E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কলাপাড়ায় মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা

২০১৭ নভেম্বর ০৯ ১৬:৩১:১০
কলাপাড়ায় মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা

কলাপাড়া প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মুসুল্লীয়াবাদ ফাজিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী কারিমা আক্তার (১৫) কীটনাশক খেয়ে আত্মহনন করেছে। গত মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর সহপাঠী ও স্বজনদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ নিহত কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে প্রেরণ করেছে। নিহত মাদ্রাসা ছাত্রী একই গ্রামের জেলে কবির পঞ্চায়েতের মেয়ে।

জানা গেছে, মুসুল্লীয়াবাদ ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী কারিমা সকলের অগোচরে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে কীটনাশক খেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়। প্রথমে তাকে তুলাতলী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে ওইদিন রাত আট টা ১০মিনিটের সময় কলাপাড়া হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে কারিমার আত্মহননের ২৪ ঘন্টা পর তার ঘর থেকে একাধিক প্রেমপত্র, চিরকুট ও গান উদ্ধারের ঘটনায় তার আত্মহননের পিছনে একই মাদ্রাসার সহপাঠী জুনায়েদকে দুষছেন তার পরিবার। জুনায়েদের প্রেমের স্বীকৃতি না মেলায় অভিমানে কারিমা আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার চাচাতো ভাই সগির হোসেন। কারন কারিমার আত্মহননের খবর পাওয়ার পর থেকে জুনায়েদ পলাতক রয়েছে।

কারিমার স্বজনরা জানান, এবছর দাখিল পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল কারিমার। কিন্তু কারিমার পরীক্ষায় অংশগ্রণ তো দূরের কথা, মাদ্রাসা থেকেও কালিমার তকমা লেপটে বিতাড়িত করা হয়েছে। গোপনে ফরম ফিলাপের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।

কারিমার চাচাতো ভাই সগির হোসেন জানায়, তার বোনের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ধুলাসার ইউনিয়নের আশাখালী গ্রামের জুনায়েদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জুনায়েদ একই মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এনিয়ে প্রায় তিন মাস আগে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কারিমার বাবাকে ডেকে নিয়ে ভর্ৎসনা করে। নিষেধ করা হয় মাদ্রাসায় আসতে। কিন্তুু একই অপরাধে জুনায়েদকে কিছু বলা হয়নি বলে কারিমার পরিবারের দাবি। এতে লজ্জায়-ক্ষোভে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ হয়ে যার কারিমার। এরপর থেকেই মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙ্গে পড়ে কারিমা। নিঃসঙ্গতা তাকে বিষন্ন করে তোলে। প্রেমিক জুনায়েদও তাকে উপেক্ষা করতে থাকে। আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে কারিমা। এক পর্যায়ে আত্মহননের পথ বেছে নেয়।

মুসুল্লীয়াবাদ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সোবাহান জানান, ওই ছাত্রী আরও একদিন মাদ্রাসায় থাকাকালীন আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। তখন তাকে অন্যান্য শিক্ষকরা তার বাড়িতে পৌছে দেয়। ওই দিন তিনি মাদ্রাসায় ছিলেন না। এরপর থেকে কারিমা আর মাদ্রাসায় আসেনি। এর বেশি কিছু তার জানা নেই। তার পরিবারকে কিছু বলা হয়নি বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে প্রেমিক সহপাঠী জুনায়েদকে মোবাইল করলে বার বার লাইন কেটে দেয়।

কলাপাড়ার মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা কলাপাড়া থানার হাসপাতাল এলাকায়। এখন পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোন লিখিত অভিযোগ পাননি। পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এমকেআর/এসপি/নভেম্বর ০৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test