহবধূকে নিয়ে যান। পরে তাকে থানায় না নিয়ে তোলা হয় কলারোয়ার ঝিকরা গ্রামের সঞ্জয় নামের একজনের বাড়িতে।

সেখানে একটি ঘরে আটকে রেখে প্রথমে চেয়ারম্যান রবিউল হাসান ও পরে পর্যায়ক্রমে সহযোগী সোহাগ হোসেন, সোহাগ দফাদার, আসাদুজ্জামান আসাদ ও কদম আলী ওই গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। গভীর রাতে চেয়ারম্যান রবিউল হাসান ধর্ষিতাকে চৌকিদার এমাদুলের মাধ্যমে বাড়িতে পৌঁছে দেন।

ভোরে গৃহবধূর শাশুড়ি ঘুম থেকে উঠে বাড়ির মধ্যে ছেলের বউকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রথমে কলারোয়া হাসপাতাল ও পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর সুস্থ হয়ে কলারোয়া থানায় মামলা দেওয়া হলে পুলিশ তা রেকর্ড না করে ফেরত দেয়।

গণধর্ষণের এ অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান রবিউল হাসান বলেন, মেয়েটি ভারতীয়। সে সেখানে নবম শ্রেণিতে পড়তো। বয়স ১৬ বছর। তারা বাবা তাকে ফেরত নেওয়ার জন্য বাংলাদেশে যোগাযোগ করেন। বিষয়টি কলারোয়া থানা পুলিশকেও জানানো হয়। এক পর্যায়ে মেয়েটি কারও পরামর্শ অনুযায়ী একটি সাজানো মামলায় আগ্রহী হয়েছে।

এ বিষয়ে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই বা এমন অভিযোগ নিয়ে কেউ থানায় আসেনি। তাছাড়া আদালতে মামলা হলেও তার কপি থানায় পৌঁছায়নি এখনো।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test