E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

গবাদী পশু পালনে ভাগ্য ফিরেছে ফরিদপুরের ৩২৫ সমবায়ীর

২০২৩ জানুয়ারি ০৩ ১৮:৪১:১২
গবাদী পশু পালনে ভাগ্য ফিরেছে ফরিদপুরের ৩২৫ সমবায়ীর

দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : ঋণ নিয়ে উন্নত জাতের গাভী ও দুগ্ধ উৎপাদনের মধ্য দিয়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দারিদ্য হ্রাসকরন ও গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলার ৩২৫ জন সমবায়ী নিজেদের স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে গবাদী পশু পালনে আগ্রহী হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদপুর সদর উপজেলা সমবায় সমিতির “উন্নত জাতের গাভী পালনের মাধ্যমে সুবিধা বঞ্চিত মহিলাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন” প্রকল্পের আওতায় ২০১৬ সালে কৈজুরী ও গেরদা নারী উন্নয়ন সমবায় সমিতি লি: এর ১০০ জন করে দুই সমিতির মোট ২০০ জন নারী সমবায়ী উন্নত জাতের গাভী পালনের লক্ষ নিয়ে প্রত্যেকে ১ লক্ষ টাকা করে ঋন গ্রহন করে।

অপরদিকে দুগ্ধ সমবায় সমিতির কার্যক্রম বিস্তৃত করনের মাধ্যমে “বৃহত্তর ফরিদপুর, বরিশাল, খুলনা জেলা দারিদ্র হ্রাসকরন ও আর্থ সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়” উপজেলার নর্থ চ্যাণেল প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লি: এর ১২৫ জন নারী ও পুরুষ সমবায়ী সদস্যগন দুগ্ধ উৎপাদনের লক্ষে একই পরিমান ঋন গ্রহন করে। এই দুই প্রকল্পের আওতাধীন ৩২৫ জন সমবায়ী সদস্য ঋন প্রকল্পের স্ব স্ব নিয়মানুযায়ী উন্নত জাতের গাভী ও দুগ্ধ উৎপাদনের লক্ষে প্রয়োজনীয় খামার তৈরি করে গবাদী পশু (গরু) পালন শুরু করেন। অনেক সমবায়ী সদস্যগন দুটি গরু নিয়ে খামার শুরু করলেও বর্তমানে অনেকের খামারে ৮/১০ গরুও লক্ষ করা গেছে। একই সাথে দুগ্ধ প্রকল্পের অনেক সমবায়ী দুধ উৎপাদনের মধ্য দিয়ে বাজারজাত করে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ প্রকল্পের সদস্যগন স্বল্প পূজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও বর্তমানে অধিকাংশ খামারিরা উন্নত জাতের গাভী ও দুগ্ধ উৎপাদনে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন। এ বিষয়ে খামারিরা জানান, ২০১৬ সালে নাম মাত্র সুদে ফরিদপুর সদর উপজেলা সমবায় সমিতি হতে ঋন নিয়ে আমরা গবাদী পশু পালন শুরু করি। তবে এ প্রকল্পের ঋণের কিস্তি ১ম বছরে পরিশোধ করতে হয়নি বিধায় আমরা উত্তলোনকৃত ঋণের অর্থ দিয়ে ১ম বছরেই ভালোভাবে খামার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। পাশাপাশি পরবর্তি বছরের আয় থেকে ২ বছরে মোট ২০ কিস্তির মাধ্যমে আমরা উত্তলনকৃত ঋণের টাকা পরিশোধ করছি। দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতার পাশাপাশি সমবায় সমিতির মাধ্যমে নারী উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেবলেও মনে করেন তারা। একই সাথে গবাদী পশুপালন করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দারিদ্য হ্রাসকরন ও গ্রামীণকর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলেও তারা প্রত্যাশা করেন। তবে গোখাদ্যের বাজারমুল্য বৃদ্ধিসহ খামার পরিচর্যা অনেক ব্যায়বহুল হওয়ায় এসব ঋনের পরিমান আর একটু বেশি হলে এসব খামারিরা আরো বেশি উপকৃত হওয়ার দাবি করে এই ঋনেও তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা সমবায় অফিসার মুহম্মদ আমানুর রহমান জানান, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও মানুষের দারিদ্র্য দূর করে ব্যাপক উৎপাদন কর্মযজ্ঞ এবং সদস্যদের অর্থনৈতিকঅবস্থার উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে সমবায় সমিতি। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারের এ প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের অতি দরিদ্র জনগণ আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তনের পাশাপাশি দেশের আর্থিক জিডিপির হার বৃদ্ধিতেও তারা বিশেষ অবদান রাখতে পারবে।

এ সময় সমবায় সমিতি একটি জনকল্যাণ ও উন্নয়নমূলক আর্থসামাজিক প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে আমানুর রহমান জানান, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার পাশাপাশি সমাজে পিছিয়ে পড়া হতদরিদ্রদের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখে চলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই ধারাবাহিকতায় এসব পিছিয়ে পরা জনগনের জীবনমান উন্নয়নে নাম মাত্র সুদে সহজশর্তে ঋন প্রদান করা হয়েছে।

(ডিসি/এসপি/জানুয়ারি ০৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১২ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test