E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মির্জাপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধে ফিলিং স্টেশন মালিককে হুমকি

২০১৭ অক্টোবর ১৪ ১৫:২৯:৫৩
মির্জাপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধে ফিলিং স্টেশন মালিককে হুমকি

রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক মো. ইব্রাহিম মিয়াকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে চাচতো ভাতিজা জাহাঙ্গীর হোসেন প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ দিয়েও ফল পাচ্ছেন না ইব্রাহিম মিয়া। নিজের জায়গা থাকা স্বত্বেও ভোগ দখল করছে জাহাঙ্গীর হোসেন ও তার লোকজন।

জানা যায়, ইব্রাহিম মিয়ার সিএনজি স্টেশন থাকায় মির্জাপুর উপজেলার বাউয়ার কুমারজানী এলাকায় মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন সময়ে জায়গা ক্রয় করেন। ১৯৯৪ সালে ওই এলাকার বছিরন নেছা ও তার ভাই নুরু মিয়া এবং হাতেম আলীর কাছ থেকে কিছু জমি ক্রয় করেন। পরবর্তীতে জাহাঙ্গীর হোসেনের কথায় বছিরন নেছা ২০১৩ সালে ১৫ শতাংশ জমি বিক্রি করেনি বলে অস্বীকৃতি জানায়।

এর আগে ২০১২ সালে জাহাঙ্গীর ও তার লোকজন মিলে ওই জায়গার উপর নির্মাণ করে দোকান পাট ও বাড়ি-ঘর। এরপর থেকেই চলতে থাকে তাদের মধ্যে নানা ধরনের বাকবির্তক। কিন্তু কোন কিছুতেই কিছু না হওয়ায় জাহাঙ্গীর জমির মালিক ইব্রাহিমকে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শণ করতে থাকে। সেই সাথে তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে মোটা অঙ্কের টাকাও নিতে থাকে। তারপরও ওই জমি নিয়ে কোন সমাধান পায়নি ইব্রাহিম মিয়া। এ নিয়ে কয়েক দফায় স্থানীয় নেতাকর্মী ও এমপি’র সাথে শালিস বসলেও কোন ফল হয়নি।

শুধু ইব্রাহিম মিয়াই নয় ওই এলাকায় অনেকেই জাহাঙ্গীরের হাতে জিম্মি। জাহাঙ্গীরের কথা না শুনে প্রতিবেশী হাতেম আলী ও আ: বারেককে পড়তে হয়েছে অনেক আইনী জটিলতায়।

বাউয়ার কুমারজানী এলাকার হাতেম আলী জানায়, তার জায়গা বেদখল করে বাউন্ডারী ওয়াল করে বাড়ীতে বসবাসের অনুপযোগী করে রেখেছে। এছাড়াও তাকে পুলিশের জোগ সাজসে গাজা ব্যবসায়ী সাজিয়ে মামলা দিয়ে হয়রানী করছে।

হাতেমের ছোট ভাই আ: বারেক জানান, তিনি এক বছর যাবত নিজ বসতভিটায় ঘর তৈরী করার জন্য সরঞ্জাম এনে রেখেছে। কিন্তু জাহাঙ্গীর ওই জায়গায় কোনক্রমেই ঘর নির্মাণ করতে দিচ্ছে না।

বাউয়ার কুমারজানী এলাকার মোকলেসুর রহমান জানায়, টাকা নেওয়ার ঘটনা সত্য। বিভিন্ন সময়ে জাহাঙ্গীর ইব্রাহিম মিয়ার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছে। এক পর্যায়ে ইব্রাহিমের কাছ থেকে জোরপূর্বক ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে টাকা নিয়েছে। আমরা এলাকাবাসী জানতে পারলেও জাহাঙ্গীরের কোন কিছু করতে পারি না। সে শুধু ইব্রাহিম মিয়াকে না এ এলাকার অনেক মানুষকে বিপদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মানুষের অনেক কাজ করে দিবে বলে টাকা নিয়েছে তা এখন পর্যন্ত দেয়নি।

ইব্রাহিম মিয়া জানায়, জাঙ্গাগীর আমার কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি দিয়ে বিভিন্ন সময়ে অনেক টাকা পয়সা নিয়েছে। আমার প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। জাহাঙ্গীর বিভিন্ন সময়ে আমার কাছ থেকে যে টাকা নিয়েছে তার ব্যাংক রেফারেন্সসহ সকল কিছুর স্বাক্ষী ও দলিল আছে। তারপরও আমার ক্রয় করা জায়গায় জোর করে দখল নিয়ে আছে। এমপিসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গও এ নিয়ে বার বার বৈঠক বসলেও কোন কাজ হয়নি। জাঙ্গাগীর আমার অনেক ক্ষতি করেছে। সর্বশেষ আমি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি। তারপরও সে আমাকে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে।

জাঙ্গাগীরের বোন মোছাঃ আফরোজা জানায়, ইব্রাহীম সম্পর্কে আমার চাচা তার সাথে আমাদের কোন বিরোধ নেই। তিনি আমার কাছ থেকে ১৫ শতাংশ জায়গা ক্রয় করেছেন। আমি আমার টাকা বুঝে পেয়েছি।

এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর জানান, ইব্রাহীম মিয়ার মালিকানাধীন মা সিএনজি পাম্পের পাশে আমার ৩৪ শতাংশ জায়গা আছে। ওই জায়গা ক্রয় করার জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে আমাকে প্রস্তাব দিয়ে আসছে। আমি রাজি না হওয়ায় আমাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে।


(আরকেপি/এসপি/অক্টোবর ১৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test