E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

আইএলও সন্তুষ্ট হলেও পশ্চিমারা কেন অসন্তুষ্ট

২০২৪ মার্চ ২৫ ১৮:১৪:১০
আইএলও সন্তুষ্ট হলেও পশ্চিমারা কেন অসন্তুষ্ট

বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সন্তোষ প্রকাশ করলেও পশ্চিমা কয়েকটি দেশ এখনও অসন্তোষ জানানোর চেষ্টা করছে। সম্প্রতি আইএলওর অধিবেশনে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি জানানোর পরে অগ্রগতি বিষয়ে ভারত চীনসহ বেশকয়েকটি দেশ পক্ষে কথা বলে এবং বিরোধীতাকারীদের কঠোর সমালোচনা করে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পশ্চিমের সংগঠনগুলোতে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প নিয়ে তথ্যাদি দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু ষড়যন্ত্র হয়ে থাকে। রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য নেতিবাচক তথ্য দিয়ে ইতিবাচক ঘটনাগুলোকে ঢাকার প্রবণতা স্পষ্ট।

সম্প্রতি শেষ হওয়া আইএলও এর অধিবেশনে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা শুরু করেন আইএলওর পরিচালনা পরিষদের সভাপতি রিচার্ড এ আদেজোলা। তিনি গত ২৯ জানুয়ারি আইএলওর কাছে উত্থাপিত বাংলাদেশের প্রতিবেদনের উল্লেখ করে বলেন, সামগ্রিকভাবে ২০২১ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে আইএলওর কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়ে জোরালো অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন সলিডারিটি সেন্টারের পরিচালক জেফরি ভগ্ট বলেন, ‘বাংলাদেশে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নে যুক্ততার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাধীনতা নেই। দর–কষাকষিতে যুক্ততার হার খুবই কম। শ্রমিকেরা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের সহিংসতার মুখোমুখি হচ্ছেন। নারী কর্মীরা নানাভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশের শ্রম আইনে যে সংস্কার হয়েছে, তা একেবারেই ন্যূনতম।’

পশ্চিমা দেশগুলো প্রশ্ন তুললেও একই অধিবেশনে ভারত, চীন, সৌদি আরব, ইরানসহ বেশ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে। এদিকে আলোচনার শুরুতে আইনমন্ত্রী আইএলওর পথনকশা অনুযায়ী বাংলাদেশ কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সেটি উপস্থাপন করেন। তিনি শ্রম আইন সংশোধনে বাংলাদেশের জোরালো রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, পরিস্থিতির উন্নয়নে বাংলাদেশের উদ্যোগের যথাযথ স্বীকৃতি না দিলে আইএলওসহ আন্তর্জাতিক অংশীজনদের সঙ্গে আস্থার সংকট তৈরি হতে পারে।

আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বিভিন্ন দেশ, জোট, সংগঠন ও আইএলওর পরিচালনা পরিষদের সদস্যসহ ২৪ জন বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাঁদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। আইএলওসহ বেশ কয়েকটি দেশ শ্রমিকদের জন্য বাংলাদেশের অব্যাহত চেষ্টাকে স্বাগত জানালেও পশ্চিমা কিছু দেশ কেনো বিভ্রান্তিকর দাবি করে সে প্রশ্ন তোলেন শ্রমিক নেতারা। তারা বলেন, পোশাক শিল্প নিয়ে অনেকদিন ধরেই চলছে ষড়যন্ত্র।

উল্লেখ্য, এর আগে তৈরি পোশাক খাত নিয়ে চিঠি দিয়েছিল মার্কিন ৮ কংগ্রেসম্যান। পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে বেতন-ভাতা সমন্বয় করার পরও সংশোধিত বিষয়টি নিয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ করেছেন মার্কিন কংগ্রেসম্যানরা। তারা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করার জন্য চিঠি দেয় আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যারকে (এএএফএ)। তবে কংগ্রেসম্যানদের চিঠির আগেই বিজিএমইএ তাদেরকে চিঠি দিয়ে বেতন সমন্বয়ের তথ্য জানান।

এছাড়া শ্রমিকদের যাপিত জীবন বিশেষত নিয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে একটি বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে ফ্রিল্যান্সার লেখক তাসলিমা দাবি করেছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে নারী পোশাক শ্রমিকরা সন্তান ও নিজের জীবন বাঁচাতে যৌনকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন। এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে শ্রমিক সংগঠনগুলো। দেশের কয়েকটি পত্রিকা সেই প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও বিভ্রান্তিকর বিবেচনায় পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়।

কারা তারা যারা কিনা পশ্চিমে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয় এবং বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য পৌঁছে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করে প্রশ্নে বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পোশাকশিল্পের শুরু থেকে একটি মহল ধারাবাহিকভাবে কাজটি করে যাচ্ছে। তারা কোন ভালো উদ্যোগ দেখতে পান না।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২৫, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test