E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মৌমাছির গুনগুন শব্দে মুখরিত শৈলকুপার সরিষা ক্ষেত

২০২২ ডিসেম্বর ২৩ ১৬:৪৯:২৫
মৌমাছির গুনগুন শব্দে মুখরিত শৈলকুপার সরিষা ক্ষেত

শেখ ইমন, শৈলকুপা : কৃষকের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে হলুদ সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে গেছে। যার সুগন্ধে প্রাণ জুড়ায় পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। ফসলি জমিতে হলুদ ফুলে ছেয়ে যাওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় সরিষার ফলন গত বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে দ্বিগুন পাওয়ার স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা। কম সময়ে ও স্বল্প পুঁজি ব্যায়ে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে ঝুকছে। মৌমাছি সরিষা ফুল থেকে মধু আহরণ করে ফলন বাড়ার পাশাপাশি সরিষা চাষিদের হচ্ছে বাড়তি আয়।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে দেখা যায়, বিঘার পর বিঘা জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এখন মাঠে হলুদ রঙের সরিষা ক্ষেতে হলুদের হাতছানি। ফুলে ফুলে ভরা। ফুটন্ত ফুল হতে মধু সংগ্রহে পরিশ্রম করে যাচ্ছে মৌমাছি। গুন গুন শব্দে হলুদ সরিষা ক্ষেতে মৌমাছির আনাগোনা এবং মধু আহরণের দৃশ্য বড়ই চমৎকার।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে শৈলকুপা উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৩হাজার ১শ ১৭ হেক্টরের বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। যা গত বছরের থেকে অনেক বেশি জমিতে সরিষার চাষ করেছে কৃষকরা। সরকারী প্রণোদনা হিসেবে কৃষকদেরকে বিনামূল্যে দেয়া হয়েছিল উন্নতমানের সরিষার বীজ। এবার বারী ১৪, ১৫,১৭,১৮,৯ ও বিনা ৯ নামের জাতের সরিষার আবাদ করেছে কৃষকরা। যার থেকে বিঘা প্রতি ৫-৬ মণ সরিষা পাবে কৃষকেরা।

উপজেলার ধলহরাচন্দ্র গ্রামের সরিষা চাষি শফিউল ইসলাম বলেন, আমন ধান ঘরে তোলার পর বেশ কিছু সময় জামি ফাঁকা পড়েই থাকে। তাই স্বল্প সময়ে বাড়তি আয়ের চিন্তা করে প্রতি বছর ১ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করে থাকি।

কুশবাড়িয়া গ্রামের আতিয়ার খান জানান, তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তৈল কিনে খাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ও ভেজাল থেকে মুক্তির জন্যই সরিষা চাষ করেছি।

দামুকদিয়া গ্রামের মাসুদ মোল্লা বলেন, গত বছর বিঘাখানেক জমিতে সরিষা চাষ করে বেশ লাভবান হয়। কম খরচে লাভ বেশি সে কারনে এই মৌসুমে ২ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি।

ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কনোজ কুমার বিশ্বাস জানান, এবার ৬ জাতের সরিষার ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আমন ধান ঘরে তোলার পরেই কৃষকরা ওই জমিতে সরিষা চাষ করে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকার মাঠে সরিষা দানা বাধতে শুরু করেছে। এই ফসল ঘরে তোলার পর আবার ওই জমিতেই কৃষক বোরো আবাদ শুরু করবে। সরিষা আবাদের কারণে চাষ, সার ও কীটনাশক ঔষধ বেশি দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। ফলে অল্প খরচ ও কম পরিশ্রমেই সরিষার জমিতে বোরো আবাদে লাভবান হয় কৃষক।

শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান খান বলেন, উপজেলার প্রতিটি এলাকায় সরিষা চাষের জন্য উপযোগী। কম খরচে লাভ বেশি সে কারনে কৃষকরা সরিষা চাষে বেশ ঝুকে পড়েছেন। চলতি মৌসুমে উপজেলাতে ৩হাজার ১শ ১৭ হেক্টরের বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। অল্প সময়, স্বল্প ব্যয় আর লাভ বেশি সে কারনে উপজেলার সব ধরনের কৃষকের কাছে সরিষার চাষ বেশ জনপ্রিয়। এজন্য কৃষি বিভাগ সরিষা চাষিদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে আসছে।

তিনি আরো বলেন, প্রতি হেক্টর জমিতে দেড় টন করে সরিষা উৎপাদন হবে। সেইসাথে এ উপজেলায় ৪ হাজার টনের মত সরিষা উৎপাদন হবে। যা থেকে প্রায় ২ মেট্রিক টন তৈল উৎপাদন হবে।

(এসআই/এসপি/ডিসেম্বর ২৩, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test