E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সালথায় বাণিজ্যিকভাবে ত্বীন ফল চাষ 

২০২২ এপ্রিল ২১ ১৭:৩৫:০৮
সালথায় বাণিজ্যিকভাবে ত্বীন ফল চাষ 

আবু নাসের হুসাইন, সালথা : মরুভূমির সেই ত্বীন ফল ফরিদপুরের সালথায় বানিজ্যিকভাবে চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের কিত্তা গ্রামের তরুন ব্যবসায়ী মোঃ সোহেল রানা। ইতোমধ্যে বাজারে ত্বীন ফল বিক্রিও করেছেন তিনি।ড্রাগনসহ অন্যান্য ফলের চাষ ও ব্যবসার পাশাপাশি  তিনি ত্বীন ফলের চাষও শুরু করেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায, ত্বীন ফল খুব রসালো এবং একটি ফল ২০ থেকে ৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। এটি সরাসরি কাঁচা ও রোদে শুকিয়ে কাঁচের কন্টেইনারে রেখে সারা বছর খাওয়া যায়। পাকলে কোনোটি লাল, আবার কোনোটি হলুদ রং ধারণ করে।

সোহেল রানা বলেন, মাছের পুকুরের পাশে ২৫ শতক জমিতে প্রতিটি চারা ৭২০ টাকা দরে ১০৬টি ত্বীন ফলের চারা দিনাজপুর থেকে এনে গত বছর রোপণ করা হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কাঙ্ক্ষিত ত্বীন ফল ধরতে শুরু করে।

তিনি আরো বলেন, প্রথমে কিছুটা শঙ্কায় ছিলাম ত্বীন ফলের চাষ নিয়ে। পরবর্তীতে কঠোর পরিশ্রম, নিবিড় পরিচর্যা আর কৃষি দপ্তরের লোকজনদের পরামর্শে সফল হয়েছি। প্রতি কেজি ত্বীন ফল রমজান মাস থেকে ৪/৫শ' টাকা দরে বিক্রি করছি। প্রথম বছরে খরচ উঠবে এবং পরের বছর থেকে লাভের মুখ দেখা যাবে বলে আশা করছি।

তিনি বলেন, ফল ছাড়াও বিক্রির জন্য শতাধিক কলম (কাটিং) করা হয়েছে। ত্বীন ফল চাষে আগ্রহী হয়ে অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে বাগানে আসেন ফলটির চাষ পদ্ধতি দেখতে।

ত্বীন ফলের চাষাবাদের গুণাগুণ সম্পর্কে সালথা উপজেলা কৃষি অফিসার ও কৃষিবিদ জীবাংশু দাস বলেন, ত্বীন ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১, ভিটামিন বি ২, ছাড়াও প্রায় সব রকমের জরুরি নিউট্রিশনস যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, সোডিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কার্বোহাইড্রেট, সুগার, ফ্যাট,প্রোটিন, থায়ামিন, রিবোফ্লাবিন পটাশিয়াম ইত্যাদির পাশাপাশি এর অনেক ওষধি গুণও আছে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়, ওজন কমানো, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখাসহ নানা উপকার করে থাকে।

তিনি আরও বলেন, মাঠে ও ছাদে টবে লাগিয়ে ফল উৎপাদন সম্ভব। এটির কাটিং চারা লাগানোর চার থেকে পাঁচ মাস পর থেকেই ফল দিতে শুরু করে। প্রতিটি গাছ থেকে প্রথম বছরে এক কেজি, দ্বিতীয় বছরে সাত থেকে ১১ কেজি, তৃতীয় বছরে ২৫ কেজি পর্যন্ত ফল ধরে। এভাবে টানা ৩৪ বছর পর্যন্ত ফল দিতে থাকে। গাছটির আয়ু হলো প্রায় ১০০ বছর। প্রতিটি পাতার গোঁড়ায় গোঁড়ায় ত্বীন ফল জন্মে থাকে। প্রতিটি গাছ ছয় থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয় এবং একটি গাছে ৭০ থেকে ৮০টি ফল ধরে।’

তিনি আরো বলেন, ত্বীন ফলটির চাষাবাদের মাধ্যমে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। এ ছাড়াও, এই ফল চাষ করে বেকারত্ব দূর করা যাবে। দেশে ফলটির চাহিদাও ক্রমশ বাড়ছে।

(এন/এসপি/এপ্রিল ২১, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test